somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খালেদা জিয়ার উচিত রাজনীতি ছেড়ে দেয়া। তাঁর বোঝা উচিত, এক ঝুড়ি আমকে পঁচানোর জন্য একটা পঁচা আমই যথেষ্ঠ

২৩ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথায় আছে, BNP মানে হল Basically No Party. যে বা যারা এই নাম অলঙ্কিত করেছে তারা নিচক বিরোধিতা করলেও খুব সম্ভব ভুল তেমন একটা করেননি। এর প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকাকালিন সময় বিভিন্ন দল থেকে ভুলিয়ে বালিয়ে কিংবা তখনও কেউ রাজনীতিতে জড়ায়নি তাদেরকে নিয়ে এই দলটি গঠন করেন। তার করুণ মৃত্যুর পরও দলটি নির্বাচনে ৩ বার বিজয় লাভ করে দুইবার পূর্ণ মেয়াদে সরকাররের দায়িত্ব পালন করে।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাদের ভাষায় ডিজিটালীয় নির্বাচনে করুন ভাবে (আসন কেন্দ্রিক, ভোটে নয়) পরাজিত হবার আগেই দলটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি এর ঐক্য পূর্নগঠনের। প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় কোন না কোন খবর থাকছেই দলটির গ্রুপিং নিয়ে মারামারি, দু'গ্রপের সভা নিয়ে ১৪৪ জারির ইত্যকার খবর।
নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর পার্টি প্রধান হিসেবে খালেদা জিয়ার সুযোগ ছিল দলটিকে ঢেলে সাজানোর। সম্ভবত প্রয়াসও গ্রহণ করেছিলেন তিনি। প্রথমেই কাউন্সিল করে তথাকথিত সংস্কারবাদিদের নেতৃত্ব থেকে সড়িয়ে দিলেন তিনি।
দলটির মহা দুর্যোগের সময় যিনি শক্ত হাতে সাঙ্গি-সাথী বিহীন দলের হাল ধরেছেন নেই খন্দকার দেলোয়ারকে মহাসচিব করা হল। তিনি মোটামুটি ভালই চালাচ্ছিলেন, কিন্তু তার মৃত্যুর পর প্রায় দু'বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত হয়ে আছেন মির্জা মখরুল ইসলাম আলোমগীর।
যে কোন ব্যাক্তির জন্যই এই ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বটার মত বাজে দায়িত্ব খুব কমই আছে! মির্জা ফখরুলের ক্ষেত্রেও তাই। তার মূল দায়িত্ব হচ্ছে সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব। এই পোস্টের উপর আরো অনেক পদ আছে, যেগুলো এখন ভারপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তার লীড মানতে হয়। এটা প্রকৃত অর্থেই খুব কঠিন সময় উভয় পক্ষের জন্য।
খবরে প্রকাশ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অনেক নেতাই গুরুত্ব দেন না। দেখা যায় দলের কোনো অনুষ্ঠানে গেলে মঞ্চে ওঠার আগে তাকে কেউ বসতেও বলেন না। জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে এরকম দৃশ্য দেখে মিডিয়াকর্মীরা হতবাক হয়েছেন। ওই অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম যখন বক্তৃতা করছিলেন তখন গুলশান অফিসের এক কর্মকর্তা পেছন থেকে তার পাঞ্জাবি টেনে ধরে বক্তৃতা শেষ করতে বলতে থাকেন। এসময় মঞ্চে খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন।

গুলশান অফিসের আরেক কর্তাব্যক্তি মির্জা ফখরুলকে অনেক সময় ধমক দিয়েও কথা বলেন। এমন দৃশ্য গুলশান কার্যালয়ে অনেক মিডিয়াকর্মী দেখেছেন। অভিযোগ আছে ছোটখাটো কোনো অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল যেতে না চাইলে কর্তাব্যক্তি তাকে প্রেসার দিয়ে যেতে বাধ্য করেন। কোনো কোনো অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুলও বলেন, অমুক ভাই বলেছেন তাই না এসে পারলাম না।
এই যখন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের অবস্থা, তখন চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের অবস্থা আরো ভয়াবহ! একটি দলের প্রধানের সাথে সাক্ষাত প্রত্যাশা থাকতেই পারে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের। কিন্তু বিএনপি নেত্রীর অবস্থা এখন এমন যে, তাকে ঘিরে রেখেছে কতগুলো অর্থলিস্পু গর্দভ। যাদের বেশির ভাগই সাবেক সেনা অফিসার ও বিভিন্ন দলথেকে (বিশেষ করে বাম ঘরনার) ভেগে আসা নেতৃস্থানীয়রা। তৃণমুলের ১০০ নেতার মধ্যে ৯০ জন নেতাই গুলশান কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের ওপর নাখোশ। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে না পারা।
বিএনপি'র মধ্যম সাড়ির এক নেতা, যিনি একসময় ছাত্রদলের নেতৃত্বে ছিলেন নাম প্রকাশ না করা শর্তে তিনি বার্তা২৪ ডটনেটকে জানান,গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে কেউ প্রবেশ করতে চাইলে কয়েকটি গেট পার হতে হয়। রয়েছে আর্সওয়ে। সেখানে এসএসএফ’র আদলে গড়ে তোলা হয়েছে সিএসএফ (চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স)। গুলশান কার্যালয়ে প্রবেশ করতে হলে সিএসএফ নামের ওই সিকিউরিটির হাতে থাকা নোটবুকে নাম লেখাতে হয় সবাইকে। এজন্য কোনো ভদ্রলোক ভয়েও গুলশান যেতে চান না। কারণ অনেকে মনে করেন ওই তালিকা সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থার হাতে গেলে তাদের বিব্রত হতে হবে।
একজন জেলা পর্যায়ের নেতা অভিযোগ করেন, “গুলশান কার্যালয়ে অর্থের লেনদেনও হয়। যাদের টাকা পয়সা আছে তারা কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। আমরা যারা আজীবন ছাত্রদল বিএনপি করে বয়স শেষ করলাম তারা ম্যাডামের কাছেও যেতে পারি না। মনের কথা খুলে বলতে পারি না।"
বিএনপি’র একজন উপজেলা সেক্রেটারি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বার্তা২৪ ডটনেট-কে বলেন, “অনেক চেষ্টা করে একদিন গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের দোতলা পর্যন্ত উঠেছিলাম। কিন্তু ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। বহু চরাই উতরাই পার হয়ে দোতলায় ম্যাডামের রুমে প্রবেশের মুখে আমার পরিচয় পেয়ে খালেদা জিয়ার এক বিশেষ সহকারী এক রকম ধাক্কা দিয়েই আমাকে বের করে দেন।” ওই নেতা বলেন, “ছাত্রজীবন থেকে জিয়াউর রহমানের রাজনীতি করি। ওই বিশেষ সহকারীকে বলে এসেছি, এটা কি চিড়িয়াখানা নাকি যে প্রবেশ করতে টিকিট লাগবে। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে তো টিকিট লাগতো না।”
অভিযোগ রয়েছে, গুলশান কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী এমনকি পিওন ড্রাইভারও নমিনেশন বিক্রি করেন। অনেকে নমিনেশনের লোভ দেখিয়ে টাকা আদায় করেন তৃণমুল নেতাদের কাছ থেকে। এমন অভিযোগ করেছেন দলের একাধিক নেতা।
এই যদি হয় একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পার্টি প্রধানের সাথে নিজ দলের নেতা কর্মীদের সম্পর্ক! তাহলে তিনি কিংবা তার দল কিভাবে বলেন তারা দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য কাজ করেন! যিনি নিজের ঘর সামলাতে ব্যর্থ তিনি কিভাবে একটি দেশকে নেতৃত্ব দিবেন? নিজ দলের কর্মীরা দেখা করতে যেখানে ঘুষ প্রদাণ করতে হয়, তাও আবার ক্ষমার বাহিরে থাকাবস্থায়; তিনি কিভাবে ক্ষমতায় গেলে সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাগব করবেন???
তাই এখনো সময় আছে, বেগম জিয়ার উচিত দলের প্রতিটি কর্মীকে পাশে রেখে তাদের কথা শুনে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের শৃংখলা শক্ত হাতে ফিরিয়ে আনবেন। যদি সেটায় তিনি সফল না হন তাহলে বিএনপি'র মত দলের নেতৃত্ব থেকে তার সড়ে যাওয়াই উচিত।
অবশ্য এসব বিষয়গুলো সমাধা করে থাকেন দলের সেক্রেটারী বা মহাসচিব যিনি থাকেন তিনি। তাই খালেদা জিয়ার এক সম্বর প্রায়োরিটি থাক উচিত অতিদ্রুত একজন নির্ভার মহাসচিব নিয়োগের। কে পক্ষে থাকবে আর কে থাকবে না সেটা চিন্তা না করাই ভালো। মনে রাখতে হবে, এক ঝুড়ি আমকে পঁচানোর জন্য একটা পঁচা আমই যথেষ্ঠ। আশাকরি বেগম খালেদা জিয়া এটি অবলোকন করতে সক্ষম হবেন।
তথ্যগুলো এখান থেকে কপি করা
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:৫৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×