পূরোনো সেই দিনের কথা, ভুলবি কি রে হায়!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ছেলেবেলা থেকে শুনতাম লেখা পড়া করে মানুষ হতে হবে, বাবা মা তাই চেয়েছিলেন! ফলতঃ লেখাপড়া করতে হয়েছে, তা সে যেমনই হোক! চারিত্রিক শুদ্ধতাকে খুব বেশী মূল্য দেয়া হত আমাদের ছেলেবেলাতে, আমরা চরিত্রবানদের অনুকরণ করার চেষ্টা করতাম!
সে ছিল এক অন্য দেশ, অন্য জনপদ যেন, তখন ষাটের দশকের পাকিস্তানী আমল!
ঢাকা শহর খুবই ছোট, রেল স্টেশন ছিল নবাবপুরের ফুলবাড়িয়াতে, ঢাকা শহর ছিল সবুজে সবুজে একাকার!
মানুষ ছিল খুবই কম, তাই হয় তোবা মানুষ মানুষ কে বুঝতো, রাস্তায় কেউ মাথা ঘুরে পড়ে গেলে দেখেছি অন্ততঃ একদজন মানুষ এসে তার খেদমত করার চেস্টা করতো!
আমাদের শহরের পূর্ব সীমার পিচের রাস্তার ওপারে কমলাপুর ছিল গাছ গাছালিতে ভরা, তখন কেবল শুরু হয়েছে চালতা বাগান কেটে নতুন রেল স্টেশন তৈরীর কাজ!
মতিঝিল কলোনিতে পীরজঙ্গী মাজার রোডের এপারে ওপারে ছিল গোটা বিশেক বিল্ডিং, সরকারী কোয়ার্টার! আর চারধারে ইটের সাজানো স্তুপ, দিনে দুপুরে কমলাপুর থেকে কলোনিতে শেয়াল ঢুকে পড়তো!দিনে কি রাতে, রাস্তা প্রায়ই ফাঁকাই থাকতো!
বৃস্টি হলে আমাদের আনন্দ ধরতো না, মাঠের জমা পানিতে নানা রকমের ছোটো মাছেরা চলে আসতো! দূর কোন ফকিরের আখড়াতে গভীর রাতে হতো মুর্শিদি গান, শুনতে শুনতে ঘুনিয়ে পড়তাম!এখনও রাতে ঘুমুতে গেলে যেন সেই গানের রেশ কানে বাজে!
সন্ধ্যে থেকে শুরু হত নির্জনতা, মিউনিসিপ্যালিটির ইলেক্ট্রিক থামে জ্বলতো মিট মিট করে সাধারন বাল্ব, বারান্দায় বসে রাতের নক্ষত্র জ্বলা ঝালরে দেখতাম রূপকথার জগত, মনে হত সেই তারাটির বুকে আছে সেই অচিন রাজ্য, যেখানে ঘুমোয় সোনার কাঠি রুপোর কাঠির সেই রাজকন্যে! কেউ যদিচ রাস্তা দিয়ে হেটে যেত মনে হত সেই “নির্জন পথে জোছনা আলোতে, সন্ন্যাসী একা যাত্রী!” রাতের রুপ ছিল প্রশান্ত, কিছুটা বা নিরানন্দ, কারন খুব কমই আত্মীয় স্বজনেরা ঢাকায় বেড়াতে আসতেন, রাতে গল্প বলার জন্যেও আমাদের কেউ ছিল না, সারা দিনের পরিশ্রান্ত মা আমদের রাত আটটার বা নয়টার ভেতর খাইয়ে দশটার ভেতর ঘুমিয়ে দিতেন!
তখন টেলিভিশন ছিল না, রেডোতে খবর আর অনুরোধের আসর শোনা হতো! কাক ডাকা ভোরে বড় বোনের হাত ধরে যেতাম অনেক দূরের স্টাফ ওয়েলফেয়ার প্রাইমারী স্কুলে, এই বৈশাখে তার পেছনে আর রাস্তার ওপারে মোটর মেকানিকের দোকানের চারপাশে ছিল বড় বড় আমগাছ, আমরা আম পেড়ে খেতাম!
হায়, জীবন, তুমি বহমান স্রোতের মতো পথ শেষের সমুদ্রের দিকে দ্রুত চলে যাচ্ছ!
পল্লী বাসাবো-কদমতলার সেই নীলকন্ঠ পাখিটিকে আর কি কোন দিন আমার দূ চোখ ভরে দেখবো?
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কর কাজ নাহি লাজ
রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।
হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?
নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন
তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল
সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন