আমাকে মাপ করে দিবেন স্যার !!!!!!!!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
গল্পটা পড়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদছি কতক্ষণ ধরে বলতে পারব না। সত্যি অসাধারন একটা লেখা।
টিফিন এর সময় সব ছেলে-মেয়ে টিফিন করতে বাইরে গেল । সবাই ক্লাস থেকে বের হয়ে কেউ কেউ গেল ক্যান্টিন এ আবার কেউ কেউ মাঠে খেলতে । কিন্তু এর থেকে একটি ছেলে এর কোনটিতেই গেল না । মাঠের এক কোনে , গাছের নিচে বসে আছে । প্রতিদিন ই এই রকম দেখা যায় । ক্লাসে এ অনেকেই এই ছেলেটিকে দেখতে পারে না । ছেলেটার জামা নোংরা , চুল গুলো এলোমেলো । আর বাকিদের , সুন্দর জামা -কাপড়। সুন্দর করে পরিপাটি করে আসে সবাই শুধু ঐ ছেলেটি ছাড়া । সামনে পরীক্ষা । স্কুলে টাকা দিতে হবে । সবাই যার যার বাসায় জানায় । সবার বাবা-মা এসে টাকা পরিশোধ করে গেছে । শুধু ঐ ছেলেটির পরীক্ষার ফি বাকি । ছেলেটি ক্লাসে আসলেই স্যার ফি এর কথা জিজ্ঞাসা করে । আর ছেলেটি চুপ করে থাকে । এই ভাবে ২-৩ দিন গেল । স্যার রা বুঝতে পারলো , এই ছেলে ার টাকা দিতে পারবে না । হেড স্যারের কাছে নিয়ে ছেলের নামে নালিষ করলো । হেড সার ছেলেটিকে তার রুমে ডাকলো । অনেক বকা ঝকা করলো । বাবা-মা দিয়ে পরের দিন ক্লাসে আসতে বলল । "প্রথম দিন তোমার বাবা-মা এসে সেই যে ভর্তি করে দিয়ে গেল আর তাদের মুখ এ দেখলাম না ১ বছরের । কাল যদি তোমার বাবা-মা আমার সাথে দেখা না করে তুমি আর ক্লাসে আসবে না । এখন যাও । "
ছেলেটির বয়স তত বেশী হবে সা ।১৪-১৫ . ছেলেটি কাদতে কাদতে ক্লাসে গিয়ে তার ছিড়া - ব্যাগ টি নিয়ে বের হয়ে গেল স্কুল থেকে ।
সেই থেকে ছেলেটি আর স্কুলে আসে না ।
অনেক দিন পর সেই স্কুলের হেড স্যার একদিন রাস্তায় রিক্সার জন্য দাড়িয়ে ছিল । কোথা থেকে যেন একটা রিক্সা এসে বলল , স্যার উঠেন । স্কুলে যাবেন ?
স্যার একটু আশ্চর্য হয়ে রিক্সা চালকটির দিকে তাকিয়ে রইলো । একটা ১৪-১৫ বছরের ছেলে রিক্সা চালাচ্ছে । স্যার আরও বেশী অবাক হল , যখন দেখলো এই ছেলেটা সেই ছেলে . যাকে সে স্কুল থেকে বের করে দিয়ে ছিল ।
স্যার আর কথা বলতে পারলো ণা । চুপ করে রিক্সায় উঠে বসলো। ছেলেটি কথা বলতে শুরু করলো।
" স্যার , আমাকে চিনছেন ?
= স্যার , না (না চিনার ভান করে বলল - )
"স্যার ঐ দিন পরীক্ষার ফি দিতে পারি নাই তাই আমাকে বের করে দিছিলেন। আমি সেই ছেলে ।
= হুম . চিনতে পারছি
" স্যার আপনে ঐ দিন আমারে স্কুল থেকে বের না করে দিয়ে আমি , আজ না খেয়ে মরতাম ।
= মানে
" স্যার আমি এতিম । রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতাম । আর বিভিন্ন স্কুলের সামনে দারাইয়া থাকতাম আর ভাবতাম আমি যদি পরতে পারতাম ।
একদিন একটা , সাহেব তার বউ আমারে দেইখা , আপনার স্কুলে ভর্তি করাইয়া দিছিল। আমি অনেক খুশি ছিলাম । কিন্তু স্কুলে ভর্তি করানোর পর আর সেই সাহেব- মেডাম রে দেখি নাই । আর আমি পাগলের মত , খাইয়া না খাইয়া সারা দিন স্কুলে পইরা থাকতাম । সাবই যখন টিফিন খেত , আমি দূরে এক কোনে বসে বসে , সবা্র খাওয়া দেখতাম । আর কান্না করতাম । ক্ষিধা অনেক লাগতো । কিন্তু ক্লাস করতে বেশী ভাল লাগতো । তাই না খাই য়া ক্লাস করতাম । আর রাতে গিয়া রাস্তার পাশে ঘুমাইতাম ।
আপনে আমারে স্কুল থেকে বের করে দেবার পর বুঝতে পারলাম , পড়া শুনা আমাদের জন্য না । যাদের পেটে ১ বেলা বরপেট খাবার জুটে না , বাবা- মা নাই তাদের জন্য পড়া লেখা না । তাই ঐ দিন থেকে স্যার আমি রিক্সা চালাই তাছি । এখন স্যার প্রতিদিন ৩ বেলা হোটেল এ ২ প্লেট ভাত , সাথে মাছ , ডাইল . দিয়া পেট ভইরা ভাত খাই ।
..... স্যার মাফ কইরা দিয়েন , আমি কি সব বকবক কইরা আপনেরে ডিস্টার্ব করতাছি । স্যার স্কুল আইসা পরছে ।
= এই নেও ভাড়া ।
" স্যার এই ডা কি কন ? আপনি আমার স্যার , আপনার থেকে আমি টাকা নিয়া বেয়াদবি করতে পারমু না । স্যার ।
বলে ছেলেটা চলে গেল ।
আর ততখনে , হেড স্যারের , দুচোখ দিয়ে অঝর পানি পড়ছে । রিক্সায় যাও রুমাল দিয়ে মুছতেছিল , কিন্তু এখন যেন আর মুছে শেষ করা যাচ্ছে না । যেই ছেলে টা কে সে , না জেনে অনেক কথা শুনিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিয়ে ছে , আহ সেই ছেলে তাকে এত সম্মান দিল ? স্যার হাটতে হাটতে আর চোখের পানি মুছতে মুছতে নিজের রুমে ডুকলেন ।
লেখাটির লিঙ্ক
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
অলীক সুখ পর্ব ৪
ছবি নেট
শরীর থেকে হৃদয় কে বিচ্ছিন্ন করে দেখতে চেয়েছি
তুমি কোথায় বাস করো?
জানতে চেয়েছি বারবার
দেহে ,
না,
হৃদয়ে?
টের পাই
দুই জায়গাতে সমান উপস্থিতি তোমার।
তোমার শায়িত শরীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
শরীর থেকে হৃদয় কে বিচ্ছিন্ন করে দেখতে চেয়েছি
তুমি কোথায় বাস করো?
জানতে চেয়েছি বারবার
দেহে ,
না,
হৃদয়ে?
টের পাই
দুই জায়গাতে সমান উপস্থিতি তোমার।
তোমার শায়িত শরীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন
শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?
বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন
চলুন দেশকে কীভাবে দিতে হয় জেনে নেই!
চলুন দেশকে কীভাবে দিতে হয় তা জেনে নেই৷ এবার আপনাদের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ঘটনা শেয়ার করবো৷ আমি কোরিয়ান অর্থনীতি পড়েছি৷ দেশটি অর্থনৈতিক উন্নয়নে ১৯৭০ সালের পর থেকে প্রায় আকাশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৮
আজকের গল্প হেয়ার স্টাইল ও কাগজের মোবাইল।
সেদিন সন্ধ্যার আগে বাহিরে যাব, মেয়েও বায়না ধরল সেও যাবে। তাকে বললাম চুল বেধে আসো। সে ঝটপট সুন্দর পরিপাটি করে চুল... ...বাকিটুকু পড়ুন