somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আষাঢ় ও শ্রাবণ এ দু'মাস বর্ষাকাল

১৬ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জাতিটির জন্ম কোথা থেকে হয়েছে? উত্তরটা খুব সহজ: কোনো এক নদীর তীর থেকে।সেই নদীর তীর থেকে উদ্ভূত মানুষগুলো ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়লো গুহায়, পাহাড়ে, পর্বতে, বনে। সুতরাং উন্মুক্ত, নদীবিধৌত প্লাবন সমভূমির মানুষগুলো যখন গাছপালা আচ্ছাদিত পাহাড়, বনে গেলো, তখন স্বভাবতই তারা সেগুলোকে জংলা, জঙ্গল ইত্যাদি উপধায় ব্যাখ্যা করে ফেললো। তারা জঙ্গল পরিষ্কার করা, গাছ কেটে সাফ করাকেই নিজেদের কাজ মনে করলো।পৃথিবীর অধিকাংশে দেশে বর্ষাকাল বছরে একবার আসে। তবে কোনো কোনো দেশে আবার দু’বারও বর্ষাকাল দেখা দিয়ে থাকে। ভূমধ্যস্গরীয় অঞ্চলে বর্ষাঋতুর এই ভিন্নতা দেখা যায়।

বাংলাদেশকে বলা হয় নদীমাতৃক দেশ, কথাটার মানে হলো নদী এই দেশের সব জায়গায়ই আছে। এমনকি সবচেয়ে শহুরে অঞ্চল রাজধানী ঢাকাও বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত।বর্ষা প্রত্যেকের জন্য স্বস্তির নিঃশ্বাস বয়ে আনে। বর্ষা আমরা দারুণভাবে উপভোগ করি। প্রায় কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। সবুজ গাছপালা আরো সবুজ হয়ে উঠে। এই সময়ে আকাশ প্রায়ই মেঘে ঢাকা থাকে। সূর্য মেঘের নীচে চাপা পড়ে যায় ফলে তার মুখ দেখা যায় না। মাঝে মধ্যে নিম্মচাপ সৃষ্টি হয় ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।বর্ষাকাল আমাদের নানাভাবে উপকারে আসে। গ্রীষ্মে যে মাটি শুকিয়ে শক্ত হয়ে গিয়েছিল বর্ষার পানিতে সে মাটি ভিজে নরম হয়ে যায় ।

মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর প্রিয় মানুষের হাতের একগুচ্ছ কদমফুল জানিয়ে দেয় বর্ষার আগমন বার্তা।চীনের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন সময়ে বর্ষাকাল দেখা দেয় তবে তাদের বর্ষাকাল সীমাবদ্ধ থাকে বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালের মধ্যে।ব্রাজিলে নভেম্বরে শুরু হয়ে মে মাস পর্যন্ত বর্ষাকাল থাকে।আমাদের কৃষিক্ষেত্রও অনেকটাই এই বর্ষা নির্ভর। অপরদিকে মৎস্যজীবীদের জন্যও বর্ষাকাল একটি গুরুতাপূর্ণ সময়।বর্ষা যেমন বাঙ্গালীর জীবনে আশির্বাদ বয়ে আনে তেমনি অতিবৃষ্টিতে দুঃখের কারনও হয়ে ওঠে।আষাঢ় বাংলা সনের তৃতীয় মাস । বর্ষার শুরু আষাঢ় মাসের নাম রাখা হয় উত্তর ও পূর্ব আষাঢ়া নক্ষত্রের নাম অনুসারে । বরুণা দেবতাকেই পূর্ব আষাড়া নক্ষত্র বলা হয়। পূর্ব আষাঢ়া নক্ষত্রের প্রতীক হল হাতপাখা। উত্তর আষাড়াকে বলা গঙ্গা দেবতা।

বর্ষায় কদম, কেয়া, বকুল প্রভৃতি ফুলের পাশাপাশি রকমারি ফলও পাওয়া যায়। গ্রীষ্মের ফল বলে পরিচিত আম, কাঁঠাল, জাম, লিচু, আনারস, পেয়ারা প্রভৃতি বর্ষাকালেও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। বিশেষ করে জাতীয় ফল কাঁঠালের ছড়াছড়ি পুরো বর্ষাকাল জুড়েই থাকে। বর্ষাকালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নদীর বুকে ঘুরে বেড়ায়। শাপলা ফুল বর্ষার পানি পেয়ে নিজেদের মেলে ধরে আকাশের দিকে। দোয়েল তার মধুর সুরে শোনায় বর্ষার আগমনী গান। তাইতো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন-
"আজ যেন মেঘের মাথায়
আম জাম আর কাঁঠাল ছায়ায়,
বর্ষার রূপ দেখি দু'চোখ ভরে
নদ-নদীতে বৃষ্টি খেলা করে।"

প্রচন্ড আওয়াজে বিদ্যুৎ চমকায়। আকাশ ভেঙে নামে ঝুম বৃষ্টি। ফেটে যাওয়া মাটি আবার জোড়া লাগে, নদীর পানি বাড়ে, গাছের প্রাণ ফিরে আসে, জমিতে জমিতে লাগে চাঞ্চল্য। আমি মনে করি, বর্ষা হচ্ছে কবি সাহিত্যিকদের মাস। বাংলা সাহিত্যে সম্ভবত এমন কোন কবি/সাহিত্যিক নেই যিনি কিনা বর্ষা নিয়ে লেখেন নি।‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো এক বরষায়...’ অথবা ‘এমন দিনে তারে বলা যায় এমন ঘনঘোর বরিষায়’ এভাবেই বাংলা সাহিত্যে বর্ষা বিভিন্ন রূপ নিয়ে উপস্থিত হয়।বর্ষাকাল মানেই যে শুধু বৃষ্টি, তা কিন্তু নয়। বরং মাঝে মাঝেই আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়। বৃষ্টিও থেমে যায় এসময়। মনে হয় দীর্ঘ পরিশ্রমের পর আকাশটা বোধহয় বিশ্রাম নিচ্ছে। কিন্তু সে বিশ্রাম খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে যায়। আবার আকাশ মেঘলা হতে শুরু করে।

রাজধানীতে নিষ্কাশনব্যবস্থায় এমন বেকায়দা যে এক পশলা ভারী বর্ষণেই রাজপথ এঁদো ডোবায় পরিণত। পথে দুর্বিষহ যানজট। সাধারণ লোকের প্রধান বাহন রিকশার ভাড়া বেড়ে যায়। শহুরে লোকের তো হরেক রকম কাজে ব্যস্ততার অন্ত নেই। কাজে বেরিয়ে আচমকা বৃষ্টিতে পড়ে আধভেজা হয়ে আটকে থাকতে হয় পাশের দোকানের ছাউনির তলায় বা অফিসের বারান্দায়।বর্তমানে ফ্যাশেনেবল মানুষের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন ডিজাইন ও রঙের রেইনকোট তৈরি হচ্ছে। বড়দের জন্য নীল, কালো, অ্যাশ, হলুদ, সবুজ রঙের রেইনকোট পাওয়া যায় বাজারে।বড়দের রেইনকোটর ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। আর শিশুদের রেইনকোটের ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাবে।বর্ষার নেতিবাচক দিকটি সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন পল্লী কবি জসীম উদ্দিন-
"আসমানিদের গৃহখানি ভেন্না পাতার ছানি,
একটু খানি বৃষ্টি হলে গড়িয়ে পড়ে পানি।"

রোমান্টিক কবি নির্মলেন্দু গুণের আবিষ্কারটিও মজার। তাঁর আবিষ্কার বলে, বর্ষাই একমাত্র নারী। একমাত্র রমণী। সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা এই সাতটি জেলার লোককবিরা বর্ষা দ্বারা বিশেষ প্রভাবিত হয়ে থাকেন।নদী থেকে কেউই খালি হাতে ফিরছে না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রাত দিন জেলেরা এখন মাছ ধরায় ব্যস্ত। সন্ধ্যা-সকাল দুবেলা জেলেরা নদী থেকে ইলিশ ধরে ঘাটে ফিরে। মাছ ঘাটগুলোতে জেলে, আড়ৎদার ও ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম হয়ে উঠেছে। মেঘনাপাড়ের জেলেদের কাছ থেকে জানা যায়, আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস ইলিশের ভরা মৌসুম।

আমরা এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে বর্ষার অপেক্ষা করি। বর্ষা আমাদের কখনো নিরাশ করে না। বর্ষা আসে, আর আমাদের আবেগের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়ে যায়।

' , ' , ' , ' , ' , ' , '
, ' , ' , ' , ' , '
''_______
/____,_/ .;';';.
l__[]__l_ l ,,)(,,
প্রথম বৃষ্টির শুভেচ্ছা সবাইকে !
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×