somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাবা

১৯ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফর্ক

একমাত্র মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। দরিদ্র বাবা অর্থ সংকুলান করতে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন জমি িবক্রির। চার শতক জমি। শতক ২ লাখ করে ধরলে ৮ লাখ। বিয়েটা ভালভাবে চালিয়ে আরো কিছু থাকবে আশা করা যায়। ইদানিং জমির দালালের সাহায্য ছাড়া জমি বিক্রি প্রায় অসম্ভব। তাই তিনি দালালের সাহায্য চাইলেন। দালাল খবর নিয়ে আসল, তালুকদার সাহেব ১ লাখ করে দাম করেছেন। জমিটা যেহেতু তালুকদার সাহেবের বাসার পাশে, তাই তার এ জমির প্রতি আগ্রহ। এ কথা শুনে মেয়ের বাবা হতবাক। তালুকদার সাহেবের ছেলের সাথেই তো তার মেয়ের বিয়ে! তালুকদার সাহেব এলাকার ক্ষমতাধর ব্যক্তি। রাজনৈতিক ক্ষমতা, অর্থনৈতিক ক্ষমতা, পেশী শক্তি - সবকিছুর প্রাচুর্য রয়েছে তার। আর এ জমির প্রতি তালুকদার সাহেবের লোভ অনেক দিনের। তাইতো আজ সুযোগ পেয়ে গোপনেই প্রস্তাবটি পাঠালেন জনৈক জমি দালাল কর্তৃক। ১ লাখ টাকায় এ জমি বিক্রি করা মানে পানির দামে জমিটি ছেড়ে দেয়া। শিক্ষকতা করে অনেক কষ্টে কিনেছিলেন এ জমি। তাই তাৎক্ষণিক মতামত না দিয়ে তিনি গোপনে গোপনে ভাল একজন ক্রেতা খুঁজতে থাকলেন এবং ভাগ্য ভাল থাকায় অথবা জমিটি লোভনীয় স্থানে হওয়ায় ভাল দামে বিক্রি করার মতো ক্রেতা খুঁজে পেলেন। তবু জমিটা বিক্রি করতে পারলেন না কারণ খবর পেয়ে তালুকদার সাহেব গোপনে ঐ ক্রেতাকে হুমকি দিয়ে সরিয়ে দিলেন। এবং আর কোন ক্রেতা এগিয়ে আসল না।

এ অবস্থায় জামিল সাহেবের সামনে দুইটি অপশন থাকল:

১. পানির দামে জমিটি বিক্রি করে দেয়া। অথবা,
২. মেয়ের ঠিক হয়ে যাওয়া বিয়ে বাতিল করে দেয়া।

জামিল সাহেব তার রাজা বাঁচালেন। মানে প্রথম অপশনটি বেছে নিলেন।

পিন

তালুকদার সাহেবের ছেলে করিম ছেলেবেলা থেকেই জামিল সাহেবের মেয়ে বেলার প্রেমে পতিত। কিন্তু বেলা কিছুতেই করিমকে তার যোগ্য মনে করে না। কারণ বলার মত গুন তার তেমন কিছুই নাই। তবে শেষের দিকে বেলা বুঝতে পেরেছিল যে অ্যাট লিস্ট একটা গুন করিমের আছে। সেটা হল; বুলডগস্ টিনাসিটি। মানে কোনকিছু নিয়ে লেগে থাকায় করিমের জুরি মেলা ভার ছিল্। টানা ১০ বছরের চেষ্টায় করিম সক্ষম হল বেলার সাথে বন্ধুত্ব পাতাতে। তারপর কোন একদিন তার গাড়িতে বেলাকে তুলে জোর করে কিছু আপত্তিকর দৃশ্য তুলল এবং হুমকি দিল তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে বেলাকে তার সাখে বিয়েতে রাজী হতে হবে। অবস্থা এমন যে হয় বিয়েতে রাজী হও নয়তো তোমার আর তোমার বাবার মুখে চুনকালী।

চেকমেট

অনেক অনেক দিন পর। বৃদ্ধ করিম শয্যাশায়ী। বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে অনেক আগেই। বেলা তার পাশে বসে আছে। তাদের একমাত্র সন্তান আবীর এখন অনেক বড়। করিম ইশারা করে বেলাকে বলল আবীরকে ডাকতে। করিমের নয়নের মনি আবীর। তার বংশের বাতি। সারাক্ষণ তাই করিম পাশে পাশে রাখতে চায় আবীরকে। আবীর কাছে থাকলে শান্ত থাকে করিম। দূরে গেলে অসুস্থতা বেড়ে যায়। বেলা আবীরকে ডাকে না। করিমকে তার কিছু কথা বলার আছে। ডাক্তার করিমকে বাঁচানোর আশা ছেড়ে দিয়েছেন অনেক আগেই্। তাই বেলা ভাবে আজ কথাগুলা না বললে হয়তোবা আর কখনো বলা যাবে না। বেলা তাই করিমের হাতে এক টুকরো কাগজ গুঁজে দিয়ে পড়তে বলে। কাগজে লেখা-
শোন করিম, তোমাকে আমার কিছু কথা বলার ছিল্। তুমি খুব ভাল করেই জান তোমাকে বিয়ে করার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে আমার ছিল না। তুমি একটা নোংরা খেলা খেলে বাধ্য করেছিলে তোমাকে বিয়ে করতে। আমি পারতাম বিয়েতে রাজী না হতে। কারণ, বেলা ওরকম চুনকালীর খুব কমই পরোয়া করে। শুধু বাবার দিকে চেয়ে আমি রাজী হয়েছিলাম। নয়তো এ জীবনে তোমার ভাগ্য হতো না আমাকে পাওয়ার। আমি জানি তুমি আমাকে ভালবাসতে। কিন্তু তোমার ভালবাসার সংজ্ঞাটা বোধ হয় অন্যরকম ছিল। তাই তুমি আমাকে বিয়ে করার পরও মেয়ে মানুষ নিয়ে সময় কাটাতে। আমাকে মিথ্যে কথা বলে রাতের পর রাত বাইরে থাকতে। যেদিন প্রথম জানতে পারলাম তোমার এই বদভ্যাসটির কথা সেদিনই আমি তোমাকে ডিভোর্স দিতে পারতাম। কিন্তু আমি চাইনি আমার বাবা আমার কারনে কোন কষ্ট পাক। তাই সয়ে গিয়েছিলাম ঘটনাগুলো। তবে আমি আমার মতো করে প্রতিশোধ নিয়েছি তোমার সব কাজের। জানি, তুমি আমাকে খারাপ ভাববে। কিন্তু তুমি যে খারাপ কাজগুলা করেছ আমার সাথে, তার পাল্টা হিসেবে আমার এই জঘন্য কাজটি করে আমি ভুল করিনি। আমি আমার মনকে শান্তি দিতে গিয়েই কাজটি করেছি। আমি জানি হয়তো আমার মতো করে আর কেউ চিন্তা করতো না। কি করবে বল! সব মানুষতো আর সমান না। ব্যাপারটি যদি তুমি না জেনে যাও তবে আমার খুব খারাপ লাগবে। প্রতিশোধ আর প্রতিশোধ থাকবে না। তোমার জানা উচিত যে, আবীর তোমার ছেলে না। হ্যা, ব্যাপারটা অবিশ্বাস করার মতো জানি। তবু এটা ঠিক যে, যে আবীর বলতে তুমি অজ্ঞান প্রায়, সে আবীর তোমার ঔরসজাত না। আমি চরম আনন্দ পেতাম যখন দেখতাম তুমি আবীরকে নিজ ছেলে ভেবে নিয়ে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরছ। সেটাই ছিল আমার প্রতি তোমার সকল খারাপ আচরণের জবাব। জানি সমাজ এ ঘটনা জানলে আমাকে নিন্দা জানাবে। তবু আমি জানি আমি কোন ভুল করিনি। আমার কাজের জবাব আমার কাছেই আছে।
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×