somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'শিরোনামহীন' একটি গানের দল-'জামিল' একজন স্বপ্নচারী

১৭ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার নাম জামিল/এটা আমার অফিস/এখানে আমি বছর দিন সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করি/অফিসে আসতে হয় ১০ টায়/শ্যামলী থেকে মহাখালি আসার খুব সহজ উপায় নেই/এই সময়টা গাড়ীগুলোতে অসম্ভব ভীড়/মানুষগুলো ঝুলে ঝুলে ছোটে/প্রতিদিন/দেখি/আর একটা মানুষও ওঠার জায়গা নেই/আমি দাঁড়িয়ে থাকি/জায়গা হয়ে যায় আরো অনেকের/দেখি/বাসের ভীড়ে দু'এক জন সুযোগ বুঝে পকেট হাতড়ে নেয়/মাঝে মধ্যে ধরা ও পড়ে যায়/দেখি/ফুটপাতে বসা ভিখারিনী মুখ গুঁজে হাত পেতে থাকে/কেউ দেয়/কেউ দেয় না/দেখি/বিলবোর্ডের ভেতর থেকে প্রতীক হাসি মুখ করে তাকিয়ে থাকে/আমি ও তাকিয়ে থাকি/রিক্সার বেল শুনে খেয়াল ভাঙ্গে/ফুটপাত ধরে হাঁটি/গরম মশলার সিডি বিক্রেতা ইশারা করে/রঙ বেরঙের সিডি দেখি/এই যে দেখলেন কাণ্ডটা/পানের পিক ফেলে ধোয়া শার্টটা নষ্টই করে দিল/আমি কিছু বলতে পারি না/আমি দেখি/ক'দিন হল ফ্লাই ওভারের নিচে দু"টো শিশু একটা কেরোসিনের স্টোভ দু'টো ছেঁড়া ব্যাগ আর কয়েকটা পাতিল/বয়স এক কি দেড়/আপন মনে খেলে/মাথার উপর ঊড়াল সেতু বৃষ্টি আড়াল করে দাঁড়িয়ে থাকে/দেখি/অফিসটা এখানে আসার পর বেশ অসুবিধায় পড়া গেল/কিচ্ছু করার নেই/বৈশিষ্ট্যহীন একটা বছর পার হওয়ার মুহুর্তে একটা অফিস একটা ঠিকানা একটা আস্তানা আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল/কিন্তু আমি বোধ হয় অনেক খানি দায়িত্বহীন/না হলে অফিস বন্ধু পরিবার এর কোন একটা দায়িত্ব ছাড়তে পারলেই বেঁচে যাই এমন মনে হবে কেন/সহপাঠীরা অনেকেই অনেক উঁচু উঁচু পদ আঁকড়ে ধরে আছে/আমি পারি না/আমি দেখি/সন্ধায় বাসায় ফিরে এন টিভি তে করপোরেট মেয়েদের লড়াই দেখি/বেশ লাগে/খাবার পরে সিগারেটে টান দিতে দিতে পর পর অনেক গুলো পুলিশের গাড়ি

খুব সাদা চোখে আমার তিনটা জীবন/শৈশব এখন আর খুব বেশি তাড়িত করে না/কিন্তু সদ্য ফেলে আসা রূপকথা স্মৃতির মত ক্ষত বেঁধে আছে/আর যে জীবন ইচ্ছায় অনিচ্ছায় সবাইকেই বেছে নিতে হয় তাতে বোধ হয় ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি/যদিও প্রতিটা দিন শুরু হয় প্রচণ্ড টেনশান নিয়ে/শেষ পর্যন্ত দিনটা ভাল যাবে তো/রূপকথার দেশটা এখনো কেন যেন পিছু ছাড়ে না/উদ্বোধনের প্রথম মন্ত্র ওখানেই/মানবী/প্রকৃতি/বন্ধুরা/গীটার/ফিল্ম/কমন রুমে খেলা দেখা এবং অবশ্যই আমার নিজের সাথে কাটানো রোমান্টিক সময়গুলো থেকে যা পাওয়া ওখানেই/তখন সকালের যেন একটা গন্ধ ছিল/দুপুরের যেন একটা ছন্দ ছিল/বিকেলটা কেমন উদাস-অলস-আপন/কোন এক বৃষ্টিভেজা রাতে হয়তো জনহীন চেনা রাস্তায় হাঁটছি/মনের ভেতর এক অন্য গ্রহের অনুভূতি/মাথার ভেতর কলের চাকা ঘোরে/ইতিহাস ভূগোল দর্শন/মনে হয় ব্রহ্মাণ্ডের ঘটনাপঞ্জী এক সুতোয় গাঁথা/তাই তো একই মঞ্চে যুগে যুগে ক্ষতবিক্ষত হয় মানবতা/মনে মনে রক্তাক্ত হয় মনসিজ কীর্তি/কোন কোন সন্ধ্যায় হই গন্তব্যহীন/আর মুখে মুখে বদলে যায় জীবনের দার্শনিক ভাষ্য/তার পর ও কোন এক রহস্যময় কারণে নিজের সাথে নিজের দূরত্ব ছিল/সম্ভবত জীবনের সহজ সমীকরণের সাথে বিশ্ব বিধানের সহজ যোগাযোগ নেই/তাই অনেক বোধগম্য নিজস্ব প্রহরও আচানক হয়ে ওঠে দুর্বোধ্য/আত্মপ্রবঞ্চনা হয়ে ওঠে প্রবোধের ভাষা/তখন প্রবোধের প্রয়োজনে “ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে” হাওয়ার পাখায় ভর করে নিঃসীম আকাশে সহচর হন জীবনানন্দ/জীবনের সহজ সমীকরণে সহজে নেমে আসে “উদার বৈরাগ্যময় বিশাল বিশ্রাম”

বিশ্রাম বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না/নাগরিক কোলাহল থামেনা।গাড়ি/হর্ণ/কোলাহল/ছোটাছুটি/ধাওয়া পালটা ধাওয়া/মানুষ/অনেক মানুষ/সহজ মানুষ/জটিল মানুষ/জটিলেশ্বর/ঈশ্বর থাকেন ওইখানে ভদ্র পল্লীতে/একটা দশ ফিট বাই দশ ফিট বন্ধ দরজার ঘর/দেড় হাত বর্গের গরাদ দেওয়া জানালা খোলা/কোথাও পৃথিবীকে আকাশ থেকে দেখার ষড়যন্ত্র/আকুল হয়ে মেঝেতে একটা গর্ত খুঁড়তে থাকি/ধীরে ধীরে তলিয়ে যাই অন্ধকারের অতল গহীনে/আরো গহ্বরে/খুঁড়তে খুঁড়তে দেখি অনেক বাতি দিয়ে তৈরি একটা সাজানো রাত/অন্ধকার তা ও বেশ অলংকারে জ়ড়ানো/কিছু অন্ধকার আবার বেশ বিশ্রী/সেখানে সোডিয়াম দিয়ে অন্ধকারের মুখে পাফ বুলিয়ে দেওয়া আছে/হুশ হাশ গাড়ি যায়/ফুটপাত জমে ওটে ঘুমের আড্ডায়/আমি হেঁটে যাই/প্রহরীর বাঁশি উপেক্ষা করে/পেরিয়ে যাই উঁচু উঁচু ল্যাম্পপোস্ট/সারাটা পথ একা হেঁটে এসে আচমকাই এক রূপসী নগরী/সেখানে আচম্বিতে দেখা হয় এক দল স্বপ্নচারীর সাথে/ওরা বলে নিয়ন আলোয় স্বাগতম
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:৪৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×