somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিন্ডারগার্টেন ক্যাচাল

১৬ ই আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তথা কথিত ভালো স্কুল গুলোতে "লটারী" নামক সোনার হরিণের দেখা না পেয়ে অবশেষে মেয়েকে প্রতিবেশীর পরামর্শে ভর্তি করলাম আগ্রাবাদ, সিডিএ-তে অবস্থিত একটি স্কুলে। শুনেছি ওরা হাতের লিখা সুন্দর করার উপর বেশ জোর দেয়। তার উপর স্কুলের প্রিন্সিপাল আবার ইস্পাহনী স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষিকা। কিন্তু ভর্তির কিছু দিনের মধ্যে বুঝলাম এতো স্কুল নয়, যেন একটা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। বাচ্চাদের সকল প্রকার সামগ্রী ম্যাডামের প্রতিষ্ঠানে প্রস্তুতকৃত। কোন কিছুর জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়ার প্রয়োজন নেই। বইয়ের জন্য লেখক, প্রকাশক, প্রকাশনী, প্রচ্ছদ আঁকিয়ে সবই উনার অতি মানবীয় গুনাবলি সমৃদ্ধ পরিবারের মধ্যে বিদ্যমান। বইয়ের মান উঁচু না হলেও মূল্য কিন্তু সুউচ্চই রেখেছেন ম্যাডাম। এমনকি বাচ্চাদের পোশাকের কাপড়ও তিনি নিজে সুনিদৃষ্ট দর্জিকে সরবরাহ করেন। তার উপর অতি প্রতিভাময়ী তাঁর সুযোগ্য কন্যাতো আছেন। তিনি আবার চিত্রশিল্পী। তাই বোনাস হিসাবে সকলকে একটি বিশেষ নোট ধরিয়ে দেওয়া হয়, যেন ড্রয়িং স্কুলে ভর্তি করিয়ে নেন বাচ্চাকে। যদিও এর জন্য বাধ্য করা হয় না। কারন আমাকে তেমন ঝামেলা পোহাতে হয়নি। তবে যারা এখানে ভর্তি হয়েছে তাদের স্পেশাল খাতির করা হয় এইটা প্রমানিত। মাসিক বেতন নার্সারী শ্রেণীর ৬০০ টাকা। স্কুলে যাতায়াতের জন্য স্কুল থেকে ব্যবস্থা আছে মাইক্রো এবং রিক্সাভ্যান। মাইক্রোর জন্য ১,০০০ টাকা নেন আগ্রাবাদ এরিয়ার জন্য। স্কুল সপ্তাতে ২দিন বৃহঃষ্পতি ও শুক্রবার ছুটি থাকে। সেই হিসাবে মাসে ২০ দিন স্কুল চলার কথা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে(যেমন বৃষ্টির পানি ও জোয়ারের পানির সমস্যা, ওখানে আবার আমবশ্যা পূর্নিমাতে জোয়ারের পানি উঠে) প্রায় প্রতি মাসে ১০-১২ ম্যাক্সিমাম ১৫ দিনের বেশী ক্নাস হয়না। এবং তার উপরে মাইক্রো নষ্টতো আছে। এমনকি মাসিক পরীক্ষা চলার সময়েও এই মাইক্রো সমস্যার কারনে গাড়ি দেয়নি। সবচেয়ে দূঃখ জনক হল এই যে গাড়ি নষ্ট এই কথাটা কাউকে ফোন করে জানানোর প্রয়োজনও তারা মনে করেননা। যখন গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে করতে স্কুলের সময় বয়ে যাচ্ছে তখন তাদের ফোন করে জানা যায় গাড়ী আসবেনা। এমতাবস্থায় গার্ডিয়ানদের কেউ অফিসে নতুবা কাজে বেরিয়ে গেছে। ভাবুন এবার অবস্থাটা কেমন হয়? তার উপর পরীক্ষা। এইসব হিসাবে নিলে প্রতিদিন গড়ে মাইক্রো বাবদ দিতে হয় ১০০ টাকা করে। কিন্তু তবুও এই সব নিয়ে কোন কিছু বলিনি বা জানতে চাইনি। এবার যখন মেয়ের স্কুলের থেকে দুই মাসের বেতন ও গাড়িভাড়া একসাথে প্রদানের জন্য বললো। তখন জানতে চাইলাম কারন কি? বাচ্ছাদের জানানো হল যে রমজানের জ্ন্য স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে। তাই অগ্রিম নিয়ে নেয়া হচ্ছে। বাচ্চার মা সাধারনত স্কুলের এই সব দেখাশোনা করে। আমার অফিসের জন্য সেদিকে তেমন যাওয়া হয় না। আমি আজকে ওকে বেতনের টাকা দেওয়ার সময় বলেছিলাম জিজ্ঞেস করতে যে, স্কুলের বেতন নিক ঠিক আছে? নাহয় একমাস আগে দিলাম। কিন্তু প্রায় পুরো মাস স্কুল বন্ধ থাকবে, তাহলে পুরোমাসের গাড়িভাড়া কেন নিবে? সন্মানিত প্রিন্সিপালের জবাব এর সারমর্ম হল। আপনার ভালো না লাগলে বাচ্চাকে অন্য কোথাও নিয়ে যান। আমার এখানে থাকলে এই নিয়মেই চলতে হবে সহ প্রচুর কথাবর্তা। আমার স্ত্রী স্কুল থেকে বেরিয়ে এল ব্যথিত হৃদয়ে। এমতাবস্থায় আমার ফোন পেয়ে ম্যাডামের ঝারির প্রতিক্রিয়া ঝাড়লো আমার উপর। আমার অপরাধ কেন তাকে জিজ্ঞাস করতে বললাম। সে বললো তোমার জন্য এতগুলো টিচার এবং অভিভাবকের সামনে আমাকে লজ্বা পেতে হল! আমি বললাম তোমার কথাই হয়তো ঠিক, হয়তোবা না? যেখানে ফুটপাত হতে সুপার ষ্টোর সবই চলে এক দামে(ফিক্সড প্রাইস)। মাছে ফরমালিন দিয়েছে কিনা? জানতে চাইলে দোকানি মারতে চায়। সেখানে একজন প্রিন্সিপালকে প্রশ্ন করা অপরাধ বৈকি! তবে দ্বায়িত্ব তুমিও কিন্তু এড়াতে পারনা, এমনকি তোমার বাবাও। কারন তিনি যদি আমার মত একজন অতি সাধারন চাকুরীজিবী মানুষের কাছে তোমাকে বিয়ে না দিয়ে। একজন স্বনামধন্য ব্যাবসায়ী, ঘুষখোর, দুরর্নিতিবাজের কাছে তোমাকে বিয়ে দিত, তাহলে তোমাকে এত কষ্ট বা লজ্বা পেতে হতোনা। কারণ তারা জীবনযাত্রার খরছ বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের আয়ও একটু টিউনিং করে মানে বাড়িয়ে নিতো। যা আমার দ্বারা একেবারেই অসম্ভব। আমাদের মত সাধারন চাকুরি জীবিদের নিয়ে যত সমস্যা। এদের কাছে শুধু অভাব আর অভিযোগই শুধু শুনবে। সত্যি কথা বলতে কি, দিনে দিনে আমরা বোধহয় এই সমাজের অযোগ্যই হয়ে যাচ্ছি। হয়তোবা গেছিও।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:১৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×