যদি কাহারো ভাল লাগে বা হার না মানা কথাগুলো দ্বারা কারো উপকৃত বোধ করেন , তবে অবশ্যই আমাকে একটা ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না । মনোযোগ দিয়ে পড়ুন আশা করি ভাল লাগবে ।
1/ যারা সমস্ত মন দিয়ে চাইতে পারে , সমস্ত প্রাণ দিয়ে ভোগ করতে জানে, যাদের দ্বিধা নেই, সংকোচ নেই, তারাই প্রকৃতির বরপুএ ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
২/ভুলকে ভুল বলে মানলেই সব চেয়ে বড়ো ভুল করা হয় ।
৩/ জীবনের ট্রাজেডি এইখানেই । সে ছোটো হয়ে ঋদয়ের এক তলায় লুকিয়ে থাকে, তার পরে বড়োকে একমুহূর্তে কাত করে দেয় । মানুষ আপনাকে যা বলে জানে মানুষ তা নয় , সেই জন্যেই এত অঘটন ঘটে ।
৪/ বিরহে যে মন্দির শূন্য হয় সে মন্দিরের মধ্যেও বাঁশি বাজে । কিন্তু বিচ্ছেদে যে মন্দির শূন্য হয় সে মন্দির বড়ো নিস্তব্ধ শোনায় ।
৫/ পুরুষ মানুষের একটা নেশা চাই, কিন্তু সে নেশা যেন মেয়েমানুষ না হয় ।
৬/পুরুষেরা যেখানে দুর্বল মেয়েরা সেখানে তাদের খুব ভাল করেই চেনে , কিন্তু পুরুষেরা যেখানে খাঁটি পুরুষ মেয়েরা সেখানকার রহস্য, ঠিক ভেদ করতে পারে না । আসল কথা , পুরুষ মেয়ের কাছে রহস্য, আর মেয়ে পুরুষের কাছে রহস্য,----।
৭/ ওদের ঐ আমির দাবিটাকে নিয়ে যে কত রঙ, কত ভঙ্গি, কত কান্না, কত ছল, কত হাবভাব , তার আর অন্ত নেই । ঐটেতেই তো ওদের মাধুর্য । ওরা আমাদের চেয়ে ঢের বেশি ব্যক্তিবিশেষ । আমাদের যখন তৈরি করেছিলেন তখন ছিলেন তিনি ইস্কুলমাস্টার , তখন তাঁর ঝুলিতে কেবল পুথি আর তত্ত্ব । আর ওদের বেলা তিনি মাস্টারিতে জবাব দিয়ে উঠেছেন আটির্স্ট, তখন তুলি আর রঙ্গের বাস্ক ।
৮/ আমরা পুরুষ কেবল আমাদের দাবির জোরে মেয়েদের আজ উদঘাটিত করে দিয়েছি । কেবলই আমাদের কাছে আপনাকে দিতে দিতে তারা বড়ো করে বেশি করে পেয়েছে । তারা তাদের সমস্ত সুখের হীরে এবং দুঃখের মুক্তো আমাদের রাজকোষে জমা করে দিতে গিয়েই তবে তাঁর সন্ধান পেয়েছে । এমনি করে পুরুষের পক্ষে নেওয়াই হচ্ছে যথার্থ দান, আর মেয়েদের পক্ষে দেওয়াই হচ্ছে যথার্থ লাভ ।
৯/ আমরা আজ পর্যন্ত মেয়েদের যদি কাঁদিয়ে না আসতুম তা হলে তাদের দুঃখের ঐশ্বর্য – ভান্ডারের দরজা যে আটাই থাকত । পুরুষ যে এিভুবনকে কাঁদিয়ে ধন্য করবার জন্যই । নইলে তার হাত এমন সবল তার মুঠো এমন শক্ত হবে কেন ।
১০/ ছ’টা যে রিপু আছে তার মধ্যে প্রথম – দুটো এবং শেষ দুটো হচ্ছে পুরুষের , মাঝখানের দুটো হচ্ছে কাপুরুষের । কামনা করব কিন্তু লোভ থাকবে না , মোহ থাকবে না । মোহ জিনিসটা থাকে অতীত আর ভবিষ্যৎকে জড়িয়ে ।
১১/ মিথ্যাকে সত্য বলে ধরে রাখার চেষ্ঠা যে নিজের গলা চেপে ধরা ।
১২/ পৃথিবীতে যা সকলের চেয়ে বড়ো তাকে লোভে পড়ে সস্তা করতে গেলেই সর্বনাশ ঘটে ।
১৩/ দুঃখের ভিতর দিয়ে যে মুক্তি আসে সেই মুক্তি দুঃখের চেয়ে বড়ো ।
১৪/ যে আমার অপকার করে সে আমার কাছে ঋণী, পরকালে সে ঋণ তাহাকে শোধ করিতে হইবে , যে আমার উপকার করে আমি তাহার কাছে ঋণী, কিন্তু কোনকালে তাহার সে ঋণ শোধ করিতে পারিব না ।
১৫/ তলোয়ারে শত্রুকে জয় করা যায় , কিন্তু সংগীতে শত্রুকে মিত্র করা যায় ।
১৬/ লোকের যখন ধর্ম জ্ঞান সহসা প্রবল হইয়া উঠে, তখন কোন যুক্তিই তাহার কাছে খাটে না ।
১৭/ ঋদয় জিনিসটা অতি উত্তম কিন্তু সকলের চেয়ে উত্তম নয় ।
১৮/ কথার মধ্যে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যে তাহা লইয়া যতই তর্ক কর-না কেন প্রাপ্তির মধ্যে যে সত্য সেইটাই আসল ।
১৯/ বিচ্ছেদের মুখে প্রেমের বেগ বাড়িয়া উটে ।
২০/ আপনাকে জানো । নইলে মুক্তি কিছুতেই নেই ।
২১/ যে লোক যে ক্ষেত্রে আছে সে ক্ষেত্রের বাহিরের সত্য যদি তার কাছে ছোট হয়ে না থাকে তবে সে ব্যক্তি কাজ করতেই পারে না ।
২২/ অন্যায়কে সহ্য না করাই হচ্ছে উচিত ব্যবহার ।
২৩/ যেখানে ভিতরে কোথাও একটা অন্যায় আছে সেখানে বাহিরে শান্তি থাকাটাই সকলের অমঙ্গল ।
২৪/ সমাজকে বুদ্ধিতে লংঘন করা সহজ , কিন্ত কাজে লংঘন করিবার বেলায় ছোট বড় কত জায়গায় টান পড়ে ।
২৫/ ভালোর সঙ্গে মন্দ মেলাই সব চেয়ে কঠিন ।
২৬/ জগৎ যখন কাজ করছে তখন তুমিও যদি কাজ না কর তা হলে যে কেবই ঠকবে ।
২৭/ মুখের তর্কে একটা জিনিসকে একরকম করে দেখানো যেতে পারে , কিন্ত কাজে সেরকমটি পাওয়া যায় না ।
২৮/ ভাবের অসীমতা না হলে মানুষের ঋদয়ের ফাঁকা ভরে না ।
২৯/ কোনো মানুষের সঙ্গে সমাজের যখন বিরোধ বাধে তখন দুটো কথা ভেবে দেখবার আছে –দুই পক্ষের মধ্যে ন্যায় কোন দিকে এবং প্রবল কে । সমাজ প্রবল তাতে সন্দেহ নেই , এতএব বিদ্রোহীকে দুঃখ পেতে হবে ।
৩০/ মতকে মত দিয়ে , যুক্তিকে যুক্তি দিয়েই বাধা দেওয়া চলে , কিন্ত বুদ্ধির বিষয়কে ত্রুোধ দিয়ে দন্ড দেওয়া বরব র্রতা ।
৩১/ সমাজকে যদি তোমরা লংঘন করিতে চাও তবে সমাজের চেয়ে তোমাদিকে বড়ো হইতে হবে ।
৩২/ আপন যখন পর হয় তখন তাকে সম্পূর্ণ ত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোন গতি নেই । সেই জন্যেই তো এত বিধিনিষেধ , এত প্রাণপণ টানাটানি ।
৩৩/ পৃথিবীতে যাহারা সাহস করিয়া নিজের জীবেনর দ্বারা নব নব সমস্যার মীমাংসা করিতে প্রস্তুত হয় তাহারাই সমাজকে বড়ো করিয়া তুলে । যাহারা কেবলই বিধি মানিয়া চলে তাহারা সমাজকে বহন করে মাত্র , তাহাকে অগ্রসর করে না ।
৩৪/ ওই বাহিরের চাঁদটাও কিছু না , মেঘটাও কিছু না, সব ফাঁকি – সব ফাঁকি ! আসল যা কিছু তা এই নিজের মনটা । সে যখন যাকে যা দেখায়, বিভোর হইয়া সে তখন তাই শুধু দেখে ।