somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিছানায় নেওয়ার ভাষা সব দেশের পুরুষেরই এক

১৭ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লু মস্ক থকে হাজিয়া সোফিয়ার মাঝে একবোরে অল্প একটু পথ আছে। পায়ে হেঁটে পাঁচ মিনিটের মত লাগে। আমি য্খন হাজিয়া সোফিয়ার দিকে যাচ্ছিলাম তখন একজন ছেলে ইস্তানবুলের গাইড বুক নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসেন।


প্রথমে পঁয়ত্রিশ লিরা দাম চাইলেও আমি পাঁচ লিরা দিয়ে তা কিনে নিই। এরপর ছেলেটি আমার পিছনে পিছনে আসতে থাকে এবং জিজ্ঞাসা করে 'তুমি কি একা?' আমি জবাবে বলি 'হ্যাঁ'।

ও সাথে সাথে বললো, 'আমি কি তোমার সাথে আসতে পারি?" আমি জিজ্ঞাসা করলাম কেনো? ও জবাবে বললো যে সে ছাত্র এবং আমার সাথে ইংরেজি র্চচা করতে চায়। আমি তাকে আমার সাথে আসবার জন্য সম্মতি জানালাম। ও সাথে সাথে পাশের একজনকে গাইডবুকগুলো দিয়ে আমার সাথে হাজিয়া সোফিয়ার দিকে হাঁটতে লাগলো। আমি তার নাম জানলাম মুজাহদি। একটি ছবি তুলে দেবার জন্য অনুরোধ জানালাম। ছবিটা আমি 'ব্লু মস্ক' এবং 'হাজিয়া সোফিয়া'র মাঝে তুললাম। আমি ছবি দেখে মুগ্ধ হয়ে বললাম চমৎকার।

মুজাহদি বললো হ্যাঁ, একেবারে মেয়েদের উদ্ধত স্তনের মতো। আমি একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কি বললেন? একটু বিষদভাবে বর্ণানা করে বললো, নারীর স্তন যেমন পাশাপাশি মাঝে একটু জায়্গা রেখে এক বক্ষে অবস্থান করে, ঠিক তমেনি 'ব্লু মস্ক' এবং 'হাজিয়া সোফিয়া' পাশাপাশি মাঝে একটু জায়্গা রেখে একই সুলতান আহমেতে অবস্থান করে। আমি মুজাহিদের রসিকতায় মুগ্ধ হয়ে গেলাম। তারপর দু'জনের জন্য দু'বোতল পানি কিনে রওনা হয়ে গেলাম হাজায়া সোফিয়ার দিকে।

হাজিয়া সোফিয়া বা আয়া সোফিয়া
হাজিয়া সোফিয়া বাইজেনটাইন আমলে সবচেয়ে পবিত্রতম স্থান বলে গণ্য করা হত। ‘হাজিয়া সোফিয়া’ শব্দটির অর্থ হলো ‘পবিত্র ভাবনা’, হাজিয়া সোফিয়া ৯১৬ বছর চার্চ হিসেবে ও ৪৮১ বছর মসজিদ হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। বর্তমানে তা জাদুঘর হিসেবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মুসলিম সম্প্রদায় হাজিয়া সোফিয়াকে আবারো মসজিদ বলে খুলে দেবার জন্য প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। আমি যেদিন যাই সেদিন বড় ধরনের প্রতিবাদ সভা চলছিল, পথভরা ছিল পুলিশ ও প্রতিবাদীদের মিছিলে। হঠাৎ করে বাংলাদেশের সমাবেশের কথা মনে পড়ে গেল।

আমি এতে একেবারে বিব্রত হইনি কিন্তু অন্য বিদেশিরা এতে যথেষ্ট ভয় পেয়ে যান। সেদিন মনে হয়েছিল যে বাংলাদেশে চলে অভ্যস্ত হবে সে বিশ্বের সব দেশে টিকে যাব। কোনওকিছুই তাকে আর বিচলিত করবে না। আমি দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কিনে হাজিয়া সোফিয়াতে প্রবেশ করলাম। অনেক ট্যুর কোম্পানি টিকেট বিক্রি করে থাকে তাই যারা সময় বাঁচাতে চান তাদের জন্য টিকেট একটু আগে থেকে কিনে নেওয়াই ভালো। দুই থেকে তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে শরীরের সব উৎসাহ চলে যায়। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আমি হাজিয়া সোফিয়াতে প্রবেশ করলাম। প্রবেশ পথেই চোখে পড়ল বড় দেওয়ালের ওপর ভার্জিন মেরির কোলে যিশুখ্রিস্টের ছবি এবং পাশেই বড় করে লেখা ‘আল্লাহ’। এ রকম মিউজিয়াম আমার কোনও দিন চোখে পড়েনি।

হাজিয়া সোফিয়া বাজেনটাইন স্থাপত্যের সবচেয়ে বড় ও অন্যতম নিদর্শন। এর গম্বুজগুলো মারবেল ও মোজেক দ্বারা বেষ্টিত। এর কারুকাজের বর্ণনা শুধু হাজিয়া সোফিয়া নিজেই দিতে পারে। চমৎকারভাবে নির্মিত এই হাজিয়া সোফিয়া। হাজিয়া সোফিয়াও ‘ব্লু মস্ক’-এর মতো দোতলা বিশিষ্ট। এর স্থাপত্যে পশ্চিমার সংস্কৃতি, রোমের সংস্কৃতি ও মুসলিম স্থাপত্যের মিশ্রণ দেখা যায়। এর নির্মাণ কাঠামোটি একটু জটিল প্রকৃতির বলে মনে হয়েছে। হাজিয়া সোফিয়ার ডোমে ৪০টি জানালা রয়েছে। হাজিয়া সোফিয়া তার রহস্যময় আলোর জন্য বিখ্যাত। এর ভেতরকার আলোতে কোথায় যেন রহস্য লুকিয়ে আছে। চার্চটি সম্পূর্ণভাবে মোজেক দ্বারা বেষ্টিত এবং ডিজাইনগুলো খানিকটা জ্যামিতির মতো। মোজেকের কারুকাজ দর্শনের মতো। এত সুন্দর নিখুঁত মোজেকের কারুকাজ খচিত মিউজিয়াম এখন বোধ হয় শুধু তুরস্কতেই আছে। হাজিয়া সোফিয়া দর্শন শেষে মুজাহিদ আমাকে জিজ্ঞাসা করল যে তুমি কি দুপুরের খাবার খয়েছো? আমি জাবাবে বললাম না। ও বললো চলো তোমাকে আজ র্তুকীর কাবাব খাওয়াব। আমিও রাজি হয়ে গেলাম। ও আমাকে একটি বিখ্যাত কাবাব রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেল। আমরা খাবার অডার করে খাবারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। অপেক্ষারত অবস্থায় মুজাহিদ আমাকে দিনের বাকি অংশের এবং পরবর্তী দিনের র্কমসূচী জিজ্ঞাসা করল, আমি বললাম রাতে বোসফারাস ট্যুরে যাব এবং এর আগে একটু কেনাকাটা করব।

ছেলেটি জবাবে বললো যে ‘ব্ল মস্কের’ নীচে অটোমান বাজার আছে সেখানে সে আমাকে খাবার শেষে নিয়ে যাবে। ওর পরিচিত সস্তা দোকান আছে। আমি তো খুশিতে আত্মহারা। ক্লান্তি চিরতরে বিদায় হল। খাবার পরিবেশন করা হল। মিক্সড গ্রিলড কাবাব ও তুর্কী মাঠা। তুরস্কে মাঠা খুবই জনপ্রয়ি। খেতে খেতে মুজাহিদ আমাকে জিজ্ঞাসা করল সেদিন রাতে আমার কি প্ল্যান? আমি বললাম বোসফারাস ট্যুর থেকে এসে ঘুমাবো। মুজাহদি চোখ চকচক করে বললো আমার সাথে নাইট ক্লাবে যাবে? আজ থাকো সারারাত আমার সাথে। আমার বুক একটু ধ্বক করে উঠলো। কেমন জানি কিসের আভাস? বিশ্বভ্রমন একটা জিনিস আমাকে খুব ভালোভাবে শিখিয়েছে এবং সেটা হচ্ছে রহস্যময় নারীদেহের প্রতি পৃথিবীর সব পুরুষই বিচিত্রভাবে আকৃষ্ট। সে দেহ যে দেশেরই হোক না কেন? বাংলাদেশী অথবা তুর্কী দেহ। দেহ হলেই হল। সে দেহের স্বাদ সব পুরুষই গ্রহণ করতে চায়। হোক না সে দেহের সাথে এক মিনিটের পরিচয়। পুরুষমাত্রই কেন জানি যে কোনও জায়্গায় যে কোনও সময়ে বস্ত্র উন্মোচনে প্রস্তুত। বিছানায় নেবার ভাষা সব দেশের পুরুষেরই এক। ভালোবাসা না থাকলেও তাদরে শরীর জাগ্রত হতে সময় লাগে না। আর শরীরে লাল বাতি তো সব সময়ই জ্বালানো থাকে। আমি ইঙ্গিত বুঝে বললাম ট্যুর শেষে রাতে ফোন করব। - তানিয়া হোসেন, অনলাইন পত্রিকা থেকে নেয়া।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৮
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×