ঘটনাটি গত শুক্রবারের । আমাদের গ্রামের ছেলে জুয়েল (২৭) । সিলেটের ভোলাগঞ্জে পাথর উত্তোলনকারী গাড়ির হেলপার সে । ঈদ উপলক্ষে বাড়ি আসছিলো । শহরে ছোট চাচার বাসা আছে তাই রাতের বাসে আসে ।
রাত সাড়ে দশটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়ায় চাচার বাসায় পৌঁছে হঠাত্ লজ্জায় পরে ছোট চাচাতো বোনের কথা শুনে । পিচ্চিটার অভিযোগ জুয়েল ভাই কখনোই খালি হাতে আসে না, এবার কী হয়েছে ? সঙ্গে সঙ্গে সে পাড়ার দোকানে যায় চিপস, জুস কিনতে । হঠাত্ তার চোখে এসে টর্চ লাইটের আলো পরে । জুয়েল বার বার বলা সত্ত্বেও তারা চোখে টর্চ ধরে রাখে । এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে সে ধমকের স্বরে টর্চ সরাতে বলে । সাথে সাথে তাকে ঐ লোকগুলো লাঠিপেটা শুরু করে । কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে পিটিয়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় । উল্লেখ্য, ঐদিন সন্ধ্যায় কান্দিপাড়াতে বিএনপি'র দুই গ্রুপের মধ্যে ঝগড়া হয় ।
জুয়েলকে থানায় নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানসিক অত্যাচার করা হয় । তার পকেটে থাকা সিলেট টু ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাসের টিকেট দেখালে সেটি মাসুদ নামের এক পুলিশ ছিঁড়ে ফেলে । উপায়ন্ত না দেখে সে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা বাবা আব্দুর রহিমের পরিচয় দেয় । তাতে তাচ্ছিল্ল্যের হাসি হাসে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা । থানা থেকে জুয়েলের পরিবারকে জানালে তার মা, বাবা, দুই চাচা এবং চাচাতো ভাই রফিক(আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি) ছুটে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় । ঐ রাতেই সাংসদ র, আ, ম, উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী থানায় যান আইন শৃংখলা পরিস্থিতির খবর জানতে । তাঁকে ঘটনাটি জানায় জুয়েলের চাচা এবং আওয়ামী নেতা বড় ভাই । সাংসদ বলেন- দেখছি...
মধ্যরাতে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমের নির্দোষ সন্তানকে ১৫,০০০ (পনেরো হাজার) টাকার বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জেল থেকে ছাড়া পেতে হয় ! ঈদের কেনা কাটা হবে না এবার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমের ঘরে । তাঁদের ঈদের খুশি কেড়ে নিলো জনগনের বন্ধু খ্যাত পুলিশেরা ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২২