তখনো পরিচয় হয়নি সে জগতের সাথে। আপনার মাঝে এমন জগতের সন্ধান তুমিই দিয়েছিলে আমায়।
প্রথম প্রেমের মত আচ্ছন্ন করে রাখা কল্পনার সে রাজ্যে ছিল তোমার অবাধ বিচরণ।
মাঝে মাঝে নামতে মর্তে, আর তখনই দেখা হত তোমার আমার।
তোমার হাত ধরে কতবার যে আমিও গিয়েছি সেই ভুবনে।।
সেথা আপনার জগতে আপনি অধিপতি।
ইচ্ছে বাসরে সুখের শীৎকার আর ইচ্ছেমত ওড়া উড়ি ।
ইচ্ছে প্রজাপতির ডানায় চেপে হওয়া গ্রহান্তরী ।।
ইচ্ছে মেঘের ভেলায় ভেসে দিব্যি সুখে ছোটা।
হাজার তারার আলোয় সাজানো মঙ্গলালোকে, অনিন্দ্য স্বপ্ন বোনা।
তোমার সাথে সাথে কল্পচারি হয়ে উঠেছিলাম ধীরে ধীরে।
কখন যে আলগা হতে শুরু করেছে জাগতিক বন্ধন।
একদিকে জাগতিক কর্তব্যের আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে রাখার চেষ্টা অন্যদিকে মহনীয় আবহের হাতছানি।
বিভ্রান্ত হতাম প্রায়শই, তবু দ্বিধান্বিত পদক্ষেপে একসময় ঠিক এসে দাঁড়াতাম স্বপ্নের দুয়ারে।
আমাকে বরন করতে তোমার সে কি আয়োজন। আমি আপ্লুত-অভিভূত তখন।
পরম আগ্রহে অঞ্জলি ভরে নিতে আনন্দাশ্রু আমার, অমূল্য উপঢৌকন যেন।
তোমার ডাকে সাড়া না দিয়ে কি উপায় ছিল, বল?
নেশাগ্রস্থ আত্ম নিয়ন্ত্রনহীন আমি তখন। নেশায় থাকতাম বুদ হয়ে।
সে নেশা কেটে যাওয়ার আগেই পুনরায় আবির্ভূত হতে।
হাতে হাত রেখে এক ছুটে পৌঁছুতাম আমাদের বেলাভূমি।
তারপর যেমন ইচ্ছা সাজা। ইচ্ছে ঘুরির পিঠে চেপে দিগন্ত ছোঁয়া।
অথচ সেই তুমি কথা রাখনি, কেমন অচেনা এখন।
আজ তুমি জাগতিক প্রেমে মত্ত হয়ে ত্যাজিছ আপন ভুবন।
দাসত্বের মাঝে খোজ সুখ!
আমি তোমার, সুখের পায়রাদের মুখ থুবতে পরে থাকা দেখি।
দেখি ডানা ভাঙ্গার বোবা যন্ত্রণা ।
শুনি কোরাস আর্তনাদ তোমার ফেলে আসা বেলাভুমের উপনিষদের।
একদা সতেজ, আনন্দ কোলাহলপূর্ণ ঝলমলে ভুবনে আজ একটানা বিষাদের সুর।
উন্মুখ হয়ে বসে আছে সব এই বুঝে এলে তুমি।
এমন আহবান তুচ্ছ করে কতটা সুখ দাসত্বে?
আজ বড় বেশি অচেনা ঠেকে তোমায়।
জাগতিক মনে হয়।
হিংসা-বিদ্বেষ আর ঈর্ষার বিষ শুষে নীলকণ্ঠ হয়েছ তুমি?
কিছুতেই পারি না আমি।
তাই অজস্র মানুষের মাঝে ভীষণ একাকী পরে থাকি।
কোলাহলপূর্ণ পৃথিবীতে যাপিত একজন, নিঃশব্দের অভিযাত্রী।