somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সালমান ও তাঁর পরিচালকদের গল্প ৫ (সালমান -মৌসুমি জুটির শেষ পর্ব)

১২ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা আপনাদের জন্য আমার নিয়মিত জনপ্রিয় সিরিজ 'সালমান ও তাঁর পরিচালকদের গল্প' এর ৫ম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি যাকে 'সালমান -মৌসুমি জুটির শেষ পর্ব ' বলতে পারেন। আজ এখানে সংক্ষেপে সালমান - মৌসুমি অভিনীত সর্বশেষ ছবিটি নিয়ে সংক্ষেপে একটা ধারনা দেয়ার চেষ্টা করবো।।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার এর 'স্নেহ' - ৯৩ তে বাম্পারহিট কেয়ামত থেকে কেয়ামত ' ছবির সুপারহিট জুটি সালমান - মৌসুমির শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটির নাম 'স্নেহ'। ছবিটি ৯৫ সালে মুক্তি পায়। ছবিটির প্রযোজনা সংস্থা ও পরিচালক হলেন আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সাল্মান -মৌসুমি জুটির অন্যসব ছবির গল্প ও ব্যবসার দিক দিয়ে এই ছবিটি ছিল একেবারেই আলাদা। অর্থাৎ সালমান -মৌসুমি জুটির যতগুলি ছবি এর আগে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর সবগুলোই ছিল রোমান্টিক প্রেমের গল্পের ছবি যার সবগুলো ছিলে সুপার -ডুপারহিট। কিন্তু 'স্নেহ' ছবিটি ছিল পারিবারিক টানাপোড়ন বা 'ফ্যামিলি ড্রামা' নির্ভর ছবি যেখানে সাল্মান -মৌসুমির প্রেম এর কাহিনীটি মুখ্য নয় , মুখ্য ছিল একজন ডাক্তার (আলমগীর) এর জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ভুলবুঝাবুঝি ও সম্পর্কের বিচ্ছেদ এর গল্প যেখানে শাবানা একজন আদর্শবান ও আত্নসম্মান রক্ষাকারী বাঙ্গালী নারী যিনি তাঁর স্বামীর সংসার থেকে বিতারিত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং একমাত্র সন্তানকে পিতার পরিচয় ছাড়াই মানুষ করতে চেয়েছেন। অর্থাৎ ছবির গল্প পুরোটাই আবর্তিত হয়েছিল আলমগীর - শাবানা কে কেন্দ্র করে যেখানে সাল্মান আলমগীর -শাবানার একমাত্র সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ফলে দর্শক এখানে সাল্মান - মৌসুমির প্রেমের রসায়ন সেভাবে পায়নি যার কারনে সাল্মান - মৌসুমি জুটির অন্য সব ছবিরচেয়ে এটাকে ফ্লপ বলা যায় যা এই জুটির একমাত্র ফ্লপ ছবি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল সেই সময়। ছবির গল্প সুন্দর, টানটান উত্তেজনা, চমৎকার কিছু গান থাকা সত্ত্বেও ছবিটি পূর্বের ছবিগুলোর মতো ব্যবসা করতে পারেনি। এই ছবির সবচেয়ে আকর্ষণীয় যেটি ছিল সেটা হলো সেই সময়ের দুর্দান্ত খলনায়ক হুমায়ূন ফরিদির খুব চমৎকার পজিটিভ অভিনয় যিনি শাবানার পিতার পরিবারের আমল থেকে শাবানাদের সংসারে আশ্রিত অবস্থায় আছেন এবং শাবানার দুর্দিনে শাবানার পাশে থেকেছিলেন যাকে ছবিতে সাল্মানের মামা চরিত্রে দর্শক দেখতে পায়। যিনি ছোটকাল থেকেই মা-বাবার স্নেহ বঞ্চিত সাল্মাঙ্কে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছিলেন এবং সাল্মান যাকে শুধু মামা নয় একজন প্রিয় বন্ধু হিসেবেই জানে ও মানে। আলমগীর - শাবানা, সাল্মান ,ফরিদির খুব চমৎকার অভিনয় সমৃদ্ধ ছবির নাম 'স্নেহ'। ছবির গানগুলো বেশ চমৎকার ছিল। সবগুলো গানের কথা লিখেছিলেন পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর সুর করেছিলেন জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক আলী হোসেন। গানগুলোর মধ্য ফরিদি -সাল্মান এর মিলিত অভিনীত সুবীর নন্দী ও খুরশিদ আলম এর কণ্ঠের গানটি 'মামা ও মামা'



দর্শকরা বেশ উপভোগ করেছিলেন।
এরপর সালমান - মৌসুমি জুটি ও প্রয়াত খালিদ হাসান মিলু ও সালমা জাহান এর কণ্ঠের 'চিঠি লিখলাম তোমাকে এবং খালিদ হাসান মিলুর কণ্ঠে 'তুমি যেখানেই থাকো / ও আমার ভালোবাসা '

গান দুটি ছিল সেই সময়ের খুব জনপ্রিয় দুটি গান। আমার ব্যক্তিগত বেশী পছন্দ ছিল সুবীর নন্দী ও খুরশিদ আলমের 'মামা ও মামা আমি তোমার ভাগিনা ' এবং খালিদ হাসান মিলুর কণ্ঠের 'ও আমার ভালোবাসা 'গান দুটি। সবগুলো গানের কথা ,সুর ছিল খুবই চমৎকার। গানগুলো শুনলে মনে হবে কখনও কখনও বাংলা আধুনিক কোন গান। ছবিটি সেই সময় আমরা যারা দেখেছিলাম তাদের কারোরই খারাপ লাগেনি। কারন ছবির গল্পটি ছিল বেশ দ্বন্দ্বমুখর ও চমৎকার । কিন্তু সালমান -মৌসুমির রোমান্টিক প্রেমের ছবি হিসেবে যদি কেউ দেখতে চায় তাহলে তিনি বেশ বড় একটা ধাক্কা খাবেন। যা সেই সময় অনেকে এই ভেবেই ভুল করেছিল ফলে ছবিটি ব্যবসায়িক ভাবে সেই রকম সুপার ডুপার হিট হয়নি । তবে এর পেছনে শুধু পারিবারিক গল্পকে দায়ী করলে ভুল হবে। কারন ছবিটি মুক্তি পাওয়ার আগেই সালমান -মৌসুমি জুটির দূরত্ব বেড়ে যায় অনেক। ফলে ততদিনে সালমান - শাবনুর ও সানী - মৌসুমি জুটি দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বেশী পেয়েছিল। এই ছবির পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার এই ছবি মুক্তির আগে রোজার ঈদে সানী -মৌসুমি জুটির 'ক্ষুধা' ছবিটি মুক্তি দিয়েছিলেন যেটি ব্যবসায়িক দিক দিয়ে 'স্নেহ' ছবির চেয়ে অনেক বেশী সাফল্য পেয়েছিল। 'ক্ষুধা' ছবিটি ঈদের সেরা কয়েকটি ব্যবসা সফল ছবির একটি ছিল। ফলে গাজীর এই ছবিটি সালমান - মৌসুমিকে দর্শক সেভাবে পায়নি।
এই ছবির মাধ্যমেই সমাপ্তি ঘটে বাংলা চলচ্চিত্রের খুব ক্ষণস্থায়ী সুপার ডুপার হিট ও জনপ্রিয় জুটি সালমান - মৌসুমি' জুটির যা সবসময় বাংলা চলচ্চিত্রের সেরা কয়েকটি জুটির অন্যতম হয়ে থাকবে।
*** বাংলা চলচ্চিত্রকে ভালোবাসুন এবং এই শিল্পকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন ***
এমন আরও অনেক কিছু জানতে সবসময় একটি শিক্ষিত রেডিও র সঙ্গে থাকুন ।।
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×