somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তারাবির বিনিময় দেয়া নেয়া উভয়টিই নাজায়েয

১২ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খতম তারাবীর ইমামতি করে বিনিময়
বা হাদিয়া নেওয়া জায়েয় কি না? এক
মাসের জন্য নিয়োগ দিয়ে বেতন
দিলে জায়েয হবে কি না? কেউ কেউ
বলেন, ফরয নামাযের ইমামতির
বিনিময় গ্রহণ যখন জায়েয তাই খতম
তারাবীর বিনিময় গ্রহণও জায়েয হবে।
এছাড়া হাফেয সাহেবকে যদি দু’ এক
ওয়াক্ত ফরয নামাযের দায়িত্ব
দেওয়া হয় তবে তো নাজায়েয হওয়ার
প্রশ্নই থাকে না। তাদের একথা ঠিক
কি না? ইমামতির হীলা হোক বা অন্য
কোনো উপায়ে তারাবীর বিনিময় বৈধ
হবে কি না? দলিল-প্রমাণসহ
বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর:
খতম তারাবীর বিনিময় দেওয়া-
নেওয়া দুটোই নাজায়েয। হাদিয়ার
নামে দিলেও তা জায়েয হবে না। এক
মাসের জন্য নিয়োগ দিয়ে বেতন
হিসেবে দিলেও জায়েয নয়। কারণ
এক্ষেত্রেও প্রদেয় বেতন তারাবীহ
এবং খতমের বিনিময় হওয়া স্বীকৃত।
মোটকথা, খতম তারাবীর বিনিময়
গ্রহণের জন্য কোনো হীলা অবলম্বন
করলেও তা জায়েয হবে না। কারণ খতম
তারাবী খালেস একটি ইবাদত,
যা নামায-রোযার
মতো ইবাদতে মাকসূদার অন্তর্ভুক্ত।
আর এ ধরনের ইবাদতের বিনিময়
বা বেতন দেওয়া-
নেওয়া উম্মতে মুসলিমার ঐক্যমতের
ভিত্তিতে নাজায়েয।
এতে না কোনো মাযহাবের মতপার্থক্য
আছে, না পূর্ববর্তী ও
পরবর্তী ফকীহগণের
মাঝে কোনো মতভেদ আছে।
ইমামতির বেতন ঠিক
করা এবং তা আদায় করা যদিও
পরবর্তী ফকীহগণের দৃষ্টিতে জায়েয।
কিন্তু খতম তারাবীর
বিনিময়টা ইমামতির জন্য হয় না।
বরং তা মূলত কুরআন খতমের
বিনিময়ে হয়ে থাকে। আর তেলাওয়াতের
বিনিময় গ্রহণ করা সকল ফকীহের
নিকট হারাম। অধিকন্তু
পরবর্তী ফকীহগণ যে ইমামতির বেতন
জায়েয বলেছেন সেটা হল ফরয নামাযের
ইমামতি। সুন্নত নামাযের ইমামতি এর
অন্তর্ভুক্ত নয়।
আর হাফেযদের
দেওয়া বিনিময়কে জায়েয করার জন্য
এই হীলা অবলম্বন করা যে, শুধু রমযান
মাসের জন্য তার উপর দু এক ওয়াক্ত
নামাযের ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া হবে-
এটা একটা বাহানামাত্র। যা পরিহার
করা জরুরি। কারণ এই হীলার অর্থ হল
যে, এ বিনিময়টা তাকে ফরয নামাযের
ইমামতির জন্য দেওয়া হচ্ছে। আর
খতম তারাবী সে বিনিময়হীনভাবেই
করে দিচ্ছে। কিন্তু নিজের মনকে একটু
প্রশ্ন করে দেখুন, যদি ওই হাফেয
সাহেব তার দায়িত্বে অর্পিত ফরয
নামাযের ইমামতি যথাযথ গুরুত্বের
সাথেই আদায় করেন, কিন্তু খতম
তারাবীর ইমামতি না করেন
তবে কি তাকে ওই বিনিময় দেওয়া হত?
এ কথা সুস্পষ্ট যে,
কখনো তা দেওয়া হত না। বোঝা গেল,
বিনিময়টা মূলত খতম তারাবীর,
ফরযের ইমামতির নয়।
এজন্যই আকাবিরদের অনেকে এই
হীলা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর
দলিলের ভিত্তিতেও তাঁদের ফতওয়াই
সহীহ। দেখুন : ইমদাদুল
ফাতাওয়া ১/৩২২; ইমদাদুল আহকাম
১/৬৬৪
এ বিষয়ে কিছু হাদীস আছারের অনুবাদ
ও ফিকহের কিতাবের উদ্ধৃতি পেশ
করা হল।
১. আবদুর রহমান ইবনে শিবল রা.
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
তোমরা কুরআন পড়।
তবে তাতে বাড়াবাড়ি করো না। এর
প্রতি বিরূপ হয়ো না। কুরআনের
বিনিময় ভক্ষণ করো না এবং এর
দ্বারা সম্পদ কামনা করো না।-
মুসনাদে আহমদ ৩/৪২৮, হাদীস :
১৫৫২৯; মুসান্নাফ
ইবনে আবী শাইবা ৫/২৪০
২. ইমরান ইবনে হুসাইন রা.
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে,
তোমরা কুরআন পড় এবং আল্লাহ
তাআলার কাছে প্রার্থনা কর।
তোমাদের পরে এমন জাতি আসবে,
যারা কুরআন পড়ে মানুষের
কাছে প্রার্থনা করবে।-মুসনাদে আহমদ
৪/৪৩৭, হাদীস : ১৯৯১৭
৩. আবদুল্লাহ ইবনে মা’কিল রা.
থেকে বর্ণিত, তিনি এক
রমযানে লোকদের নিয়ে তারাবীহ
পড়লেন। এরপর ঈদের দিন উবাইদুল্লাহ
ইবনে যিয়াদ রাহ. তার কাছে এক
জোড়া কাপড় এবং পাঁচশ দিরহাম
পাঠালেন। তখন তিনি কাপড়
জোড়া এবং দিরহামগুলো এই বলে ফেরত
দিলেন যে, আমরা কুরআনের বিনিময়
গ্রহণ করি না।
-মুসান্নাফ
ইবনে আবী শাইবা ৫/২৩৭, হাদীস :
৭৮২১ আরো দেখুন :
ফাতাওয়া শামী ৬/৫৭; তানকীহুল
ফাতাওয়াল হামীদিয়া ২/১৩৭-১৩৮;
আলইখতিয়ার লিতালীল মুখতার
২/৬২; শিফাউল আলীল ওয়া বাল্লুল
গালীল (মাজমুআ রাসায়েল
ইবনে আবেদীন) ১/১৫৪-১৫৫;
ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩১৫-৩১৯;
রাফেউল ইশকালাত আনহুমাতিল
ইস্তিজার আলাত্তাআত,
মুফতীয়ে আযম হযরত
মাওলানা মুফতী ফয়যুল্লাহ রাহ.
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×