আজ ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়ার সমাবর্তন গুলশান পার্কে।সাউথ এশিয়ানদের কাছে পরিচিত গুলশান লাভ পার্কে এই সমাবর্তন অনুস্টিত হচ্ছে।যারা মাত্র গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি পেল তারা সুইট কাপল হয়ে হাতে হাত ধরে বসে আছে।আর যারা পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি পেল তারা তাদের পতি ও পত্নি নিয়ে এক হাতে গাড়ির চাবি আরেক হাতে মোমবাতি নিয়ে বসে আছে।
(দেখা যাচ্ছে গুলশান পার্কের মনোরম দৃশ্য)
এখন সেই সময় যার জন্য এত রাতের অপেক্ষা।দিন রাত এক করে দিয়ে যার জন্য বসে থাকা।শি ইজ নান আদার দেন শি ইজ পাওলি ধাম।
পাওলি তার সহজাত হাটার স্টাইলে হাটতে হাটতে স্টেজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।মাইক্রোফোনের কাছে গিয়েই শুরু করলেন…..
“আমি শুধুই তোমাদের জন্য সুদূর কলকাতা থেকে যশোরের রাস্তা দিয়ে বিমানযোগে উড়ে ব্রনানির দিকে ছুটে এসেছি।যখনই সাউথ এশিয়া থেকে মিস কল পেয়ে জেনেছি সমাবর্তনে আমাকে বক্তৃতা দিতে হবে তখনই ভেবেছি আমি এই দিনটার জন্যই জন্মেছিলাম।এখন ভারত গিয়ে শাহরুখ খান কে বলতে পারবো তোমার থেকে কুল ভার্সিটিতে গিয়ে আমি বক্তৃতা দিয়ে আসলাম।
(কিউট পাউলি)
তোমাদের উপদেশ দেয়ার কিছু নেই। পত্রিকায় তোমাদের বিজ্ঞাপন থেকেই বুজেছি এটা শুধু একটা শিক্ষাপ্রতিস্টান নয় এটা একটা মালটি প্রতিস্টান।প্রেম বিয়ে পরিবার পরিকল্পনা মোমের আলোয় বিরহ এগুলা যদি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে না শিখায় তাহলে কে শিখাবে!!ইউ গাইজ আর সো হট ওপস সরি ইউ গাইজ আর সো লাকি।আমার জীবনে কোন আফসুস ছিলনা এখন একটাই আফসুস কেন এত আগে জন্ম নিলাম কেন তোমাদের সাথে পড়তে পারলাম না।আমার দুর্ভাগ্য আমি কোন ডিগ্রি পাইনি তোমাদের এখান থেকে।তবে শুনেছি ১ বছরে ৩ টা ডিগ্রিও পাওয়া যায় সাউথ এশিয়া থেকে।অক্সফোর্ড হার্ভার্ড যেটা পারেনাই সেটা তোমরা পেরেছো।আমার অনেকবাসনা পূর্ণ হয়েছে জীবনে এখন সাউথ এশিয়ার একটা ডিগ্রি পেয়ে জীবনের শেষ বাসনা পূর্ণ করতে চাই। ব্লগে,ফেবুতে, পাড়ায় মহল্লায়, আম গাছের নিচে সব জায়গায় শুধু সাউথ এশিয়ার জয়গান।এর পিছনে অবশ্যই অনেক মানুষের দিন রাত এর মেহনত জড়িত।সেই লোকগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের নোবেল আর অস্কার ২টা পদক একসাথে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
তোমাদের এখানের যার সাথে আমার ফোনে কথা হয়েছিলো তার ভয়েজ সো সিডাক। ভার্সিটির অবস্থা তখনই উন্নতি হবে যখন শিক্ষক থেকে বেশি থাকবে বিজ্ঞাপনের লোক।কসকো সাবান কে শিক্ষকরা কসকো সাবানই বলবে কিন্তু যারা বিজ্ঞাপনে আছে তারা তাদের মেধা মনন দিয়ে প্রমান করে দিবে দেখতে কসকোর মত হলেও এটা আসলে লাক্স।তোমাদের সুন্দর মনোরম বিজ্ঞাপন দেখে যাদের চুলকানি প্রচুর বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের কথায় ভেঙ্গে পরবেনা।আমি কখনও ভেঙ্গে পড়িনি।আমি “কালবেলা” এর মত মুভি করেছি,মনের মানুষের মত মুভি করেছি কিন্তু কেউ আমার প্রতিভার দাম দেয়নি।যখনই ছত্রাক নামক মুভিতে ৪ মিনিটের একটা দুষ্ট দৃশ্য বের হল তখনই সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লো।আমার প্রতিভার দাম তারা দিচ্ছে আমার ঐ কাজটার পর।এখন আমি বলিউডেও মুভি পাচ্ছি।কয়েকদিন পর ব্যাংককেও পাবো আশা করি।দেখবে তোমাদের এই বিজ্ঞাপন তোমাদের জীবন বদলে দিবে।স্ক্যান্ডাল বের হলে ২দিন গালি শুনতে হয় কিন্তু বাকি জীবনই তোমাদের জন্য তালি অপেক্ষা করছে।বিশ্বাস না করার কোন উপায় নেই কারণ তোমাদের চোখের সামনে উদাহরণ এই প্রতিভাবান আমি!!
ক্লাস রুমে বিনোদন দরকার।দরকার মজায় মজায় শেখা।তোমাদের ক্লাস রুমের প্রজেক্টটারে নাকি আমার মুভিও দেখানো হয়।আমি এতটাই অভিভূত যে কিছুই বলার নেই।হাওড়াবাজার,সল্ট লেকে আমার যে মুভি চলেনা সেটা তোমাদের ক্লাস রুমে চলে।তোমাদের রুচি বোধ সিমপ্লি অচাম।জীবন থেকে শিক্ষার জন্য মুভির বিকল্প নেই।তোমরা বেশি বেশি মুভি দেখবে নিজেরাও একসময় মুভি বানাবে হয়তো আমিও তোমাদের মুভিতে অভিনয় করতে পারি কে জানে।
তোমাদের সুন্দর দীর্ঘ যৌবন জীবন কামনা করে আমি বিদায় নিচ্ছি আর বলে যাচ্ছি সমালোচনায় ডরেনা পাউলি,সমালোচনায় ডরাবেনা তোমরাও।”
(বাধ ভাঙ্গা উল্লাশ সাউথ এশিয়ানদের মাঝে)
হাততালির তুমুল শব্দে গুলশান বনানী প্রকম্পিত হচ্ছে।
সাউথ এশিয়ার মালিক ষ্টেজে উঠে আবেগ তাড়িত হয়ে গেল।বলা শুরু করলো
“তোমাদের হাত তালির শব্দই বলে দিচ্ছে একটা মানুষের ২ হাত থাকলেও তোমাদের ১০০ হাত।আর পাওলি ধামকে আমরা পরবর্তী ভিসি পদে নিয়ে আসার চেষ্টা করে যাবো”
এখন হাত তালিতে সমগ্র ঢাকা প্রকম্পিত আর সবার চোখে আনন্দ অশ্রু………..
তানভীর মাহমুদুল হাসান
১২/৮/২০১২