somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাসি খোদার এক অপার নেয়ামাত

১৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুরুর কথা,
আমরা তিন ভাই। আমাদের কোন বোন না থাকায় আব্বা আম্মা তাদের মেয়ের শখ মেটানোর জন্য আমার এক মামাতো বোনকে পালার জন্য নিয়ে আসে। নাম ছিল সুমাইয়া। আমার মামার সাথে মামীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় এবং মামীর অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সুমাইয়া খুব সমস্যায় পড়ে যায়। সবে টিপি টিপি পায়ে হাঁটতে শিখেছে। কিন্তু এই দুগ্ধ পোষ্য শিশুটির ব্যপারে সবাই খুবই বেরহম ছিল। তার নানা-নানী কোন যত্ন-আত্নি করতনা। একেবারে অসুস্থ অবস্থায় আমরা তাকে নিয়ে আসি। তারপর আমাদের সবার সীমাহীন আদর, ভালবাসা, আনন্দের মাঝে সুমাইয়ার বেড়ে উঠা। তিন ভাইয়ের মাঝে একটা প্রতিযোগিতা হত যে ও কাকে বেশী ভালবাসে। আমরা একেক সময় একেক জিনিষ নিয়ে এসে ওকে দিতাম আর আমাদের পক্ষে আনার চেষ্টা করতাম। আমাদের আদর পেয়ে ও এটা ওটা ভেঙ্গে ফেলত । তখন মেজাজাটা খারাপ হয়ে যেত। ধমক দিতাম। কিন্তু তার প্রতিক্রিয়া কি ছিল জানেন? সে ধমকের বদলে সুন্দর করে একটা হাসি দিত। ব্যস আর রাগ থাকে কি করে। অবশেষে আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে যায় ওর নানা। এর জন্য আইনি ভাবে চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। এখন মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসে সুমাইয়া। বেশ বড় হয়ে গেছে।
আবার আমার দেড় বছরের ছোট চাচ্চুটি সকাল সকাল উঠে এসে বিছানার পাশে দাড়িয়ে মুখে চিমটি কাটতে থাকে। ঘুম ভেঙ্গে যখন চোখ গরম করে তাকাই, তখন এত সুন্দর করে একটা হাসি দিবে যে একটা আদর করা ছাড়া কোন উপায় থাকেনা। আবার যখন তার কোলে উঠার শখ তখন সামনে এসে এত সুন্দর করে হাসতে থাকবে যে শত ব্যস্ততার মাঝেও মিয়া সাহেবকে কোলে নিতে হয়।
এইতো গেল ছোট দেড় কথা। এবার আসি তার চেয়ে বড় অর্থাৎ কিশোরদের কথা। জুতা কিনতে গেলাম Hush Puppies এ। জুতা দেখছিলাম এমন সময় একটি ছেলে এসে বিভিন্ন জুতা দেখাচ্ছিল। একটা জুতা দেখাল দাম সাড়ে ছয় হাজার টাকা। সে এত সুন্দর করে হাসছিল, আর বলছিল স্যার আপনাকে ভাল মানাবে। এটা বলে আমাকে এক প্রকার জোর করে পরিয়ে দিল। তার হাসিময় আবেদনকে ফেলে দিতে পারিনি। সাড়ে ছয় হাজার টাকার এক বিশাল ব্যম্ব খেয়ে জুতা নিয়েই ফিরতে হয়েছে।
আরেকটি ছোট ঘটনা বলি। খুলনা শহরে যাব। ছোট অনেক গুলো বেবী ট্যাক্সি দাড়িয়ে আছে। আমরা দুজন। একটা ট্যাক্সি দুজনের জন্য দাড়িয়ে আছে। কিন্তু আরেকজন খালি ট্যাক্সি নিয়ে এত সুন্দর করে হেঁসে হেঁসে আমাদেরকে ডাকছিল যে বাধ্য হয়ে ওই খালি ট্যাক্সিতে উঠে পড়লাম।
এই হচ্ছে হাসির জাদু। আপনার প্রিয়তমা বা প্রিয়তম কিন্তু এই হাসি দিয়ে আপনাকে কাইত করে দিতে পারে। দুই বন্ধু ঝগড়া করছেন। একজন একটু হেঁসে দিননা। দেখুন ঝগড়া শেষ। আবার কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করে ফেলেছেন। মুচকি হেঁসে স্যরি বলুন। সব শেষ।
হাসি ভদ্রতা,সৌজন্যের প্রতীক। হাসিময় চেহারা দিয়ে আপনি সবাইকে আকর্ষন করতে পারেন। কাউকে কোন কিছুর জন্য বলবেন। অনুরোধের সাথে একটু মুচকি হাসুন। আবার কারো কোন ব্যপার বিরক্তিকর মনে হলে, সুন্দর করে একটা হাসি দিয়ে বুঝিয়ে বলুন। কাজ হবেনা আবার ।কারো কটু কথা বা অপমানের জবাব টা হাসি দিয়েই দিয়ে দিননা। তবেই না আপনি বীর। তাবাসসুমতা লিআখিকা, সাদাকাহ।
এই হাসির কিন্তু কিছু নিয়ম কানুন আছে। যেমন, হযরত আয়শা (রা)হতে বর্ণিত।তিনি বলেন আমি নবি কারিম (সা)কে এমন ভাবে অট্রহাসি অবস্থায় দেখিনি যাতে তার জিহ্বার মূল অংশদেখা যায়;বরং তিনি কেবল মুচকি হাসতেন।
সুন্দর হাসি আপনার চলার পথের অনেক বড় পাথেয় হতে পারে। হাসি একটি মরনাস্ত্র। এটি আপনাকে দৈনন্দিন জীবনে সফল করে তুলবে নিঃসন্দেহে। আপনার মরনাস্ত্র প্রস্তুত তো?
ফলো মি অন ফেসবুক,
http://www.facebook.com/naemce10?ref=tn_tnmn

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×