কঠিন কঠিন সব শব্দ চয়ন
কঠিন সব কথার বাঁধন
আমি চাপা পড়ে যাচ্ছি কবিতার অথৈ না জানা সব শব্দ-জালে
আমার কথামালাগুলো যেন আজ কেমন নিজের কাছেই দুর্বোধ্য হয়ে ঠেকে।
বাংলা ডিকশনারির সব কঠিন শব্দমালা দিয়ে রচিত কবিতা-রাশি
যেন আমায় কোষ্ঠকাঠিন্যের বোধ জাগায় মনে
পেটের মাঝে সব গুড়গুড় করে কেমন জানি পাক দিয়ে ওঠে
কলমের কালিতে বমি করে দিয়ে মুক্ত করি অজড় যাতনা যত।
ফাগুন রোদ ভেঙ্গে উড়ে আসা অনঙ্গ মেঘের রাশি যেন
হৃদয়ের বাঁকে বাঁকে অশ্রুর সঘন জলধারা
কিংবা শরতের ধবল মেঘের রোদ চিড়ে এসে ছিবড়ে করে দিচ্ছে
বিপন্ন বিস্ময়ে কম্পমান পারিজাত, লুটিয়ে পড়ছে ধরাতলে অবিরত।
নিজের মাঝেই আজ কুট কোলাহলে অরণি ঘষে জ্বেলে যাচ্ছি অর্ঘ্য অনল
অনিকেত মৌনতায় কাকুত্স্হ চেয়ে থাকে, কাক-চোখে পড়েনা তার ছায়া
আজ আমার মাঝে কোন ভাবের বোধোদয় উজ্জীবিত করতে পারে না
যেন কবিতার তোষামোদে নিমগ্ন হয়ে রতিক্রিয়ার রত এক লম্পটের কায়া।
প্রসাধন চর্চিত ঠোঁটে ক্যান্ডেল লাইটে ডিনারে কামুক আহ্বান
বাঁকা ঠোটের প্রগলভতায় কৌমার্যের সতিচ্ছেদের হাতছানি ডাক
অরণ্যক বোধের বেদনার কালরাত্রি ডাকছে যেন
লুটে নিতে রজঃস্বলা নারীর সুখ দুঃখের যবনিকাপাত।
ভূমন্ডলের তারকারাজির ব্যাকুল নিস্প্রাণ আঁখি পল্লব
চেয়ে থাকে আজ আমার দিকে অশ্রুসিক্ত চোখে
কি এক অজ্ঞাত যাতনা প্রসব করে যাচ্ছে আমার কালি ও কলমে
যেন কাব্য-চোষা সৃষ্টিশীল ভালোবাসার আত্মাহুতি দেবে বলে।
এ কেমন কবিতা প্রসব করে যাচ্ছি আমি দিনের পর দিন
এ আমার কেমন কবিতা যেখানে লেখার মাঝে ভেসে আসছে এক নোংরা গন্ধ
প্রবল এক ঘিনঘিনে অনুভূতি যেন শরীরের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাচ্ছে
যেন লিখে যাচ্ছি সব মন ময়ূরের নৃপ নীহারিকার পেখম-তোলা নাচের ইতিবৃত্ত।
আমিতো এমন কবিতা লিখতে চাই নি
এ কেমন এক বোধের বিভীষণ ভর করে এসেছে আমার কালি ও কলমে
বড্ড ক্লান্ত বিধ্বস্ত মনে হচ্ছে যেন আজ নিজেকে
কবির সতীত্বের অগ্নি পরীক্ষায় আজ পরাজিত আমি
তবু এক রক্ত মাংসের মানুষরূপী অসহায় জীব যেন
লেখার মাঝে নিজেই করেছি নিজের বস্রহরণ
কিংবা কবিতার সতীত্ব হরণ
আমি জানি একদিন এর মূল্য পরিশোধ করতে হবে আমাকেই
এ ভুবনে কিংবা অন্য কোন ভুবনে
বেদনার লোনাজলে ভেসে
যেদিন তোমরা একে একে ছেড়ে চলে যাবে আমাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:৩৪