somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাটক সপ্নের শহর/ঘরে ফেরা/মন বাড়ি

১০ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিদিনই বাড়ছে ঢাকা শহরের মানুষ। তবে বেশি বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষ, বেশি উপার্জনের আশায় ভিটা, মাটি ছেড়ে কঠিন বাস্তবতার মধ্যে পড়ে যায় তারা। দেরি হলেও বুঝতে পারে এ শহর তাদের নয়। অনেকেই ফিরে যায় আবার অনেকেরই ফিরে যাবার জায়গা থাকে না। এই নিয়েই নাটকের কাহিনী গড়ে উঠেছে..

আমার কয়েকজন বিটিভি কেন্দ্রীক প্রোযোজক বন্ধু আছে হঠাৎ হঠাৎ স্ক্রিপ্ট চায় আমিও সমসায়িক সমস্যা নিয়ে নাটক লিখে দেই। বেশির ভাগই দেখা যায় বিটিভির বাজেট নীতির কারনে আলোর মুখ দেখে না। যদিও আামর লেখা স্রোতীর যুদ্ধ নামক নাটকটি গত বছর স্বাধীনতা দিবসে প্রচার হয়েছিলো। এ নাটকটিও আামার এক প্রোযোজক বন্ধুর অনুরোধে লেখা, বিটিভিতে সিনোপসিস জমা দেয়া আছে তবে সে এখনো কিছুই জানায়নি।

আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম

কাহিনী সংক্ষেপ

মূলত নদী ভাঙ্গন প্রবল একটি গ্রামের কয়েকটি পরিবারের মানুষের নানা কাহিনী নিয়ে গল্প গড়ে উঠছে। গ্রামের একটি পরিবার ঢাকাতে গিয়ে শ্রমের কাজ করলেও গ্রামে তারা ফিটফাট হয়ে আসে। ঢাকার নানা সুযোগ সুবিধার কথা প্রচার করে। এতে আসে পাশের দরিদ্র শিক্ষিত পরিবারগুলোর মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়। সবাই ঢাকা যাবে টাকা উপার্জন করবে উদ্যেগ নেয়।

ঢাকায় দু’জন গিয়ে ওদের ফোন দেয় কিন্তু ওরা ধরা খেয়ে যাবে ভেবে সুকৌশলে এড়িয়ে যায়।এভাবেই গ্রাম থেকে আসা গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো বুঝতে পারে শহরটা ওরা যেভাবে সহজ বুঝিয়েছিল অতটা সহজ নয়। শহরের মানুষগুলো ইট পাথরের শক্ত দালানের মত মনটাও শক্ত। নানা প্রতিকুলতার সম্মুখ হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকায় যে কস্ট তার চেয়ে এই কস্ট গ্রামে গিয়ে করলে অন্তত দুবেলা ভালোভাবে খাবার পাওয়া যাবে, নিজের পৈতিৃক বাড়িতে শেষ নিঃস্বাশটা ত্যাগ করা যাবে।

চরিত্র
মিলি - নায়িকা
শফিক- নায়ক
কুদ্দুস-
মজিদ-
দুলাল-
মিলির বাবা- রহমত মিয়া
মিলির মা-সুফিয়া
মিলির ছোট ভাই - ১০ বছরের
শফিকের বাবা-
শফিকের মা
শফিকের ছোট বোন
মজনু- নতুন হিরো
গ্রাম্য মাতবর-

১ম দৃশ্য : ভোর মহাখালী বাস স্ট্যান্ড কুদ্দুস, মজিদ, দুলাল বাসের ছাদ থেকে নামছে। কারো হাতে মুরগি, কারো হাতে লাউ, কুমড়া একজনের হাতে ব্যাগ।
প্রপস : চারটা মুরগি, তিনটি লাউ, দুইটা কুমড়া, একটা ট্রাভেল ব্যাগ, তিন জনই লুঙ্গি পড়া, চকচকে শার্ট।
মজিদ : আচ্ছা অহন আমরা কই যামু?
কুদ্দুস : কই যামু মানে? দেহস না ঢাকা শহর আইসা পড়ছি।
দুলাল :এইডা হইল তাইলে ঢাহা শহর তয় টিপিতে যে শাপলা, দোয়েল পক্ষি, মূর্তী দেখছিলাম।
কুদ্দুস : আরে আমরা তো এহনও বাসস্ট্যান্ড আসল ঢাকা শহরতো আসিই নাই।
মজিদ :তো হেইডা ক
দুলাল : আইচ্ছা তুইতো আগে ঢাহা শহর আইছিলি, তুইতো সবই চিনস
কুদ্দুস : মেলা আগে মামুর লগে আইছিলাম তয় এত মানুষ দেহি নাই।
মজিদ : ঐ তোরা কি বকবক করবি নাকি যাবি
কুদ্দুস : চল চল ঐ বাসে যাই।
ওদের সামনে একটি লোকাল বাস আসবে ওরা চলে যাবে শর্ট শেষ।

২য় দৃশ্য : কাওরান বাজারে কুদ্দুস, মজিদ, দুলাল বসে মুরগি, লাউ ও কুমড়া বিক্রি করছে।

কুদ্দুস : এক্কেবাড়ি ডেঙ্গি মুরগি, খাইতে হেভি স্বাদ পাইবেন, লইয়া যান।
মজিদ : কচি লাউ, রাইতে কাইট্টা আনছি, এক্কেরে কচি।
দুলাল : পাকা কুমড়া, ভিতরে হলুদ ভাজা খাইতে হেব্বি মজা

বাজারে বিক্রির দৃশ্য, বিক্রির পর টাকা গুনছে (ক্লোজ শর্ট)

কুদ্দুস : ঢাহা শহর এত সহজ যায়গা না, এত অল্প টাকায় কিভাবে চলবে। মজিদ তোরে আরো মুরগি লইতে কইছিলাম।
মজিদ : আমি তো তোদের দিচ্ছিলামই কিন্তু বুড়িটা উঠল, উহ পায়ে ব্যথা (ফ্লাস ব্যাকে মুরগি চুরির দৃশ্য) মজিদ একটা একটা মুরগি বের করছে আর ওদের দু’জনকে দিচ্ছে।

কুদ্দুস : কিরে দে দিচ্ছিস না কেন।
মজিদ : এই নে। (ঘর থেকে এক বুড়ি বের হবে কেরে আমার মুরগির খোয়ারের কাছে কেরে) এই গোলাম আলি, মোকছেদ দেখতো কে)
দুলাল : তারাতারি পালা ধরা খাইলে বাচোন নাই। ( সবাই দৌড় দিবে মজিদ গাছের সাথে বারি খেয়ে মারে বাবারে বলে কোকাতে থাকে। সবাই এস ওকে নিয়ে যাবে।
মজিদ : উহ্ ব্যাথাটা এখনো কমেনি।
দুলাল : চল যাবি না, সরিলডা ম্যাজ ম্যাজ করছে।
মজিদ : কোথায় যাবি?
কুদ্দুস : চিন্তা করিস না, আমার মায়ের এক চাচাতো বোন মানে আমার এক খালা মগবাজার রেলগেট বস্তিতে থাকে ওখানে না হয় গিয়ে দেখি কি বলিস?
দুলাল : চল গিয়ে দেখি।

৩য় দৃশ : বাঁচা মরা গ্রাম, মিলিদের ঘর মিলির বাবা, মা, ছোট বোন

রহমত মিয়া : দেখছো ছগির মিয়ার পোলার কান্ড, ঢাকার শহর গিয়াই ছারলো। এইডারে কয় বাপের ব্যাটা। আহারে আমার একটা পোলা থাকলে কামাই কইরা খাওয়াইতো
মিলি : বাপজান কুদ্দুসের মত পোলা খুব ভালো পোলা তাই না। সারা দিন চুরি ছেচরামি করে গ্রামটা ছাড়খার করে দিত মনে নেই
রহমত মিয়া : না মানে..
মিলি :কিছুদিন আগে রাস্তার ধারে আমায় বিয়ের প্রস্তাব দিল, তোমাকে এসে বললাম কৈ তখনতো বললে কুদ্দুস খারাপ ছেলে। এখন আবার...
সুফিয়া : কি ব্যপার বাবা মেয়ে ঝগড়া কেন?
মিলি : মা দেখো না বাবা উল্টা পাল্টা বকছে। ( মিলি, মিলির ছোট বোনকে নিয়ে প্রস্থান)
রহমত মিয়া : ঝগড়া করি স্বাদে, শরীরে আজকাল বল পাই না। কাম না পাইলে সংসার চলবো কি কইরা?
সুফিয়া : ঢাকায় হুনছি মাইয়ারা গার্মেন্টেসে কাম করে ভালো টেহাই কামায়।
রহমত মিয়া : নাহ্ আমার মাইয়ারে গার্মেন্টেসে কাম করতে দিমু না।
সুফিয়া : তুমি ঐ এক মুখে কয় কথা কও, এই কইলা গায় বল পাও না কামাই বন্ধ হইয়া যাইবো, আবার মাইয়ারে কাম করতেও দিবা না।
রহমত : নাহ্ আমার মাইয়ারে পড়ালেহা করাইয়া জজ ব্যারিস্টার বানামু?
সুফিয়া : আপনে যে কি কন না, মাথা টাথা খারাপ হইয়া গেলো কিনা? ( সুফিয়ার প্রস্থান)



৪র্থ দৃশ্য : মগ বাজার বস্তি ফুলজান খালার ঘরের সামনে কুদ্দুস, মজিদ, দুলাল খালা, খালা বলে ডাক দেবে মোটা মতন এক মহিলা বের হবে কুদ্দুস খালা বলে পায়ে জড়িয়ে ধরবে মহিলা পা সরিয়ে বলবে আমি রাহেলা, কুদ্দুস লজ্জা পাবে, ফুলজান খালা বের হয়ে আসবে।

ফুলজান : কেঠায় কেঠায়রে চিল্লা চিল্লি করে, ঐ তোরা কারা
কুদ্দুস ওহ্ খালা আমি কুদ্দুস
ফুলজান : কদ্দুস ফুদ্দুস আবার কেঠা কোন জনমের আত্বীয়
কুদ্দুস : ফুলজান খালা তুমি আমারে চিন নাই, আমি তোমার চাচাতো বইন রাহেলার পোলা কুদ্দুস
ফুলজান : রাহেলার পোলা কুদ্দুস, আবে হেই ছোট কালে দেখছিলাম, মগর এত বড় হইয়া গেছস চিনবার পারিনাইক্কা। তয় হেরা কারা।
কুদ্দুস : আমার গ্রামের লোক
ফুলজান : যাওকগা, মূখটা শুকাইয়া গেছে চল খাবি।

৫ম দৃশ : শফিক, মিলি, শফিক গ্রামের ক্ষেতে কাজ করছে, হঠাৎ কল্পনায় শহর দেখতে পায়। সে হাটছে শহরটা তার খুব ভালো লাগছে। মিলি ধাক্কা দিয়ে সপ্ন ভাঙ্গায়

মিলি : ধাক্কা দিয়ে, কি ব্যাপার কাজ রাইখা কি ভাবতাছো?
শফিকঃ দিলাতো সপ্নডা ভাইঙ্গা
মিলি : তুমি দিবা সপ্ন দেখো আর অন্যরা যে ঢাকা শহর গিয়া চাকুরী করতাছে..
শফিকঃ তয় আমি কি করুম
মিলি : কি করুম মানে ঐ তুমি কি পুরুষ মানুষ না।
শফিক : ঢাকা শহর গেলেই কি সবাই পুরুষ মানুষ হইয়া যায়।
মিলিঃ হ হইয়া যায়,কুদ্দুস মজিদ, দুলালগো মত লোক যদি ঢাকা শহর গিয়া চাকুরী করে
শফিক : আমি এই গ্রাম ছাইরা কোথাও যামু না, গ্রাম আমার সব।
মিলি : থাকো তোমার গ্রাম নিয়ে, কুদ্দুস আইসা আমারে বিয়া কইরা নিয়া যাইতে আসতাছে।
শফিক : মিলি
মিলি : হ এইডাও হুইনা রাখো কুদ্দুস শুধু বিয়াই করবনা আমারে গার্মেন্টেসেও চাকুরী দিয়া দিব। মিলির প্রস্থান শফিক মিলির চলে যাওয়া দেখবে, কাচি দিয়ে ক্ষেতে জোরে বারি দিবে

চলবে.....
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:৪৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×