somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রীক উপাখ্যান- ইলিয়াড

০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রীকদের দেবতা স্বর্গের রাজা জিউস।একদিন এক ভোজসভায় সমস্ত দেব দেবীকে তিনি নিমন্ত্রন করলেন। কিন্তু বাদ পড়লেন একজন। তিনি হচ্ছেন অশান্তির দেবী। অশান্তি দেবী খুন্ন হলেন।আড়াল থেকে দেবতাদের সভায় তিনি একটি সোনার আপেল ফেলে দিলেন, আর আপেলটির গাঁয়ে লিখে দিলেন ‘সবার চেয়ে যে সুন্দরী এ আপেলটি তার জন্য।‘
এখন দেবীদের মধ্যে ছিলেন তিনজন পরমা সুন্দরী- হীরা, অ্যাথিনি আর আফ্রোদিতি। তিনজন ই দাবি করলেন আপেলটি। শেষে যখন নিজেদের মধ্যে মিমাংসা হল না তখন তারা নেমে এলেন পৃথিবীতে। ট্রয় এর রাজপুত্র প্যারিস- পরম সুন্দর পুরুষ বলে তার অসম্ভব খ্যাতি। পাহাড়ের উপর বসে তিনি পিতার মেষ পাহারা দিচ্ছিলেন। তিন দেবী এসে বিচারের ভার দিলেন তার উপর।
কিন্তু সেই সঙ্গে তিনজন ই নানা রকম লোভ দেখাতে ছারলেন না। হীরা দেব্রাজ জিউস এর পত্নী, তিনি লোভ দেখালেন ক্ষমতার। অ্যাথিনি লোভ দেখালেন জ্ঞান ও বিদ্যার। আর অ্যাফ্রদিতি? তিনি লোভ দেখালেন ভালবাসার। বললেন, “ ক্ষমতা আর বিদ্যা দিয়ে কি হবে প্যারিস, আমাকে যদি তুমি সব সেরা সুন্দরী মেনে নিয়ে আপেলটি দাও তা হলে আমি পৃথিবীর সব সেরা সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে তোমার বিয়ে দেব।“
প্যারিস আর দ্বিরুক্তি না করে অ্যাফ্রদিতি কেই দিয়ে দিলো আপেলটি। ফলে আফ্রদাইত যেমন তার উপর খুশি হলেন তেমনি দুজন গেলেন ভীষণ রেগে গেলো। তারা ঠিক করলেন প্যারিসকে এর শাস্তি দিতে হবে।
গ্রীস দেশে স্পার্টা রাজ্য, তার রাজা মেনেলাস। তার স্ত্রী হেলেন ছিলেন তখন পৃথিবীর সেরা সুন্দরী। আফ্রদাইত এর চক্রান্তে প্যারিস স্পার্টা রাজের অতিথি হলেন, তারপর একদিন সুযোগ বুঝে হেলেন কে নিয়ে পালিয়ে এলেন নিজের দেশ ট্রয় এ।
গ্রীকরা এ অপমান সহ্য করতে রাজি হল না। মেনেলাসের দাদা আগামেমনন ছিলেন গ্রীসের সম্রাট। তিনি গ্রীসের সমস্ত রাজাদের একত্র করলেন। সদলবলে ট্রয় আক্রমন করলো গ্রীকরা। অবরোধ করে রাখল প্রাচীর ঘেরা শহর।
শুরু হল যুদ্ধ। বিখ্যাত ট্রয় যুদ্ধ। এই নিয়েই লেখা হোমারের ইলিয়াড কাব্য। ট্রয় এর আরেক নাম ইলিয়াম। ট্রয় এর অধিবাসীদের বলা হত ট্রোজান। দশ বছর ধরে যুদ্ধ চলল। হাজার হাজার গ্রীক ও ট্রোজান নিহত হল। তাদের মধ্যে ট্রোজানদের বীর সেনাপতি হেকটর এবং গ্রীক দের শ্রেষ্ঠ বীর অ্যাকিলিসও ছিল। কিন্তু জয় পরাজয় নিস্পত্তি হল না। তারপর হঠাত একদিন গ্রীকরা লড়াই ছেড়ে দিয়ে দেশে ফেরার জন্য জাহাজে গিয়ে উঠলো। নগরের বাইরে যুদ্ধের মাঠে পড়ে রইলো একটা প্রকাণ্ড কাঠের ঘোড়া।
ট্রোজানরা ভাবল গ্রীকরা বুঝি ঘোড়া ফেলে পালিয়েছে। বিজয়ের নিশান হিসেবে মহা সমারোহে তারা সেটা তেনে নিয়ে এলো শহরের মধ্যে।
আসলে সেটাই ছিল গ্রীকদের একটা কৌশল। ওই বিরাট কাঠের ঘোড়াটা এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে তার পেটটা ছিল ফাঁপা আর তার মধ্যে লুকিয়ে ছিল বাছাই করা যত গ্রীক সৈন্য। রাত দুপুরে যখন সমস্ত ট্রোজানরা উতসব কোলাহলে মত্ত, তখন ওই গ্রীক সৈন্যরা চুপি চুপি ঘোড়ার ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে নগরের ফটক খুলে দিলো।
অন্য গ্রীক সৈন্যরা সত্যি সত্যি জাহাজে চড়ে পালায় নি, তারা কাছে পিছেই লুকিয়ে ছিল। ফটক খুলতেই তারা দলে দলে নগরের মধ্যে ঢুকে পড়লো।
তারপর?? তারপর আর কি, শুরু হল হত্যাকাণ্ড, লুটপাট। আগুন জ্বালিয়ে সমস্ত শহর পুরিয়ে ধ্বংস করে দিলো তারা।
এইভাবে শেষ হল দশ বছরের ট্রয় যুদ্ধ। হেলেনকে উদ্ধার করে গ্রীকরা ফিরে এলো নিজেদের দেশে।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×