somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বাবা কাজী সামছুজ্জামানের কাহিনী (শামছু কাহিনী)

০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বরিশাল অঞ্চলে শামছু নামের আধিক্য ছিল এক সময়। এই নামকরণের পেছনের রহস্যটা কি- তা আমার অনেক গবেষণাতেও উদ্ধার হয়নি। আমার বাবার নাম কাজী সামছুজ্জামান। তার নামটি আমার দাদা নাকি আমার দাদী রেখেছিলেন-আর কেনইবা রেখেছিলেন- আমি জানা হয়নি। কারণ দাদাকে আমার মা নিজেই দেখেননি। আর দাদী মারা গেলেন তখন আমি দুনিয়ার এতকিছু জটিল বিষয়াদিও বুঝে উঠতে পারিনি। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
তবে বরিশালের এত শামছু নিয়ে বিপদে পড়েছিলেন গাজী শামছুর রহমান। এই লোকটাকে আমি ছোটবেলায় দেখতাম টেলিভিশনে। চোখ বুঝে উনি বাঙ্গালীকে আইনি শেখাতেন। উনি বাংলায় আইনের বই লিখে রেখে না গেলেও টেলিভিশনে চোখ বুজে কথা বলার কারনেই বিখ্যাত হতে পারতেন। তার নাম বিশ্বরেকর্ড হতে পারতো। কিন্তু বাংলায় আইন আর আইনের ভাষ্য লিখে তিনি বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে এক বিশাল মহীরুহ গাজী শামছুর রহমান। তিনি তখন যুবক। মাত্র আইন ব্যবসা শুরু করেছেন। হাতে তেমন কোন মামলা নেই। যেখানেই মামলা পান ছুটে যান। এমন সময় একটি মামলা পেলেন বরিশালে। তার মক্কেলের নাম শামসুর রহমান। এতে তিনি কিছু মনে করেননি। মামলার আসামীর নাম তিনি প্রথম খতিয়ে দেখেননি। তবে আদালতে গিয়ে দেখনে আসামীর নামও শামছু। এবার তিনি মনে মনে ক্ষুণ্ণ হলেন। কারণ হারামজাদা পেশকার শামছু বলে বারবার ডাক দিচ্ছেন। আগে জানলে এ মামলা তিনি নিতেন না। পরে আসামী পক্ষের উকিল আসলেন একজন। তার নামও শামছুর রহমান। একজন সাক্ষীও জুটলো তার নামও শামছু। শুধু আগে পিছে একটু পার্থক্য। কিন্তু ডাকার সময় তাদের নাম সামছুই। নিজের নাম নিয়ে এভাবেই একটি তিক্ত অভিজ্ঞতায় পড়েছিলেন তিনি। বরিশাল থেকে লঞ্চে ফেরার পথে প্রতিজ্ঞা করেন - তিনি যে ঘটনার শিকার হলেন তা যেন তার সন্তানদের মুখোমুখি হতে না হয়। এ কারণেই তার সকল সন্তানের আনকমন নাম রাখলেন। তাদের একজন বিখ্যাত পানি বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত। যতদুর মনে পড়ে এ ঘটনাটি আইনুন নিশাত স্যারই আমাকে শুনিয়েছিলেন।
বি: দ্র: আগেই বলেছি আমার বাবার নাম কাজী সামছুজ্জামান। তিনি জীবনেও কোন মামলা করেননি। কিন্তু বরিশালের শামছু আর তিনি আদালতে যাবেননা এটা কেমন করে হয়? বিধির বামে একজন ব্যক্তি বারবার তার গাছ কেটে নিচ্ছিলেন। আমি তখন সাংবাদিক। রক্ত গরম। দেশের বড় বড় ব্যক্তিকেই ঝাড়ি মারি। আর ওই গাছ কর্তনকারী স্কুলের শিক্ষক আবার কোন ছার! আবারও একটি গাছ কাটলেন একই ব্যক্তি। আর যায় কোথায়? আমার বাবাকে বললাম মামলা করুন। তিনি যা উত্তর দিলেন, তা যদি এখানে লিখি তাহলে আমার সরকারী চাকুরীটা হাইকোর্টের কারণে এক ফুৎকারে উড়ে যাবে নি:সন্দেহে। কিন্তু পরের কথাগুলো হলো- আমাদের গোষ্ঠিতে আর কিছু না থাক নাম আর রক্তের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। নামের আগে কাজী আর শেষে জামান। যেমন আমার নাম কাজী সায়েমুজ্জামান, বাবা কাজী সামছুজ্জামান, দাদা কাজী আনোয়ারুজ্জামান, তার বাবা কাজী ছাদেরুজ্জামান, তার বাবা কাজী নুরুজ্জামান। পাঠকের বিরক্তি হবে বলে তার দাদার নাম না লিখলেও এ কথা বলার লোভ সামলাতে পারছিনা যে- এভাবে নামের আগে কাজী আর শেষে জামান যোগ করে উর্ধ্বে চারশ বছর যাওয়া যায়। আমি এ দেশে আর কোন পরিবার দেখিনি। এদের কোন কাজী জামানই জীবনে মামলা করেননি। আমার বাবার সেই বংশ মর্যাদার কাবাব করে তাকে বাদী করে জোর করেই ২০১০ সালে একটি গাছ কাটার মামলা করিয়েছিলাম। যদিও আজ পর্যন্ত ওই মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়াতো দূরের কথা অভিযোগই গঠন হয়িনি। ইতোমধ্যেই কয়েকটি গাছের টাকার শ্রাদ্ধ হয়েছে। আসামী জামিন নিয়ে বহাল তবিয়তে। আমার বিসিএস প্রশাসনে চাকুরী না হলে এতদিনে বাকী গাছগুলো যে তার ঘরের খুটি হতো তা আমি বাজী ধরে বলতে পারি। কারণ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়ার মেয়াদ দেড় বছর হলেও এখনো অভিযোগই গঠন হয়নি। মামলার নথিতে পেশকার সাহেব ! কাহিনী লিখেন আর পরবর্তী তারিখের নিচে সাক্ষর দিয়েই কর্ম শেষ করেন ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব। একবার ঘটনা হয়েছিল কি! পেশকার লিখলেন, আসামী ছুটিতে ম্যাজিষ্ট্রেট জেলখানায়। পরবর্তী তারিখ অমুখ। ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব তার নিচেই সাক্ষর করে দিয়েছিলেন।
যাই হোক আমার লক্ষ্য একেবারেই কারো কোন ভুল ধরার জন্য নয়। আমি যেটা বলতে এসেছি আমার বাবা কাজী সামছুজ্জামানের মামলার আসামীর নামও শামছুল হক। :P
বিশ্বাস না হয় এই লিংকটি দেখুন। গাছ কাটার খবরটি বেশ কয়েকটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার লিংক...
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:৪৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরাধের সেকাল ও একাল

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

সেকাল
--------------------------------------------------------
স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা হেনরি বেভারিজ ছিলেন বৃটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের একজন সদস্য৷বেভারিজ ১৮৭০ সালের মার্চ হতে ১৮৭১ সালের মার্চ এবং ১৮৭১ সালের জুন থেকে ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×