সম্পর্কগুলো মিঁইয়ে যাচ্ছে।বাবুই পাখির বাসার মতো তিলে তিলে গড়া সম্পর্কগুলো গরম পানিতে ছেড়ে দেওয়া ম্যাগী নুডলস এর মত ফুলে ফেঁপে সরে সরে যাচ্ছে পরস্পর পরস্পর থেকে।দিকভ্রান্ত দলছুট অতিথি পাখির মতো এদিক ওদিক খুঁজে বেড়াচ্ছি পরিচিতজন,কাছের মানুষগুলোকে।প্রতিটি বিকেল কি অসম্ভব বিষন্ন,প্রতিটি সকাল কি তীব্র নিঃসঙ্গ।মনখারাপ করা সুখকর স্মৃতিগুলো এতো তীক্ষ্ন কেন?হৃদপিন্ডের এপাশ ওপাশ রক্তাক্ত করেও কেন চোরা বিষাদগুলো দ্রবীভূত হয় না?প্রিয় গানগুলো এখন আর শুনতে পারি না।শুনলেই প্রাসঙ্গিক স্মৃতিগুলো মনে পড়ে যায়।দুঃখগুলো মাঝে মাঝে ক্ষোভ হয়ে যায়,তারপর এক আকাশ হতাশা এসে ক্ষোভগুলোকে আবার দুঃখ বানিয়ে চলে যায়।প্রত্যেকটা রাত আমি গুনে গুনে পাড়ি দিচ্ছি।দ্রুত নিজেকে শামুক বানাচ্ছি।শামুকদের যে এত কষ্ট কখনো বুঝিনি।না পারি নিজেকে মেলে ধরতে,না পারি নিজেকে পুরোপুরি আড়াল করতে।অথচ এমনটা চাইনি।এমনটা হবার কথাও ছিলো না।নিজের নিউরনগুলোর মিথ্যে সংকেতে আজ আমি পোড়াবাড়ির একমাত্র জীবিত প্রানি।কাগজ দিয়ে বানানো নৌকোয় পাড়ি দিতে চেয়েছিলাম ইয়া বড় একটা সমুদ্র।বিন্দু হতে চাইনি,পরিধি জুড়ে দস্যিপনাও চাইনি।চেয়েছিলাম শুধু দশমিকের শেষ চার অংক হতে।আমি এখন খুব যুক্তিবাদি হতে শিখেছি।আমি এখন জানি,দশমিকের পরের সংখ্যাগুলো অগ্রাহ্য।পূর্নাঙ্গ সংখ্যা হতে পারিনি।
একেকটা সিগারেটে কতগুলো ঠোঁটের ছোঁয়া থাকতো।একেকটা আসরে কত কত খুঁনসুটি আর কোরাশ তরঙ্গ হয়ে হারিয়ে যেতো বাতাসে।শুনেছি কোন তরঙ্গই নাকি হারিয়ে যায় না।মহাবিশ্বের কোথাও না কোথাও নাকি ওরা রয়ে যায়।আমাকে কেউ বলে দিবে কি করলে আমি আবার সেই তরঙ্গগুলো আমার চারপাশে সারাজীবন ধরে রাখতে পারবো?কি করলে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাওয়া অনুভূতিগুলো ছুঁতে পারবো?
আমি এখনো তটস্থ থাকি।এই বুঝি কোনো বন্ধু এসে পিঠের উপর গায়ের সব শক্তি দিয়ে চাপড় মেরে বলবে,’কি দোস্ত,কই যাস?’আমার আধা সিগারেটটি খাওয়ার আর কেউ নেই।প্যাকেটের শেষ সিগারেটটি নিয়েও আমার কোনো দুঃশ্চিন্তা নেই।কারন আমি জানি ওটা কেউ আর চুপি চুপি নিয়ে যাবে না।সন্তপর্নে একটু একটু ভষ্ম হতে হতে আমি দেউলিয়া।