somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ্র

০৩ রা আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুভ্র
হঠাৎ করেই কেন যেন কিছু লেখার ভাবোদয় হলো। কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে মাথার মধ্যে হঠাৎ করেই জেকে বসল হুমায়ুন আহমদে্র সেই শুভ্র-এর গল্পটি। কিন্তু ভেবে পাচ্ছিলাম না এত বর মাপের লেখকের বই পড়ে এর চেয়ে আর কত বড় মাপের লেখাই বা লেখা যাবে।কিন্তু লেখার ইচ্ছা প্রবল থাকায় শুরু করে দিলাম শুভ্র কে নিয়ে লেখা।না এই শুভ্র হুমায়ুন স্যারের সেই কল্পনা জগতের কনো শুভ্র না।এ শুভ্র আমাদের ই বাস্তব জগতের এক শুভ্র। কা
লের আবর্তনে যাকে আমরা হারাতে বসেছি ধিরে ধিরে।

শুভ্র এর সাথে আমার পরিচয় বেশী দিনের না। বছর আটেক হবে।এই এত গুলো বছর কে বেশি বলছিনা তার কারন একটাই যে তার সাথে আমার পরিচয় ক্লাস ৯ থেকে।আর অন্যদের প্রেক্ষিতে কম কারণ আমার প্রায় সকল ফ্রেন্ডের ই ক্লাস ওয়ান থেকেই পরিচয়।যাই হোক,ক্লাস নাইন এর প্রথম দিন সে এসেছিলো আমাদের মাঝে।স্কুলের প্রথম দিনটিতে আমার পাশে এসেই বসে। ধিরে ধিরে অন্যান্য ছেলেদের মতই খাতির জমে উঠে তার সাথে।ছোট ছোট অনেক ঘটনার মধ্যে দিয়ে পার হয় ক্লাস নাইন।শুভ্র এর সাথে ধিরে ধিরে অনেক ক্লোস হয়ে যায় আম্রা।বলা বাহুল্য,এর মধ্যে বাড়িউল ,নিলয় ছিলো তার অন্যতম সেরা বন্ধু।এই স্কুল জীবনের কিছু কিছু ঘটনা যেগুলো মাঝে মাঝেই আমাকে তাকে নিয়ে ভাবিয়ে তুলে।(কিছু কিছু ঘটনার প্রকাশ এখানে প্রকাশ করলাম না।কারন এটার সাথে জরিত অনেকেই আমার এখানে আছে)।এগুলোর মধ্যে একটি ঘটনা আছে জেটা আমাকে বারেবারে মনে করায় দেয়।আমাদের সময় স্কুলের অবসর সময়ের একটা খেলা বেশ প্রচলিত ছিল।আর সেটি হলো রুমাল দিয়ে মারামারি।বারিউল,নিলয়,আর শুভ্র একবার আমাদের প্রিয় স্যার হরপ্রসাদের কাছে এই খেলা খেলতে গিয়ে ধরা পরে যায়।স্যার তাদের শাস্তি সরুপ এক হাতে কান ধরে আর আরেক হাতে রুমাল উপরে তুলে মিশরের পিরামিডের মত দার করায়ে রাখে স্কুলের মাঝ খানে।যাই হোক এরকম ছোট ছোট অনেক ঘটনায় ছিলো যেগুলো বলাটা হয়তো এখানে ঠিক হবে না।

দেখতে দেখতে স্কুল থেকে আমরা বিদায় নিয়ে নিলাম।এস এস সি পরীক্ষা হয়ে গেলো।ও জিপিএ ৫ পেল।আমি পেলাম ৪.৮৮।কলেজে ভর্তির সময় হলো।ও ভর্তি হলো ডিগ্রী কলেজ,র আমরা সিটি কলেজ।কিন্তু শুভ্র এর মন যেন পরে থাকতো আমাদের এখানেই।ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে বেড়ানো, গাছে আম,পেয়ারা চুরি করে বেড়ানো,নদীতে সাঁতরিয়ে বেড়ানো,পুকুরের মাঝে গিয়ে ভেসে থাকা,একসাথে নদীর ধারে গিয়ে আড্ডা দেওয়া,প্রাইভেটে গিয়ে অন্যদের জ্বালানো আর ও কতো কি।এই দিন গুলোর কথা ভাবলে এখনো মনটা খারাপ হয়ে যায় এই ভেবে যে এই দিন গুলো র কখনই ফিরে পাবোনা।এর মাঝে তার সাথে একাটা মেয়ের সম্পর্ক গরে উঠে বেশ।নাম টা না হয় না ই প্রকাশ করলাম।তাদের এই সম্পর্কটা আমার মতে অনেক ভাল ছিলো।এভাবেই দুই দুইটি বছর পার হয়ে গেল কেমন ভাবে যেন।এইচ এস সি পরীক্ষা চলে এলো।পরীক্ষা শেষ হল,ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি এর জন্য ও ভর্তি হল ওমেকা তে র আমি রেটিনা তে।আমি ভর্তি হলাম রাবি এর সিএসই তে র ও রুয়েট এর সিভিল এ।বছর খানেক বেশ ভালভাবেই কাটলো,আবার সেই আড্ডা,সেই খেলাধুলা,সেই নদী পুকুরে ঝাপাঝাপি,চাচির দোকানে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ক্যারাম খেলা।সন্ধা হলেই প্রিয় চাপা চত্তর এ আড্ডা।

এর পরেই যেন কি একটা হয়ে গেল তার জীবনে।ড্রাগস এর প্রতি ধিরে ধিরে আক্রান্ত হতে থাকে সে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে এ পথ হতে বের করা গেলনা।কিছুদিন পর তার প্রানপ্রিয় মা টি ক্যান্সারের নির্মম বলির শিকার হয়ে মারা গেলেন।তার ক্রিয়াকর্মে আমরাও সামিল হলাম এবং বুঝলাম তার করুন অবস্থার কথা।এর পরেই ড্রাগস জেনো তার কাছে মরার উপর খরার ঘা হিসেবে আবির্ভুত হলো।প্রথমে বুঝিনায় এতোটা এডেক্টেড সে,কিছুদিন আগের স্বরসতি পূজার সময় বুঝতে পারলাম আসলে সে কতটা এডেক্টেড।হয়ত তার রুয়েট জীবন তাই শেষ হবার পথে। আজ সে ধিরে ধিরে আমাদের হতে অনেক দূরে সরে গিয়েছে।এই দুরত্বের শেষ কথায় সেটাই দেখার অপেক্ষায়।এখন ও তাকে দেখলে কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করে।কিন্তু কি যেন একটা সংকচ বোধ কাজ করে।কিছুই করতে পারি না।আজও মনে হয় যায় ওকে নিয়ে পুকুরে গিয়ে সাতার কেটে আসি,বৃষ্টিতে ভিজে বেরায়।কিন্তু সব ই হয় কল্পোনায়।এই কল্পনাকেই বাস্তবে দেখার অপেক্ষায় রয়েছি ...............(এটাই হল শুভ্র,কল্পনার নয়,বাস্তবের,এত ঘটনা শেয়ার করা সম্ভব না,তাই তার প্রতি এটুকুই প্রকাশ করলাম)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:২৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×