ইতসুকুসিমা জাপান
জাপানের ইতসুকুসিমা দ্বীপে মৃত্যু নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ১৮৭৮ সালে। দ্বীপের বাসিন্দা কোনো অন্তঃসত্ত্বা মহিলার প্রসবের সময়কাল কাছাকাছি এলে তাকে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং বৃদ্ধ বয়সে যদি কেউ বার্ধক্যজনিত রোগে ভোগেন, তাঁকেও বলা হয় দ্বীপ ছেড়ে চলে যেতে। কেন এমন অদ্ভুত নিয়ম চালু করা হয়েছে_এই প্রশ্নের উত্তরে দ্বীপের বয়োবৃদ্ধরা বলেছেন, ১৫৫৫ সালে দ্বীপটিতে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল। যুদ্ধজয়ী সেনাপতির কাছে দ্বীপটি ছিল খুব পবিত্র। তিনি সৈনিকদের পুরো দ্বীপ থেকে সব মৃতদেহ সরিয়ে রক্ত মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। এমনকি সরিয়ে ফেলা হয় রক্তমাখা মাটিও। যেসব ভবনে রক্তের দাগ লেগেছিল সেগুলো ভেঙে সেখানে গড়ে তোলা হয় নতুন ভবন। তার পর থেকেই 'ইতসুকুসিমা' পবিত্র দ্বীপ এবং এখানে মৃত্যু নিষিদ্ধ।
লংইয়ারবাইন নরওয়ে
শহরটি নরওয়ের সিভালবার্ড দ্বীপপুঞ্জে। লংইয়ারবাইনের ছোট্ট কবরস্থানে লাশ দাফন নিষিদ্ধ হয়েছে ৭০ বছর আগেই। তবে ধর্মীয় কারণে নয়, বরং পরিবেশগত কারণেই এখানে 'মৃত্যু নিষিদ্ধ'।
সুমেরু অঞ্চলের এ শহরের ভূগর্ভে থাকে চিরহিমায়িত অবস্থায়। ফলে কবর দেওয়া মৃতদেহগুলো পচে না। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি ১৯১৭ সালের একটি মৃতদেহের টিস্যু পরীক্ষা করে দেখেছেন, সেটি এখনো পুরোপুরি অক্ষত। দ্বীপ শহরটিতে কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে হেলিকপ্টার বা বিমানে করে সরিয়ে নেওয়া হয়। মৃত্যু বা পরবর্তী অবস্থা উন্নত না হওয়া পর্যন্ত হতভাগা বা হতভাগিনীকে থাকতে হয় নরওয়ের অন্য কোনো শহরে!
ফ্যালসিয়ানো ডেল মাসিকো ইতালি
ইতালির দক্ষিণাঞ্চলের ছোট্ট শহর ফ্যালসিয়ানো ডেল মাসিকো। ছোট্ট শহরটিতে মৃতদেহ কবর দেওয়ার মতো আর কোনো জায়গা নেই। বিবাদের কারণে পাশের শহরের কবরখানাও এ শহরের কোনো মৃতদেহ কবর দেওয়ার অনুমতি দেয় না। ফ্যালসিয়ানো ডেল মাসিকোর মেয়র নতুন একটি কবরখানা তৈরি করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন এবং সে পর্যন্ত কাউকে না মরার আদেশ দিয়েছেন। মেয়রের এ ঘোষণায় শহরের বাসিন্দারা যেমন অবাক হয়েছে, তেমনি খেয়ালিপনার জন্য তাঁকে বলছে পাগল!
সারপোরেনস্ক ফ্রান্স
ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ছবির মতো সুন্দর গ্রাম 'সারপোরেনস্ক'। মৃত্যু নিষিদ্ধ হওয়ার কারণটি বেশ অবাক করার মতোই_মেয়র কবরস্থান বাড়ানোর জন্য আবেদন জানালেও কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি। রেগে গিয়ে মেয়র এলাকায় মৃত্যুর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন, যদি কেউ এই নির্দেশ অমান্য করে তবে তাঁকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। তবে মৃত ব্যক্তিকে কী শাস্তি দেওয়া হবে সেটা তিনি খোলাসা করেননি। নির্দেশটি শোনার পর থেকে গ্রামবাসীর মনে মৃত্যু ভীতির চেয়ে মৃত্যু পরবর্তী মেয়রের শাস্তির ভীতিই বেশি কাজ করছে!