somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হুমায়ুন কেন?

২৯ শে জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



খবরের জন্য ভিতবের পাতায় আসতে হবে।
সুত্র ঃ এইখানে পাবেন।http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=fc80088e4d37d4ca60158963a487432e&nttl=28072012129186

পুরো খবরের জন্য গুতো মারুন।

‘আমি জীবনের মুখোমুখি সাহসের সঙ্গে দাঁড়াবো। যে আমাকে প্রেরণা দিয়েছে সে প্রেরণাময়ীর কাছে যাব। যে আমাকে গৃহপালিত মানুষে রূপান্তরিত করতে চায়, তার কাছে যাবো না। আমার বন্যতা, আমার উদারতা, উদ্দামতা, অস্থিরতার যথাযথ ব্যাখ্যা করা উচিত। কি হতে চাই, কতোটুকু যোগ্যতা আছে, পরিবেশ কতোটুকু সুযোগ দেবে এবং পরিবেশকে কতোদূর ভাঙতে হবে সেটিই দেখার বিষয়।’ (আহমদ ছফার ডাইরী থেকে)

লিখতে বসেছি হুমায়ূন আহমেদ নিয়ে কিন্তু আহমদ ছফা কেন আসবে? আহমদ ছফা অবশ্যই আসবে। কারণ হুমায়ূন আহমদ ছফা’র সৃষ্টি। হি ইজ পার্টলি মাই ক্রিয়েশন আহমদ ছফা দাবি করতেন। করবেন নাই বা কেন? হুমায়ূনেরও তাতে কোনদিন দ্বিমত হয়নি। আহমদ ছফা নিয়ে বলতে গিয়ে হুমায়ূন বলতেন ছফা ভাই ছিলেন আমার MENTOR। ছফা ভাই এমন একজন মানুষ যিনি নিমেষেই উত্তেজনা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারেন। ছফা ভাই হুমায়ূনকে বললেন গল্প লিখতে হবে। রোজ রাতে একটা করে। ছফা ভাইয়ের কথা মানেই আদেশ। হুমায়ূন রাত জেগে জেগে গল্প লেখা শুরু করে দিল। তার প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ছফা। লেখক শিবিরের প্রধান হওয়ায় ‘নন্দিত নরকে’-কে বছরের শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের পুরষ্কার দিয়ে দিয়েছিলেন। ‘নন্দিত নরকে’র জন্য আহমদ শরীফের যে ভূমিকা তাও ছফার সৌজন্যে পাওয়া। একজন তরুণ ঔপন্যাসিকের ক্ষেত্রে যা ছিল অকল্পনীয়। তবে হুমায়ূন আহমেদ ছফার বলয়ে থাকেন নি। তার এক সময় সন্দেহ হল ছফা যে জগতে বাস করেন তা বাস্তব জগত থেকে অনেক দূরে। তার রিয়েলিটি আর হুমায়ূনের রিয়েলিটি এক নয়। আহমদ ছফার ভাবনা দর্শন রিয়েলিটি নিয়ে লিখতে বসলে হুমায়ূনকে নিয়ে আর কিছু লেখা হবে না। তাই এই প্রসঙ্গ থাক। হুমায়ূনের মোহ ভঙ্গ হল। হুমায়ূনকে নিয়ে ছফা ভাইয়ের অনেক স্বপ্ন ছিল। হুমায়ূন নিজেই স্বীকার করেছেন সে তার কোনটাই পূরণ করতে পারেন নি।

আহমেদ ছফাও হুমায়ূনের ভিতরে চেখভের মত একটা প্রতিভার সন্ধান করেছিলেন। কিন্তু তার আশা পূর্ণ হয়নি। হুমায়ূনের লেখা সম্পর্কে বলতেন – জামাকাপড় তো বানায়, কিন্তু প্রাণ দিতে পারে না, কী একটা মুশকিল!

হুমায়ূনকে তিনি শরৎচন্দ্রের চেয়েও জনপ্রিয় সার্টিফিকেট অনেক আগেই দিয়ে গেছেন। আশ্চর্য আমরা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ফোন করে সেই সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি করছি। আমাদের পশ্চিমা প্রীতি বোধহয় কোনদিনই যাবে না। আনন্দবাজারে টুকরো খবরে হুমায়ূনের মৃত্যূ সংবাদ পড়েও বোধোদয় হবে না। হুমায়ূন আহমেদের সাথে সমসাময়িক লেখকদের তুলনায় ছফার বক্তব্য ছিল ‘হুমায়ূন আহমেদ একবিন্দুও সেক্স না লিখে শ্রেষ্ঠ বাজারসফল বই লিখছে, অন্যেরা সেক্স দিয়ে এইটার সাথে কমপিট করতে চাইছে। হুমায়ূন আহমেদ যত কিছুই করুক না কেন, তার নষ্টামিটা অন্য জায়গায়। তার নষ্টামিটা ব্রেনে। অন্যদের নষ্টামিটা শিশ্নে।’ হুমায়ূন কেন টাকার জন্য বাজার লেখক হতে গেলেন তার একটা ব্যাখ্যাও ছফা দিয়েছেন – ‘উপর্যুপরি সামরিক শাসন, গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার পরাজয় সব মিলিয়ে এখানে যে চিন্তাহীন অরাজক পরিস্থিতি- হুমায়ূন সেই সময়ের প্রোডাক্ট।’

‘নন্দিত নরকে’ বা ‘শঙ্খনীল কারাগার’ তার দুই শ্রেষ্ঠ উপন্যাস অবশ্য তাকে জনপ্রিয় করে নি। তাকে জনপ্রিয় করেছিল বিচিত্রায় প্রকাশিত তার প্রথম উপন্যাস ‘অচিনপুর’। যার জন্য তিনি তিনশ টাকা পেয়েছিলেন। নন্দিত নরকে এবং শঙ্খনীল কারাগারের জন্য রয়েলিটি হিসাবে পেয়েছিলেন চারশ টাকা। পাঠক হয়ত ভাবছেন টাকার অঙ্কগুলো বলার দরকার কি? বলার দরকার আছে। কারণ হুমায়ূন টাকার জন্য লিখতেন। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। তিনিও অস্বীকার করেন নি। এ প্রসঙ্গে তার জীবনের প্রথম গল্পটা শোনা যাক।

হুময়ূনের বাসায় টি.ভি নেই। তার দুই মেয়ে নোভা, শীলা পাশের বাসায় টি.ভি দেখতে যায়। একদিন খুব মন খারাপ করে তারা বাসায় ফিরে আসল। পাশের বাড়িতে মেহমান এসেছে বলে টি.ভি দেখতে দেবে না। এখন একটু বলি এমন ঘটনা আমার জীবনেও ঘটেছে। আমাদের টি.ভি ছিল না। বাড়িওয়ালার বাসায় যেতাম টি.ভি দেখতে। ছোটবেলায় বুঝতাম না কিন্তু এখন বুঝি কি অপমানের মধ্যে দিয়ে না আমাকে টি.ভি দেখতে দিত ওরা। ওরা সবাই বিছানায় বসত। আমাকে বসতে দিত নিচে মেঝেতে। থাক সে প্রসঙ্গ আমরা হুমায়ূনের গল্পে ফিরে আসি। হুমায়ূনের বড় মেয়ে জেদ ধরল তাদের একটা রঙিন টেলিভিশন কিনে দিতে হবে। হুমায়ূন সেই প্রত্যাশা পূরণের জন্য লিখলেন কালজয়ী ধারাবাহিক নাটক ‘এই সব দিন রাত্রি’। একটা রঙিন টি.ভির জন্য লেখা হয়েছিল এই নাটক। সেই নাটকে টুনির ক্যান্সার হয়েছিল। আমাদের হুমায়ূনও ক্যান্সারে চলে গেলেন। হুমায়ূন যদি বাজার লেখক না হতেন, অর্থ উপার্জনের জন্য না লিখতেন আমরা হয়ত বি.টি.ভি-তে এই কালজয়ী নাটকটি দেখতে পেতাম না। যা আমাদের দর্শকদের কোলকাতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। নদীয়ার ভাষা থেকে বাংলাদেশের ভাষা বলতে শিখিয়েছিল। বি.টি.ভি-তেও শুরু হয়েছিল একটা নতুন অধ্যায়। টাকা নিয়ে হুমায়ূনের যুক্তি ছিল- ‘একজন লেখক চাঁদের আলো খেয়ে বাঁচেন না। তাকে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট খেতে হয়।’

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলতেন, সাহিত্যে মধ্যবিত্তের কর্তৃত্ব থাকবেই।আসলে সাহিত্যের বিশেষ প্রয়োজন মধ্যবিত্তের জন্যই. উচ্চবিত্তের জন্য ভিন্ন প্রকার আমোদ-আনন্দের পথ খোলা আছে, নিম্নবিত্তেরও তাই, মধ্যবিত্তের এদিক সেদিক যাওয়ার পথ খোলা নেই। এ কথা কি অস্বীকার করার উপায় আছে হুমায়ূন সেই মধ্যবিত্তেরই প্রতিনিধিত্ব করতেন। মধ্যবিত্তের সুঃখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন, আনন্দ-নিরানন্দ, চাওয়া-পাওয়া, অর্থহীন প্রলাপ, মূল্যবোধ, সংশয়, যুক্তি-তর্ক, কালক্ষেপন, মিরাকলের প্রত্যাশা, অনিশ্চয়তা, আ্যান্টি লজিক, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র বোধ, আত্মশ্লাঘা, অহমিকা, অভিমান, কৌতুকবোধ কি উঠে আসে নি হুমায়ূনের লেখায়? আর মধ্যবিত্তের সাহিত্যই যদি প্রধান সাহিত্যের মাপকাঠি হয় তবে হুমায়ূন সেই মধ্যবিত্তের চেতনা ধারণ করে আনার জন্য কেন টিকে থাকবেন না?


হুমায়ূনের লেখায় কি শুধুই মধ্যবিত্তের কাহিনি? উচ্চবিত্ত বা নিম্নবিত্তের কি সেখানে স্থান নেই। আবার সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে ফিরে যাই। তিনি বলতে চান কৌতুক ও বাগবৈদগ্ধতার একটা ভূমিকা এই যে, তারা জীবনের কুৎসিত সত্যগুলোকে চোখের আড়াল করে রাখে। একটা ঢাকনা চেপে ধরে সেই মস্ত পাত্রের উপর যার ভিতর অপ্রিয় ও অসুন্দর সত্যগুলো কিলবিল করছে। সব রচনাতেই দেখা যায় অভাবপীড়িত মানুষকে অবলোকন করা হয়েছে দূর থেকে। সে জীবনের সাথে একাত্মবোধের ছাপ খুব অল্প। কৃষক কৃষক হিসাবেই সুখি হোক, কৃষিকার্য লেখনকার্যের মতই গুরত্ব ও মর্যাদাপূর্ণ হয়ে উঠুক এই ইচ্ছাটা সাহিত্যে ফুটে ওঠে নি। বরং কৃষকের ছেলে মেধা থাকা সত্বেও কেন ডাক্তার হলো না, ধনীর দুলালীকে বিয়ে করতে পারল না সেই নিয়েই সাহিত্য গড়ে উঠেছে। এর ভিতরে একটা অসৎ সদিচ্ছা কাজ করছে যে দুঃখী দুঃখীই থাকুক, তাহলে আমরা আমাদের সুখজনিত সৌভাগ্যটা বুঝতে পারব। এবং দুঃখীর জন্য দুঃখ প্রকাশে ভাবালু হয়ে নৈতিক পরিতৃপ্তি লাভ করে সাহিত্য রচনা করব। খাঁটি মধ্যবিত্ত সব সময় উপরে তাকিয়ে থাকে, নিচুকে তার ভয় পাছে সে ধরা পড়ে যায় যে, সে নিচু থেকে বেশী উঁচুতে নয়। বৃত্তের ভিতরে আছি, অথচ বৃত্তের ভেতর থেকে সাহিত্য হয় না, জীবনের সাথে জীবনের যোগ সাহিত্যসৃষ্টির এ হল পয়লা শর্ত।

হুমায়ূন কি বৃত্ত ভাঙতে পেরেছিলেন? বৃত্ত নিয়ে হুমায়ূন বলেছিলেন প্রতিটা মানুষের আলাদা আলাদা বৃত্ত থাকে। কেউ সেই বৃত্ত অতিক্রম করতে পারে না। উনিও পারেন নি। কিম্বা হয়ত পারার চেষ্টা করেন নি। নিজের বৃত্তে থেকেই লিখে গেছেন। দাবি করেন নি কখনো নিজেকে ঔপন্যাসিক বলে। বরং বলতেন ফিকশন রাইটার। কারণ উপন্যাসের সংজ্ঞা কি তা তিনি শেষ অবধি জানতে পারেন নি। তাই নিজের মত করে উপন্যাসের সংজ্ঞা দাঁড় করিয়েছেন। কিন্তু আমরা যখন তার ‘অচিনপুর’ উপন্যাসটা দেখি তখন কি মনে হয় না তিনি বৃত্ত ভাঙতে পেরেছিলেন। সিরাজুল ইসলামের সব দাবিই কি তার ‘অচিনপুর’ আর ‘ফেরা’ উপন্যাস দুটি পূরণ করে না?

‘অচিনপুর’ পুরোটা গ্রামীণ আবহে লেখা একটা উপাখ্যান। সেখানে নবুমামা আছে, বাদশা মামা আছে, নানা জান আছে, লাল মামী আছে। যে যার অবস্থানেই জীবনের সুঃখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। তাদের শহরমুখিতা নেই। তথাকথিত উচ্চাশা নেই। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী যেমনটি চাইছিলেন কৃষক কৃষক হিসাবেই সুখি হবে তেমনটির প্রতিফলনই কি ‘অচিনপুর’-এ ঘটে নি। একথা সত্য সেখানে কৌতুক ও বাগবৈদগ্ধতার প্রাচুর্য আছে। কিন্তু তা কি আমাদের গ্রামীণ আবহের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নয়। উপন্যাসে—

“মাঠে সে রাতে প্রচুর জোছনা হয়েছে। চকচক করছে চারিদিক। ঠাণ্ডা একটা বাতাস বইছে। নবুমামা চেচিয়ে বলল– “কি জোছনা! খেতে ইচ্ছা হয়। মনে হয় কপকপ করে খেয়েফেলি। নবুমামা হা করে খাবার ভঙ্গি করতে লাগল। বিস্মিত হয়ে আমি তার আনন্দ দেখলাম।”

জোছনার এমন সরল বর্ণনা পাঠককে কোথায় নিয়ে যায়? আমাদেরও কি নবুমামার মত সব সময়কে স্থির করে জোছনা খাওয়ার অদম্য বাসনা তৈরি করে না? আবার লাল মামী যখন গ্রাম বাংলার চিরচরিত নারীর প্রতিনিধিত্ব না করে একটা সমাজিক বিপ্লবের নারী স্বাধীনতার ডাক দেয় তাতে কি সমাজের ভীত কেঁপে ওঠে না?

“নবুমামা দৌড়ে দেশলাই নিয়ে আসলেন। মামি আমাদের দুজনের স্তম্ভিত চোখের সামনে ফস করে একটা বার্ডসাই সিগারেট ধরিয়ে টানতে থাকেন। আমাদের দুজনের নিঃশ্বাস পড়ে না। মামি বললেন, এই দেখ যত টানছি তত ছোট হচ্ছে।
……………………………………………………………………………………………………………
মামির মুখের গন্ধ দূর করার জন্য পানি আনতে হয়। এলাচ দানা আনতে হয়। সেই সঙ্গে মামীর প্রতি আমাদের নিষিদ্ধ আর্কষণ জড় হতে থাকে।”

তবে হ্যা সেখানে জীবনের সবচেয়ে প্রচণ্ড আর্থিক অভাবের চিত্রায়ন নেই। পুঁজিবাদী বা সমাজপতিদের বিরুদ্ধে আপামর জনগণের বিপ্লব নেই। নেই দারিদ্রতার চিত্রায়ন। যে আর্থিক অভাবের চিত্রায়ন হুমায়ূন করেছেন ‘ফেরা’-তে। এইখানে গণমানুষের প্রতিবাদী চরিত্র আছে। আছে যৌক্তিক উপলদ্ধি। এবং এটাও গ্রামীণ আবহে নির্মিত উপন্যাস।

হুমায়ূনের ‘ফেরা’। কি নেই এই উপন্যাসে? কিছু অংশ তুলে ধরছি—

“ভাত না খেয়ে বাঁচার রহস্য সোহাগীর লোকজনের জানা নেই। চৈত্র মাসের দারুণ অভাবের সময়ও এরা ফেলে ছড়িয়ে তিন বেলা ভাত খায়। এবার কার্তিক মাসেই কারও ঘরে এক দানা চাল নেই। জমি ঠিক ঠাক করার সময় এসে গেছে। বীজ ধান দরকার। হালের গরুর দরকার। সিরাজ মিঞার মত সম্ভ্রান্ত চাষীও তার কিনে রাখা ঢেউ টিন জলের দামে বিক্রি করে দিল।

ঘরে ঘরে অভাব। ভেজা ধান শুকিয়ে যে চাল করা হয়েছে তাতে উৎকট গন্ধ। পেটে সহ্য হয় না। মোহনগঞ্জ থেকে আটা এসেছে। আটার রুটি কারও মুখে রোচে না। কেউ খেতে চায় না। লগ্নির কারবারীরা চড়া সুদে টাকা ধার দিতে শুরু করল।

ঠিক এই সময় কলেরা দেখা দিল। প্রথম মারা গেল ডাক্তার ফজলুল করিম সাহেবের কম্পাউন্ডারটি। তারপরই এক সাথে পাঁচজন অসুখে পড়ল। আমিন ডাক্তার দিশাহারা হয়ে পড়লেন। অষুধ পত্র নেই, খাবার নেই, কিভাবে কি হবে?

ভাতের কষ্ট বড় কষ্ট। নুরুউদ্দিনের পেটে সারাক্ষণের ভাতের খিদা লেগে থাকে। শরিফা প্রায়ই বলে আজরফ টেকা পয়সা নিয়া আসুক, দুই বেলা ভাত রানমু।
কোনদিন আইবো?”

উপন্যাসে এক সময় নুরুকে মাছ চুরির অপবাদ দেওয়া। মারধরও করে। সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তির এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় আমিন ডাক্তার। প্রতিবাদে অনশনে বসে। অবস্থান ধর্মঘট করে। এক সময় বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ে। ন্যায্য হিসাবের দাবিতে নিজাম সরকারের মাছের খোলায় চড়াও হয় গ্রামবাসী। চুক্তি অনুযায়ী ৩০ ভাগ মাছ প্রাপ্তির দাবিতে। দুটি খুনও হয়ে যায়। এক সময় মোহনগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার কোমরে দড়ি বেঁধে আমিন ডাক্তারকে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার এখানেই শেষ না। হুমায়ূন চমক দিতে ভালবাসেন। সরকার বাড়িতে একটা নববধূকে মেরে গাঙে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেই তথ্য শেষে উঠে আসে। হুমায়ূনের ‘ফেরা’ কালজয়ী উপন্যাস হয়ে বাংলা সাহিত্যে কেন টিকে থাকবে না বোধগম্য হয় না।

মোটাদাগে বাংলা সাহিত্য বঙ্কিমের হাত ধরে যে পথ চলা শুরু করেছিল রবীন্দ্রভাবনায় সমৃদ্ধ হয়ে শরৎ এর হাতে এসে আপামর জনগণের দোরগোড়ায় চলে আসে। আপামর জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর কারণেই শরৎ বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখকে পরিণত হন। এখন জনপ্রিয় লেখক ছিলেন বলেই শরৎ আজকে একশ বছরেও অচল হয়ে যেমন জাননি তেমনি শরৎকেও জনপ্রিয়তায় ছাপিয়ে যাওয়া হুমায়ূনও হারিয়ে যাবেন না একথা হয়ত ছেলেমানুষী হয়ে যাবে। তবু শরৎ এর ‘দেবদাস’ পড়ে এখনও যেমন পাঠক অশ্রুজলে ভাসে ভবিষ্যতে হুমায়ূনের ‘নবনী’ বা ‘কৃষ্ণপক্ষ’র অরু/মুহিবের কাহিনি পড়েও পাঠক অশ্রু বির্সজন দেবে নির্দ্বিধায় বলা যায়।

মানুষের হৃদয়বৃত্তি জাগ্রত করাই জনপ্রিয়তার মূলমন্ত্র। আর জনপ্রিয় লেখকরা বিশাল পাঠক গোষ্ঠীর পাঠ্যাভাস তৈরি করে। হুমায়ূন লাখ মানুষের ভিতরে পাঠ্যাভাস গড়ে তুলেছিলেন এ কথা নতুন করে আলোচনার কিছু নেই কিন্তু তিনি পাঠককে যে আরও কিছু জানতে, আরও মহত্তম সাহিত্যের প্রতি অনুরক্ত হতে কৌতূহলী করতেন সে কথা না বললেই না। উদাহরণ হিসাবে হুমায়ূনের ‘মাতাল হাওয়া’কে ধরা যাক। ‘মাতাল হাওয়া’ অসম্পূর্ণ উপন্যাস। উপন্যাসে আমরা যে গল্প খুঁজি তার পুরোটাই হয়ত আছে কিন্তু যে বিশেষ সময়ের প্রেক্ষিতে গল্পের কাহিনি সেই সময়টা পাঠকের চোখে পুরোপুরি ধরা পড়ে না। ধরা পড়ে না তবে হুমায়ূনের সুনিপুন লেখনীর জোরে পাঠককে কৌতূহলী করে জানতে ৬৯-এর কথা। পাঠক হুমায়ূনের থেকে গল্পের রসটা পেল সাথে পেল ইতিহাস জানার লিপ্সা। যেমনটি তার অনেক উপন্যাসের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়া কালোত্তীর্ণ সাহিত্য কর্মের উদ্ধৃতি পাঠককে তা খুঁজে বের করে পড়ার ইচ্ছা জাগায়।

হাসান আজিজুল হকের বিশ্বাস ‘সাহিত্য সমাজের অবস্থাটাকে খুব সরাসরি তুলে ধরতে পারে, সরাসরি বিশ্লেষণের কাজটি করতে পারে তার সাথে মানুষের আবেগের যোগোযোগ ঘটাতে পারে। ফলে মানুষের চেতনা অনেক শাণিত হতে পারে, যে চেতনা অবশ্যই সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে।’ উপন্যাস যদি শুধু কাল্পনিক হয় তবে তার কোন তাৎপর্য থাকে না। উপন্যাসের গল্পকে অবশ্যই হতে হয় একটা বিশেষ সময়ের সমাজের গল্প, বাংলাদেশের ১৯৭৫-২০১২ সময়কালে মধ্যবিত্তের ব্যাপক অংশের মন মানসিকতা, জীবন যাপন, চিন্তার পরিধি কেমন ছিল জানতে চাইলে সেরা অবলম্বন হবে হুমায়ূন।

হুমায়ূন সমাজ পরির্বতনে ভূমিকা রাখতে পারেনি। কিম্বা বদরুদ্দিন উমর যেমনটি চেয়েছেন- সাহিত্য হচ্ছে সমাজ বিকাশের হাতিয়ার, হুমায়ূনের সাহিত্যভাবনা সেই হাতিয়ার হতে পারে নি। কিন্তু যাদের সাহিত্য সমাজ পরির্বতনে ভূমিকা রাখবে, যাদের সাহিত্য সমাজের বিকাশে ভূমিকা রাখবে তাদের দোরগোড়ায় পাঠককে পৌঁছে দিয়েছেন। পাঠকের মনোবল কখনো নষ্ট করেন নি। কিভাবে করতে হবে তার দিক নির্দেশনা হয়ত নেই তবে কি করতে হবে তার যথেষ্ট প্রচেষ্টা তিনি রেখেছেন। ‘প্রিয়তমেষু’-তে আমরা দেখি একাকী অনবদ্য মনোবল নিয়ে নিশাতে ধর্ষকের বিরুদ্ধে এগিয়ে যাওয়া। তার একটা সাধারণ ছোটগল্পের কথাই ধরা যাক। ছুনু মিঞা। ছুনু মিঞার নজর খুবই খারাপ। সে যার দিকে তাকায় তার সর্বনাশ হয়ে যায়। বিষয়টা গ্রামবাসী ভালভাবে দেখে না। ছুনু মিঞার শাস্তির আয়োজন হয়। সামাজিক কুসংস্কারচ্ছন্নতা আমাদের দীর্ঘ দিনের ব্যাধি। হুমায়ূন ছুনু মিঞার জবানে সে ব্যাধি দূর করতে চাইছেন। “আমার আসলে কোন ক্ষমতা নাই। দুষ্ট লোকে গেরাম ভর্তি। ক্ষমতা থাকলে নজর দিয়া একেবারে শেষ কইরা দিতাম। যেমন ধরেন, আমরার চেয়ারম্যান গণি সাহেব। কত চেষ্টা করছি তারে নজর লাগাইতে। লাগে না।” ছুনু মিঞার আক্ষেপ কি আমাদের অনেকের আক্ষেপ না। যারা এই সমাজের কীট, যারা শোষক, নিপীড়ক তাদের প্রতি আমাদের আজন্ম ঘৃণা, উৎপাটনের আকাঙ্ক্ষা হুমায়ূন ধারণ করেন তার সৃষ্ট চরিত্র নজরের মত অলৌকিক এক অবতারণায়। তিনি সামাজিক বিপ্লবের ডাক সরাসরি দেন না কিন্তু বিপ্লব যারা করবে তাদের পথ পরিষ্কার করেন।

রণেশ দাশগুপ্ত চাইতেন জনসাধারণ এবং জনসমাজের গতিপথ ও সম্ভাবনাকে সামনে রেখে উপন্যাস লিখতে ও পড়তে হবে। হুমায়ূন কখনো আশাহতের গল্প শোনাতেন না। তিনি সম্ভাবনার কথা বলতেন। অন্যদিনের পান্থনিবাস বোর্ডিং হাউসের কথায় আসি। মেস জীবন উপন্যাসের পাতায় এত সাবলীলভাবে কি কেউ কখনো বর্ণনা করেছেন হুমায়ূনের আগে। বেকার তরুণের পথ নির্দেশিকা দেখিয়েছেন। অসম্ভব সম্ভাবনাকে সম্ভব করতে যে মানসিক দৃঢ়তার প্রয়োজন সফিকের মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছেন। “অশ্রু গোপন করবার জন্য সে দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে মৃদু স্বরে বলল, শুধু জ্যোতিষার্ণিব কেন তুই নিজেও যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাস আমার তাতে কিছুই যাবে আসবে না। আমি ঠিক উঠে দাঁড়াব।” এই উঠে দাঁড়ানোর প্রত্যয় আমাদের গতিপথ এবং সম্ভাবনাকে টিকিয়ে রাখবে।

আহমদ শরীফ বিশ্বাস করেন গণমানবমুক্তিই তো সব কলাচর্চার লক্ষ্য হওয়া বাঞ্জনীয়। গণমানবমুক্তির অনুপ্রেরণা সবচেয়ে বেশি আমরা কোথায় পাব? পাব আমাদের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতাযুদ্ধে। হুমায়ূন সেই স্বাধীনতাযুদ্ধকে তুলে এনেছেন তার জোছনা ও জননীর গল্পে। যেখানে মুক্তির প্রশ্নে একাতাবদ্ধ হয়েছিল পুরো জাতি। মুক্তি মিলেছে কি মেলেনি সে প্রশ্ন? মুক্তিযুদ্ধ একটা চলমান প্রক্রিয়া। যার প্রথম শর্ত স্বাধীনতা। আর স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয় মুক্তির স্বপ্নে। হুমায়ূন সেই মুক্তিযুদ্ধকে, মুক্তির স্বপ্নকে তার লেখনীতে যেভাবে জাগিয়েছেন এ যুদ্ধের পটভূমিকায় খুব কম উপন্যাসেই সেই জাগ্রত সত্তা পাওয়া যায়। পাঠক যখন নীলগঞ্জের মাওলানা সাহেবের নগ্ন ভাবে শহর প্রদক্ষিণের কথা পড়ে তখন শাসকের বিরুদ্ধে তার ঘৃণা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। হাছুইন্না গ্রুপের কর্মকাণ্ড, রফিক কিম্বা ডাকাত হারুন মাঝির যারা সাধারণ গণমানুষ থেকে উঠে এসে অসীম সাহসীকতায় বিপন্ন দেশমাতৃকার পাশে দাঁড়িয়েছিল গণমানবের মুক্তির প্রশ্নে যারা এগিয়ে যেতে চায় তাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে চিরকাল।

এ কথা প্রচলিত সত্য যে আপাতঃদৃষ্টিতে যা ভ্রান্ত মনে হচ্ছে, নিজস্ব সীমাবদ্ধতার বা কূপমণ্ডূকতার জন্য আপত্তিকর মনে হচ্ছে, চূড়ান্ত বিশ্লেষণে সময়ের আবর্তনে তা নির্ভুল প্রমাণিত হতে পারে। হুমায়ূনের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিগুলো নিয়ে স্থির স্বিদ্ধান্তে পৌঁছানোর সময় হয়ত আসে নি। কিন্তু সেই কাহিনিতেই বিজ্ঞানের কঠিন তত্ত্ব কপচানোর বিপরীতে হৃদয়ের সম্পৃক্ততা; (যদি সেরকম কিছু হয়েই যায়- সেই সময়ের হুমায়ূনের লেখা কিছু মানুষকে বুদ্ধির সাথে সাথে হৃদয় দিয়ে বোঝানোর কাজটি করবে।) হৃদয় আর বুদ্ধির সংলগ্নতার যে বিকাশ আমাদের প্রয়োজন তা হয়ত বড় পরিসরে না হলেও কিছুটা চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর মতে গৃহানুরাগ ব্যতিরেকে উপন্যাস অসম্ভব। কিন্তু হুমায়ূনের অমর সৃষ্টি হিমু গৃহানুরাগী ছিল না। ছিল গৃহ ত্যাগী। রাজপুত্র স্বিদ্ধার্থের মত হেরেমে ৮৪ হাজার যুবতী নারীর প্রলোভন এড়িয়ে মুক্তির অন্বেষায় ছুটে চলা এক কালের নাবিকের মত বাঙালিরও গৃহত্যাগী হবার গোপন লিপ্সা আছে দীর্ঘ যুগের। লেখার শুরুতে আহমদ ছফার ডাইরীর কিছু অংশ এনেছিলাম। “আমি জীবনের মুখোমুখি সাহসের সঙ্গে দাঁড়াবো। যে আমাকে প্রেরণা দিয়েছে সে প্রেরণাময়ীর কাছে যাব। যে আমাকে গৃহপালিত মানুষে রূপান্তরিত করতে চায়, তার কাছে যাবো না।” হুমায়ূন ছফার বলয় থেকে বেড়োতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার কেন জানি ব্যক্তিগত ধারনা হুমায়ূন ছফার বলয় থেকে বেড়োতে পারেন নি। ছফাকে তিনি যে হণ্টন পীর বলতেন তা তিনি হিমুর মধ্যে প্রকাশ করেছেন। প্রফেটিক সত্তার যে অভাব ছফার ছিল হুমায়ূন হিমুকে সেই সত্তা দিয়ে তার মত করে দিয়ে আত্মার শুদ্ধতা জাগ্রত করতে চেয়েছিলেন। যদিও ছফার দর্শনের ধারে কাছেও হিমু নেই। পাঠকের দোড়গোড়ায় পৌঁছাতে কিছু অন্যায় যে হুমায়ূন করেন নি তা ভাবার কোন কারণ নেই। কিন্তু বাঙালির হিমু হবার গোপন লিপ্সাকে বের করেছেন। যেমনটি বাংলাদেশের লক্ষাধিক পাঠককে করেছেন জোছনাপ্রেমী। বর্ষাকে উপভোগের যে মন্ত্র হুমায়ূন শিখিয়ে দিয়ে গেছেন সেই মন্ত্রের বীজ রবীন্দ্রনাথও শত চেষ্টায় বোধহয় পারেনি আপামর এত হৃদয়ে প্রবেশ করতে। শুধু হিমুর কারণেই হুমায়ূনকে টিকিয়ে রাখা যায় সাহিত্যে অনন্তকাল। এ এমন এক প্রচেষ্টা যা হাজার বছর লালন করেছে বাঙালি।

শিরোনামে প্রশ্নছিল হুমায়ূন কেন? উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি সংক্ষেপে নিজে নিজেই। কোন বস্তুকে ডান দিক থেকে দেখলে তার অবস্থান হয় বায়ে, সেই একই বস্তুকে বা-দিক থেকে দেখলে তার অবস্থান হবে ডানে। এই সাধারণ তত্ত্ব আমরা সবাই জানি। তাই হুমায়ূনকে বিশ্লেষণে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি একটা বড় নিয়ামক। একথা সত্য যে তার সব লেখায় অমর হবে না। হওয়ারও দরকার নেই। তবে হুমায়ূনকে আমাদের দরকার, আমাদের প্রয়োজনেই দরকার এবং তিনি টিকে থাকবেন কারণ আমাদের কে বারংবার ফিরতে হবে হুমায়ূনের কাছে। তার মানে এই না আমরা হুমায়ূনের বলয়ে আবদ্ধ থাকব। হুমায়ূন বলয়ে আবদ্ধ থাকতে পছন্দ করতেন না। হুমায়ূন হবে আমাদের সিঁড়ি। যা আমাদের ‌পৌঁছে দিয়েছে কালজয়ীদের সাহিত্য কর্মে আর ভবিষ্যতে সাহায্য করবে সাহিত্যের মননশীল বিকাশে এবং পাঠকের পূর্ণতা লাভের স্তরে পৌঁছাতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ২৮ জুলাই, ২০১২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×