সালিশি পরিষদের আলোকিত বিষয় :
সালিশি পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান কেয়াকে বলেন, ‘আপনার বন্ধুরা তো এখনো অনেকেই লেখাপড়া করছে। আপনি এত কম বয়সে বিয়ে করেছেন ? আবার এত কম সময়ে ছাড়াছাড়ির সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ? আপনার জীবনটা তো শুরুতেই ধাক্কা খেল। কোনভাবে কি সংসারটি টিকিয়ে রাখা যায় না ?’
কেয়া সালিশি পরিষদকে উদ্দেশ করে বলে উঠেন, ‘স্যার ও আমার চাচাত ভাই। আমরা চাচাত ভাই-বোন। আমি ওকে ছাড়া এই জীবনে আর কোন পুরুষকে দেখিনি। সবার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আমি ওকে বিয়ে করেছিলাম। আমাদের প্রেমের বিয়ে। অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম ওকে নিয়ে। কিন্তু মুখোশের আড়ালে ওকে চিনতে পারিনি।’
একটু থেমে কেয়া আবার শুরু করেন, ‘ও আমার বাবাকে অসম্মান করেছে। আমাদের মা-বাবার নামে কুৎসা রটিয়েছে। ওর বোনেরাও আত্মীয়-স্বজনকে আমাদের নামে অনেক খারাপ কথা বুঝিয়েছে। স্যার, আমি নতুন করে শুরু করতে চাই।’
কেয়ার কথা শুনে কাজল মলিন মুখে বলতে শুরু করেন, ‘স্যার তাকে আমি ভালবেসে বিয়ে করেছি। সে ছাড়া আমার জীবনে কেউ ছিল না। তাকে কত ভালবেসেছি সে কথা বলে বুঝাতে পারব না স্যার। তাকে খাইয়ে দিতাম। তার কিছু হলে স্থির থাকতে পারতাম না। তাকে আমি ঘুম পাড়িয়ে দিতাম।’
কাজলের কথা শুনে কেয়া বিরক্তির সুরে বলেন , ‘স্যার ওর অন্য রূপ দেখেছি। ওর মুখে মধু অন্তরে বিষ।’
কেয়ার বাবা আব্দুল হামিদও মেয়ের সাথে বলে উঠেন, ‘স্যার আমার সাথে সে অনেক দুর্ব্যবহার করেছে। ওর বাবা নেই। তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে বড় করেছি। তাকে নিজের ছেলের মত দেখেছি।’
এমন সময় সালিশি পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান কাজলকে চাচার পা ধরে মাফ চাইতে ইঙ্গিত করেন। কাজল কেয়ার বাবার পা ধরে বলেন, ‘চাচা আমাকে মাফ করে দেন। আমি অনেক বেয়াদবি করেছি।’
আব্দুল হামিদ দুঃখ ভারাক্রান্ত ভঙ্গিতে বলেন, ‘তুমি তো আগে ভাবনি। এখন কেন মাফ চাইছ ?’ কেয়ার মাও যোগ করেন, ‘স্যার ওর সবই অভিনয়। ও করতে পারে না এমন কোন কাজ নেই। ও সব পারে।’
কাজল কেয়ার মায়ের পায়ে পড়েন। ‘কিসের মাফ ? স্যার, কোনভাবেই সম্ভব নয়। ও মানুষ না।’
কেয়া সালিশি পরিষদকে বলে উঠেন, ‘স্যার আমি নতুন করে জীবন শুরু করব। নতুবা আত্মহত্যা করব।’
চলবে[/sb
বাল্যবিয়ের পরিনতি...।(১)