ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু টিপস
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
এইচ এস সি পরিক্ষা শেষ।সবাই এখন কোচিং করছে।কেও বোধহয় দ্বিমত করতে পারবেন না যে এই সময়টা জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়।নানা ধরনের প্রতিকুলতা আর সমস্যা এসে দানা বাধে এসময়।কেও কেও আবার হতাশার অকুল সমুদ্রে হাবুডুবু খায়।একটু বুদ্ধিমত্তার সাথে এই সময়টাকে পার করতে পারলে ভর্তি পরীক্ষায় অনেক ভাল করা যায়।আমি আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা লিখছি।আশা করি পরীক্ষার্থী ভাই বোনদের কাজে লাগবে।
সবার জন্য কিছু বিষয়ঃ
১.কোচিং এর এই সময়টা যেহেতু কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার আওতায় থাকে না তাই এসময় কোনো বাদ্ধবাধকতা থাকে না।কোচিং এর ক্লাস না করলে বাসায় নালিশও যায় না।তাই অনেকে এ সময় ধুমায়ে আড্ডা দেয়।সবার মাঝে একবার হলেও বড় হয়ে গেছি এই কথাটা উকি দেয়।এই বড় বড় ভাবটা একদমই পরিহার করে চলতে হবে।অনেকে ঢাকার বাইরে থেকে এসে প্রথম ঢাকা দেখার সুযোগ পেয়ে সুযোগের যথেচ্ছ অপব্যাবহারও করে থাকে।ভাই আপ্নারা এই সুযোগ নিতে গেলেই কিন্তু ছিটকে যাবেন।
২.অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হবেন না।কোচিং এর কয়েকটা পরীক্ষায় ভাল করেই ভেবে বসবেন না যে বুয়েট,মেডিক্যাল আর ঢাবি নিশ্চিত।যারা কোচিং এ ভাল করে তাদের একটা বৃহৎ অংশ কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় খারাপ করে।অনেকে আবার এইচ,এস,সি তে গোল্ডেন + পেয়ে ধরে নেয় যে আমারে আর ঠেকায় কে।তাই প্রতিবার এদের মধ্যে কেও কেও পরীক্ষায় খারাপ করে,এমঙ্কি চান্স পায় না।তাই বলি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হবেন না।
৩.চান্স কি পাব?আমাকে দিয়ে কি হবে?এই ধরনের চিন্তা ঝেরে ফেলে দিন।নিজেকে যোগ্য ভেবে লেগে যান।কোচিং এর কয়েকটা পরিক্ষাতে খারাপ করে ভেবে বসবেন না যে আপনাকে দিয়ে হবে না।কোচিং এর কিছু অপ্রয়োজনীয় কোঠিন প্রশ্নের উত্তর না পেরে হতাশ হবেন না।বরং আমি চান্স পাবই এই ভেবে নেমে পড়ুন।
৪.এক হাতে সব শোল ধরতে যাবেন না।ধরেন আপনি মনে করলেন যে আমি একাই বুয়েট,মেডিকেল আর ঢাবিতে ফাটিয়ে দেবো আর এমন ভেবে ৩-৪ তা কোচিং এ ভর্তি হলেন আর ৫-৬ জন টিউটর রেখে পড়লেন।তাইলে আপনার ক্ষতি ছাড়া ভাল হবেনা।এসব না করে প্রথমে আপনার লক্ষ্য ঠিক করে তারপর মাঠে নেমে যান।
৫.ভর্তি পরিক্ষার সময় সব পারি এমন ভাব দেখাবেন না আর চান্স পাওয়ার জন্য আপনাকে সব উত্তর করতে হবে এমনও না।যদি কেও সব উত্তর করে তাইলে করুকনা,আপ্নাকে যে প্রথম হইতে হবে এমন কোনো কথা নাই।তাই মাথা ঠিক রেখে আপনি ঠিক যতটুকু পারেন ততটুকু উত্তর করেন,না পারা প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট না করে যা পারেন তা আগে উত্তর করুন।তারপর যদি সময় থাকে তাইলে না পারা প্রশ্নের জন্য যত ইচ্ছে মাথা খাটান।
৬.কোচিং এর সময় মোবাইল এবং কম্পিউটার এর ব্যাবহার থেকে দূরে থাকুন।পরিচিত বন্ধু বা বান্ধবি থেকে নিজেকে একটু কৌশলে দূরে সরিয়ে আনুন।কারন আপনি যদি এই কাজটা মাত্র ৫ মাসের জন্য করতে পারেন তাইলে আপনার পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে সুবিধা হবে।মনে রাখবেন আপনি চান্স না পেলে আপনার সব বন্ধু কিন্তু পাশে এসে দাঁড়াবে না।
৭.অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে দুই একটা জায়গায় পরীক্ষা দেবেন না।কয়েক্টা জায়গায় পরীক্ষা দেবেন যাতে কোনো রিস্ক না থাকে।এমঙ্কি দুর্ভাগ্যবশত আপনি ধরেন অসুস্থতার জন্য একটা পরীক্ষা মিস করলেন।তখন কি হবে?
৬.নিজের যদি ব্যাক্তিগত কন দুঃখকষ্ট থাকে তাইলে তা অবলীলায় নিজের আপনজনদের সাথে শেয়ার করুন।এসময়ে নিজের ব্যাক্তিগত দুঃখকষ্ট থেকে নিজেকে যত দূরে রাখতে পারেন ততই ভাল।
শুধুমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্টুডেন্ট যারাঃ
১.সব প্রবলেম বুঝতে চেষ্টা করেন,সাথে সাথে প্র্যাকটিস বাড়ান।মনে রাখবেন যত প্র্যাকটিস করবেন প্রবলেম শলভ করতে তত কম সময় লাগবে।আপনি সব উত্তর করতে পারবেন্না।তাই মোট সময়কে প্রশ্ন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে প্রতি প্রশ্নের জন্য সময় বরাদ্দ করবেন না। চেষ্টা করুন কত কম সময়ে আপনি পারেন।
২.প্রব্লেম চিত্র একে শলভ করার চেষ্টা করুন কারন কন প্রব্লেমের চিত্র আঁকলে আর মাথা দিয়ে কল্পনা করতে হয় না আর সময়টাও কম লাগে।
৩.বেশি কঠিন ম্যাথ দেখে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।প্রতিবারই ত্যাঁদড় মার্কা কিছু অংক পরীক্ষায় আসে যেগুলো দেখে মাথা গরম করছেন তো ঝামেলায় পরছেন।কথিত আছে যে ভর্তি পরিক্ষায় যে যত ছাড়তে পারে তার সম্ভবনা তত বেশি।
৪.গাধা খাটুনির কোনো দরকার নেই।প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা পড়তে হবে এই সময় একটি ঘণ্টা নষ্ট করিলেও আমার চলিবে না বিষয়টা এমন না।বুদ্ধি খাটিয়ে ৫-৬ ঘণ্টা নিয়মিত পড়াশুনা করলে চান্স মোটামোটি নিশ্চিত।
৫.যারা একসাথে সব সূত্র মনে রাখতে পারেন না তারা আর্ট পেপারে সব সূত্র লিখে নিজের রুমে টাঙ্গিয়ে রাখতে পারেন তাতে প্রতিদিন উঠতে বসতে এগুলো দেখলে মনবে রাখতে অনেক সুবিধা হবে।
৬. শর্টকাট মনে রাখতে গিয়ে আসল সূত্র ভুলে যাবেন না কারন পরিক্ষাতে অধিকাংশই আসল সূত্র দিয়ে অংক করে কারন এত অল্প সময়ে এগুলো এত মনে থাকেনা।আর অনেক অংক শর্টকাট দিয়ে নাও মিলতে পারে।
পরিশেষেঃ
আমার সব কথাগুলই মাঝারি মানের স্টুডেন্টদের জন্য।আমি জানি অনেক ছাত্র আছে যারা সব ধরনের পরিক্ষাতেই ভাল করে,সব জায়গাতেই চান্স পায় তাদের জন্য আমার এই পোস্ট না।ভুল হলে ক্ষমা করবেন।মতামত থাকলে মন্তব্যে জানাবেন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
তোমাকে লিখলাম প্রিয়
আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।
হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই
সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ
গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।
... ...বাকিটুকু পড়ুন