আগামী বই মেলা নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদকে উৎসর্গ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমীর সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমীতে হুমায়ূন আহমেদের শোকসভায় তিনি বলেন, “আগামী অমর একুশে গ্রন্থমেলা হুমায়ূন আহমেদকে উৎসর্গ করা হবে। এছাড়া বাংলা একাডেমীতে স্থাপিত জাতীয় লেখক ও সাহিত্য জাদুঘরের একটি অংশে লেখকের পাণ্ডুলিপি, ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও অন্যান্য স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করা হবে।”
সদ্য প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের বই গত দুই যুগ ধরে একুশের বইমেলায় সর্বাধিক বিক্রির তালিকায় থাকছে। বাংলাদেশে প্রকাশনা শিল্প আজকের অবস্থানে পৌঁছার ক্ষেত্রে এই লেখকের অবদান সবচেয়ে বেশি বলে প্রকাশকরাই স্বীকার করেন।
প্রয়াত এ লেখকের নির্বাচিত ১০টি উপন্যাসের লিখিত আলোচনা নিয়ে একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা হবে জানিয়েছেন একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
একাডেমীর রবীন্দ্র চত্বরে আয়োজিত এই শোকসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদও ছিলেন।
শামসুজ্জামান খান বলেন, “আগামী তিন মাসে হুমায়ূন আহমেদের নির্বাচিত ১০টি উপন্যাস নিয়ে ধারাবাহিক লিখিত আলোচনার ব্যবস্থা করা হবে। পরবর্তীতে এই আলোচনাগুলোর সংকলন হিসেবে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশিত হবে।”
একাডেমী প্রকাশিত ‘উত্তরাধিকার’-এ হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা শিগগিরই বের করা হবে বলেও জানান বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যে বহুমাত্রিক অবদান রেখেছেন। তার সৃষ্টি দেশকালের সীমা অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক মাত্রা অর্জন করেছে। এমন স্বাপ্নিকলেখকের মৃত্যু নেই। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পাঠকের ভালবাসার মাঝে তিনি বেঁচে থাকবেন।”
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, “হুমায়ূন আহমেদের রচনায় মুক্তিযুদ্ধ নতুন মহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছে। অনাগত বাংলা সাহিত্যে তার সৃষ্টি বিবেচিত হবে অক্ষয় সম্পদ হিসেবে। শুধু সংখ্যাগত প্রাচুর্য নয়, শিল্পের নবমাত্রার নির্মিতিতেও তার অবদান অসামান্য।”
হুমায়ূন আহমেদকে জনপ্রিয়তার মানদণ্ডে বিচার না করার পরামর্শ দিয়ে সৈয়দ শামসুল হক বলেন, “তার সৃষ্টিকুশলতা উত্তরপ্রজন্মের লেখকদের জন্য পাথেয় হিসেবে কাজ করবে।”
একাডেমীর সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে শোকসভায় বক্তব্য দেন সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী, আনিসুল হক, প্রকাশক আলমগীর রহমান, কবি আসলাম সানী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, মোহিত কামাল, সংস্কৃতি সচিব সুরাইয়া বেগম প্রমুখ।