somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমান দুনিয়ার সমাদৃত ও নন্দিত শীর্ষস্থানীয় ইসলামী চিন্তাবিদ, মিশরের আলোচিত ক্ষমতাসীন ইখোয়ানের আধ্যাত্মিক পুরোধা শায়খ ইউসুফ আল কারজাভির বাংলাদেশ সম্পর্কে বক্তব্য

২৪ শে জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার এই বক্তব্য সমাপ্ত করার আগে, বাংলাদেশে আমাদের ভাইদের সম্পর্কে কিছু কথা বলা আমার কর্তব্য। তারা আমাদের মুসলিম ভাই। একটা বিশাল মুসলিম দেশের অধিবাসী। আমাদের ভাইরা বাংলাদেশে আছে, আমাদের ভাইরা পাকিস্তানে আছে, এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও বড় দেশ যারা ভারত থেকে স্বাধীন হয়েছে। এ স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ছিলো ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা। একসময় এদুটি দেশের একসাথে নাম ছিলো পাকিস্তান; পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তান এরপর স্বাধীন হয়ে নতুন নাম ধারণ করে, বাংলাদেশ। এদেশে এমন সরকার ছিলো যারা ছিলো ইসলামের নিকটবর্তী, আবার কখনো এমনও সরকার এসেছে যারা ইসলাম থেকে অনেক দূরে। দু:খনজকভাবে, ইসলাম থেকে দূরবর্তী সরকারগুলো সাধারণ মানুষকেও ইসলাম থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা করছে।

এটি মুসলিম জাতি, এ জাতি ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু চায় না, যখন তারা ভারতবর্ষ থেকে আলাদা হয়েছিলো, তারা নিজেদের ইসলামী পরিচয় প্রতিষ্ঠা করার জন্যই স্বাধীন হয়েছিলো। অথচ আওয়ামী লীগের সরকার এই জনগণকে ইসলাম থেকে, ইসলামী শরীয়াত থেকে, মুহাম্মদ সা: এর প্রদর্শিত বিধান থেকে, আল কুরআনের বিধান থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার সব চেষ্টা করছে। এই দল জনগণকে, মুসলিম উম্মাতকে ইসলামের সরল পথ থেকে, সঠিক পথ থেকে সরিয়ে নিতে চায়। অথচ এই সত্যের দিকে আল্লাহই মানবজাতিকে পথনির্দেশনা দিয়েছেন। এই দল চায় বাংলাদেশকে আরব বিশ্ব থেকে পৃথক করে আন্তর্জাতিক জাতিগত নিসঙ্গতা তৈরী করতে, এবং এমন সব বিষয় তাদের সমাজে চালু করতে যা থেকে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে নিষেধ করেছেন। আমরা ঐসব নির্যাতিত মানুষদেরকে বলবো, হে জাতি, তোমরা অবিচল থাকো। মুসলিম উম্মাহ কখনোই তোমাদের থেকে দূরে না। তারা তোমাদেরকে আপন মনে করে। তোমরা মুসলিম উম্মাহর অংশ, এবং মুসলিম উম্মাহ তোমাদের মতো মানুষদের মাধ্যমেই গঠিত, এই উম্মাহ থেকে দূরে সরে যাওয়া বৈধ না। এই সরকারের জন্য জায়েয না ঐদেশের মুসলিম জাতিকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া। বরং ইসলাম হলো তোমাদের প্রাণশক্তি, জীবনের মূল কথা। ইসলাম হলো উম্মাহর জীবনশক্তি। এই দ্বীন ছাড়া উম্মাহর কোন জীবন নেই।

আর যদি এ উম্মাহ কে ইসলামকে দূরে সরিয়ে নেয়া হয়, এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের পথে চালানো হয়, যে মতবাদ ইসলামকে শরীয়াতনির্ভর জীবনব্যাবস্থা হিসেবে স্বীকার করেনা, মানবজীবনে ইসলামের প্রভাবকে স্বীকার করেনা, মানুষের চরিত্র বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকাকে স্বীকার করেনা, আইন প্রনয়ণে ইসলামের ভূমিকাকে স্বীকার করেনা, আমরা ঐ মতবাদকে প্রত্যাখ্যান করি। ঐ সরকার একজন সম্মানিত ইসলামী ব্যাক্তিত্বকে কারাগারে বন্দী করেছে, অধ্যাপক গোলাম আযম, তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে মর্যাদাবান ব্যাক্তিত্বদের একজন, এবং তার বয়স হয়েছে উননব্বই বছর, তিনি এখন হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে মজবুর হয়ে পড়েছেন, অথচ তাকে তারা বন্দী করেছে, অথচ বন্দীজীবনের কাঠিন্য সহ্য করতে তিনি স্বাস্থ্যগতভাবে অক্ষম, একজন মানুষ হুইল চেয়ারে চলাফেরা করেন, নিয়মিত ঔষধ খেয়ে বেঁচে আছেন, ঐ লোকগুলো এই মানুষটার উপর জুলুম করছে, তাকে অন্যায়ভাবে বন্দী করেছে, তাকে কারাগারে নিয়ে গিয়েছে, তাঁর সাথে অসম্মানজনক আচরণ করেছে।

আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আহবান জানাই, আপনারা নাগরিকদের অধিকার প্রসঙ্গে আল্লাহকে ভয় করুন। যে দায়িত্ব আপনাদের উপর আমানত হিসেবে দেয়া হয়েছে তা পালন করতে গিয়ে আল্লাহকে ভয় করুন। এ বিশাল জাতির প্রতি দায়িত্ব পালনে আল্লাহকে ভয় করুন। মহান ধর্ম ইসলামের প্রতি সম্বোধনের ক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করুন। এই জাতির সন্তানদের অধিকার যথাযথভাবে আদায় করুন, এই মহান ব্যাক্তিত্ব গোলাম আযমকে মুক্ত করে দিন, আমরা দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে জানি তিনি সারাজীবন ইসলাম ও উম্মাহকে বাঁচানোর জন্য উত্তম চেষ্টা করেছেন, আপনারা তাকে অভিযুক্ত করছেন যে তিনি আলাদা দেশ গঠনের বিপক্ষে ছিলেন, অথচ প্রচুর বরং প্রায় সব মানুষই তখন পৃথক একটা দেশ গঠনের বিপক্ষে ছিলো, পাকিস্তানকে ভেঙ্গে আলাদা দেশ বানানোর উদ্দেশ্য মূলত কারোরই ছিলোনা প্রথমে।

আশ্চর্য, এই মানুষগুলোর কোন দায়িত্ববোধ নেই, কোন বিবেক নেই, কোন সুস্থবুদ্ধি নেই, আমরা তাদেরকে আহবান জানাই আল্লাহকে ভয় করার জন্য, তাদের জাতির মাঝে সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য, এই মানুষটি, প্রফেসর গোলাম আযমের প্রতি যথাযথ আচরণ করার জন্য, তাকে মুক্ত করে দেয়ার জন্য। যদি তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিচার করতে হয়, তাহলে ন্যায়বিচার করুন। ক্যাঙ্গারু কোর্টের মাধ্যমে অন্যায় বিচারের প্রহসন করবেন না, ইচ্ছেমতো তুলে নিয়ে গিয়ে বন্দী করে তারপর হত্যা করবেন না। কেন আপনারা এ মানুষটিকে তিলে তিলে হত্যা করছেন? তিনি কাকে হত্যা করেছেন যে তাকে হত্যা করতে হবে? তিনি কি কাজ করেছেন যে তাকে অন্যায়ভাবে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে? আমরা আমাদের বাংলাদেশী মুসলিম ভাইদের জন্য এ দোয়াই করছি। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি যেন তিনি ঐ মানুষদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন, সত্য বুঝার সামর্থ্য দেন। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি

Click This Link

৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×