somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নোয়াখালী সমাচার

২৪ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাঙ্গেয় পলিমাটি সমৃদ্ধ উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী। এ উর্বর অঞ্চল এক সময় সমতট নামে সুপরিচিত ছিলো। সহস্র বছর ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগের কারণে ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিলো এ অঞ্চল। পত্তন হয় ভুলুয়া ষ্টেটের। সে থেকে ভুলুয়া পরগণা হিসেবেই এ অঞ্চল প্রসিদ্ধি লাভ করে। ভুলুয়া বন্দরের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়। শিক্ষা দীক্ষা, জ্ঞানে মানে এলাকার মানুষ প্রভুত উন্নতি লাভ করে।

নিঝুম দ্বীপ
মেঘনার মোহনায় সমুদ্রের উদার স্পর্শে এ এলাকার মানুষগুলো হয়ে উঠে উদার হৃদয়, আতিথি পরায়ণ আর কর্মঠ। বিক্ষুব্ধ সাগর ডিঙ্গিয়ে এদেশের মানুষ পাড়ি দিয়েছিলো দেশ বিদেশে। স্বভাবেও এ অঞ্চলের মানুষ স্বাধীন চেতা ও দৃঢ় চিত্তের আধিকারী। নানা দেশের সূফী দরবেশ আর জ্ঞানীদের আগমন ঘটেছিলো এই অঞ্চলে। কাল ক্রমে এর নাম করণ করা হয় নোয়াখালী। আরবীয় ইংরেজ আর গ্রীক সভ্যতার মিশ্রনে নোয়াখালী শহর গড়ে উঠেছিলো এক অপরুপ রুপসী সাজে। কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই আবিশ্বাস্যভাবে ভাঙ্গন শুরু হয় এ জনপদের। যে রুপময় মেঘনার তীরে গড়ে উঠেছিলো সে সময়ের সমৃদ্ধ জনপদ সে মেঘনাই এক সময় রাক্ষুসী রূপ ধারণ করে। মাইলের পর মাইল সেই ঐতহ্যবাহী জনপদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেই সাথে বিলীন হয়ে যায় হাজার বছর ধরে গড়ে উঠা সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্যের চিহ্ন। ছিন্ন ভিন্ন হয়ে পড়ে কোলাহলময় এ লোকালয়। বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যায় অসংখ্য গৌরব গাঁথা অধ্যায়। ভাঙ্গাগড়ার অমোঘ বাত্যাবয়নে জেলার ভৌগোলিক ইতিহাসও বাঁক নিয়েছে নানান ভাবে। তবুও কখনো থেমে থাকেনি এর চলার গতি। এখন এই জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। বর্তমান নোয়াখালী জেলা একসময় ফেনী, লক্ষীপুর এবং নোয়াখালী জেলা নিয়ে একটি জেলা বা বৃহত্তর অঞ্চল ছিল, যা এখনও বৃহত্তর নোয়াখালী নামে পরিচিত



ইতিহাস
নোয়াখালী জেলার প্রাচীন নাম ছিল ভুলুয়া। নোয়াখালী সদর থানার আদি নাম সুধারাম। নোয়াখালী নামের উত্পত্তি নিয়ে নানা জনের নানান মত রয়েছে। তবে ইতিহাসবিদদের ভিতর সবচেয়ে যে মতটি প্রচলিত তা হলো. একবার ত্রিপুরা-র পাহাড় থেকে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদীর পানিতে ভুলুয়া-র উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভয়াবহভাবে প্লাবিত হয় ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসাবে ১৬৬০ সালে একটি বিশাল খাল খনন করা হয়, যা পানির প্রবাহকে ডাকাতিয়া নদী হতে রামগঞ্জ, সোনাইমুড়ী ও চৌমুহনী হয়ে মেঘনা এবং ফেনী নদীর দিকে প্রবাহিত করে। এই বিশাল নতুন খালকে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় “নোয়া (নতুন) খাল” বলা হত, এর ফলে “ভুলুয়া” নামটি একসময়ে পরিবর্তিত হয়ে ১৬৬৮ সালে হয়ে যায় “নোয়াখালী”।

নিঝুম দ্বীপের মায়াবী হরিণ
নোয়াখালীর ইতিহাসের অন্যতম ঘটনা ১৮৩০ সালে নোয়াখালীর জনগণের জিহাদ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও ১৯২০ সালের খিলাফত আন্দোলন। বৃটিশ ভারতের শেষ দিকে নোয়াখালীর রামগঞ্জে এক ভয়াবহ জাতিগত দাঙ্গা সংঘটিত হয়। সে দাঙ্গা বা রায়টের পর ১৯৪৬ সালে মহাত্মা গান্ধী নোয়াখালীতে আগমণ করেন। এখানে তিনি জাতিগত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গ্রামে গ্রামে ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন। বর্তমান সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ নামক স্থানে গান্ধীজির নামে একটি আশ্রম রয়েছে, যা “গান্ধী আশ্রম” নামে পরিচিত। ১৭৯০ সালের পর হতে নোয়াখালী জেলা বহুবার ঘুর্ণিঝড়, বন্যা, টর্নেডো, সাইক্লোন ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে পতিত হয়। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে নোয়াখালী উপকূল লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিলো। তখন সমগ্র উপকূলে প্রায় ১০ লক্ষ লোকের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে বহু রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে নোয়াখালীর মাটি রঞ্জিত হয়ে আছে। সে সময়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিরিহ নিরস্ত্র মানুষকে বিভিন্ন ক্যাম্পে ধরে নিয়ে অকথ্য নির্যাতনের পর হত্যা করে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গণহত্যা চালায়। ১৯৭১ এর ১৫ই জুনে সোনাপুর আহমদীয়া স্কুল সংলগ্ন শ্রীপুরে নিরিহ গ্রামবাসীর উপর অতর্কিত এসে হামলা করে মেশিনগান চালিয়ে প্রায় শতাধিক নারী পুরুষকে হত্যা করে। এ সময় তারা শুধু মানুষ হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, সমগ্র গ্রামটিও তারা জ্বলিয়ে দিয়েছিলো। ১৯৭১ সালের ১৯ আগস্ট পাকবাহিনী বেগমগঞ্জ থানার গোপালপুরে গণহত্যা চালায়। নিহত হন প্রায় ৫০ জন নিরস্ত্র মানুষ। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা আসীম সাহসিকতায় যুদ্ধ করে নোয়াখালী জেলা শত্রু মুক্ত করে।



ভৌগলিক সীমানা
চট্টগ্রাম প্রশাসনিক বিভাগের অধীন নোয়াখালী জেলার মোট আয়তন ৩৬০১ বর্গ কিলোমিটার। নোয়াখালী জেলার উত্তরে কুমিল্লা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা এবং পশ্চিমে লক্ষীপুর ও ভোলা জেলা অবস্থিত। বছরব্যাপী সর্বোচ্চ তাপমাত্রার গড় ৩৪.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় ১৪.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বছরে গড় বৃষ্টিপাত ৩৩০২ মিমি। এই জেলার প্রধান নদী বামনি এবং মেঘনা।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
নোয়াখালী জেলায় ৯ টি উপজেলা রয়েছে। এগুলো হলো: নোয়াখালী সদর, বেগমগঞ্জ, চাটখিল, কোম্পানীগঞ্জ, হাতিয়া, সেনবাগ, কবির হাট, সুবর্ণ চর ও সোনাইমুড়ি নোয়াখালীর শহর নোয়াখালী সদর মাইজদি ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। আদম শুমারীর সর্বশেষ তথ্য আনুযায়ী শহরের মোট জনসংখ্যা ৭৪,৫৮৫; এর মধ্যে ৫১.৫০% পুরুষ এবং ৪৮.৫০% মহিলা; জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫৯১৫। শহুরে লোকদের মধ্যে শিক্ষিতের হার প্রায় ৬০.৭০%। নোয়াখালী সদরের আদি নাম সুধারাম। ১৯৪৮ সালে যখন উপজেলা সদর দফতর মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে যায়, তখন তা ৮ কিলোমিটার উত্তরে সরিয়ে বর্তমান মাইজদিতে স্থানান্তর করে হয়। তখন থেকে সম্পুর্ন নতুন ভাবে গড়ে উঠে নোয়াখালী শহর যা ‘মাইজদী শহর’ নামেও পরিচিত। চৌমুহনী নোয়াখালীর আরেকটি ব্যস্ত শহর ও বাণিজ্য কেন্দ্র, যা একসময়ে মুদ্রণ ও প্রকাশনা ব্যবসার জন্য বিখ্যাত ছিল। সরিষার তেলের মিলের জন্যও সমগ্র দেশে এ বানিজ্য কেন্দ্রটির সুখ্যাতি ছিলো। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট শহরটি দ্রুত বেড়ে উঠছে এবং এটি এখন একটি ব্যস্ত শহরের রুপ নিচ্ছে । এই শহরের অধিবাসীদের একটি বড় অংশ কাজের জন্য আমেরিকা কিংবা মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। এ অঞ্চলের যুগদিয়াতে এক সময় একটি ব্যাস্ত নৌবন্দর ছিলো যা বৃটিশ ভারতে লবণের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলো। এখান থেকেই জাহজ বোঝাই হয়ে পাট এবং লবণ ইংল্যান্ডে রফতানী হতো। জনশ্রুতি আছে এখানে এক সময় যুদ্ধ জাহাজ তৈরী হতো এবং তা সারা বিশ্বে রফতানী হতো।

অর্থনীতি
বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায়, নোয়াখালী জেলার মোট আয় ৩৭৮ কোটি টাকা (১৯৯৯-২০০০)। জেলার মোট আয়ের ৪৮% আসে চাকরি বা সেবামূলক খাত থেকে। অপরদিকে আয়ের মাত্র ১৭% আসে শিল্পখাত থেকে। নোয়াখালী জেলার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬ শতাংশ হারে হচ্ছে। নোয়াখালী জেলার মানুষের মাথা পিছু আয় ১৩,৯৩৮ টাকা (১৯৯৯-২০০০)। এ জেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। তাদের পাঠানো বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা জাতীয় আয়কেও সমৃদ্ধ করছে।

চিত্তাকর্ষক স্থান

নিঝুম দ্বীপের একটি নৈসর্গিক চিত্র
নোয়াখালী জেলার দক্ষিণে অবস্থিত নিঝুম দ্বীপ দর্শনীয় স্থান হিসাবে দিন দিন খ্যাতি লাভ করছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু উপযোগী শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, দৃষ্টি নন্দন বজরা শাহী মসজিদ, সোনাপুরে লুর্দের রাণীর গীর্জা, উপমহাদেশ খ্যাত সোনাইমুড়ির জয়াগে অবস্থিত গান্ধি আশ্রম, নোয়াখালীর উপকূলে নতুন জেগে উঠা চরে বন বিভাগের সৃজনকৃত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, মাইজদী শহরে অবস্থিত নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ , নোয়াখালী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, মাইজদী বড় দীঘি, কমলা রাণীর দীঘি, হরিণারায়ণ পুর জমিদার বাড়ি প্রভৃতি দর্শনীয় স্থান হিসাবে উল্লেখযোগ্য।

উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
শিক্ষাদীক্ষায় নোয়াখালীর সুখ্যাতি বহু দিনের। সুদুর অতীতকাল থেকেই নোয়াখালী আঞ্চলের মানুষ জ্ঞান লাভের উদ্যেশে দেশ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলো। তখন থেকেই এ আঞ্চলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। কর্তমানেও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করে চলছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য – নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় -সোনাপুর নোয়াখালী, নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চৌমুহনী এস এ কলেজ, নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় -মাইজদি, সোনাপুর ডিগ্রি কলেজ – সোনাপুর, অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় – মাইজদি বাজার, হরিণারায়ন পুর উচ্চ বিদ্যালয় – হরিণারায়নপুর, নোয়াখালী সরকারি কলেজ, বিদ্যানিকেতন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় – মাইজদি বাজার, জেলার অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নোয়াখালী জিলা স্কুল , ব্রাদার আন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয় – সোনাপুর, পৌর কল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় – মাইজদী,এম এ রশিদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় – মাইজদী, আহমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাপুর, নোয়াখালী আইন মহাবিদ্যালয় – মাইজদী, নোয়াখালী পাবলিক কলেজ – মাইজদী, চৌমুহনী মদন মোহন উচ্চ বিদ্যালয় – চৌমুহনী, বেগমগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় – বেগমগন্জ, গণিপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় – গণিপুর, চৌমুহনী, চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ – চৌমুহনী, চৌমুহনী টেকনিক্যাল স্কুল, নোয়াখালী কৃষি ইন্সিটিউট – বেগমগঞ্জ, টেক্টাইল ইন্সটিটিউট, নোয়াখালী যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ট্যাকনিক্যাল ইন্সটিট্উট, গাবুয়া। মাইজদী ম্যাডিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেইনিং স্কুল। বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ- কোম্পানীগঞ্জ, বসুরহাট সরকারি এ এইচ সি উচ্চ বিদ্যালয়, বসুরহাট ইসলামিয়া সিনিয়র আলীয়া মাদ্রাসা, কোম্পানীগঞ্জ মডেল স্কুল (কেজি), বামনী আছিরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, , কামাল আতাতুর্ক হাই স্কুল, দাগনভূঁয়া, কবির হাট কলেজ, হাতিয়া ডিগ্রি কলেজ, হাতিয়া হাই স্কুল, প্রভৃতি।নতুন ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ
উল্লেখযোগ্য সংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান
জেলার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র -নোয়াখালী জেলা শিল্পকলা একাডেমি শিশু কিশোরদের শিল্প সংস্কৃতি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র- নোয়াখালী শিশু একাডেমি, নোয়াখালী মৌমাছি কচিকাঁচার মেলা, নোয়াখালী জেলা উদীচী শিল্পি গোণ্ঠী, নোয়াখালী জেলা উদীচী কর্তৃক পরিচালিত আলতাফ মাহমুদ সংগীত বিদ্যালয়, ললিতকলা সংগীত বিদ্যালয়, মোহাম্মদ হাসেম সংগীত বিদ্যালয়। এছাড়াও প্রত্যেক উপজেলায় রয়েছে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।



নোয়াখালী থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র
নানান সীমাবদ্ধতার ভিতরে নোয়াখালী সংবাদ পত্র গুলো প্রকাশিত হয়। তবে কোনো পত্রিকাই এখন পর্যন্ত নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছেনা। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবই এর প্রধান কারণ। তবুও অনেক বাধাবিপত্তি সত্তেও কিছু পত্রিকা অনিয়মিত হলেও প্রকাশিত হয়ে আসছে। তার মধ্যে উল্লখযোগ্য, দৈনিক জাতীয় নিশান, দৈনিক জনতার অধিকার, দৈনিক জাতীয় নূর, পাক্ষিক লোকসংবাদ, নোয়াখালী কন্ঠ, নোয়াখালী মেইল, সাপ্তাহিক চলমান নোয়াখালী প্রভৃতি

অনলাইন পত্রিকা
আধুনিক বিশ্ব তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। নোয়াখালীও এর থেকে পিছিয়ে নেই। তথ্যপ্রযুক্তির এ প্রসারের যুগে নোয়াখালীতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।এখান থেকে বিপুল সংখ্যক তরুণ প্রজন্ম কম্পিউটার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর অনলাইন পত্রিকা। বেশ কিছু অনলাইন পত্রিকা অন লাইনে নিয়মিত প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের একুশের প্রথম প্রহরে যাত্রা শুরু করে অনলাইনপত্রিকা ‘নোয়াখালী নিউজ’। লে-আউটের মেকআপসহ পুরো সাইটটি অত্যন্ত সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। দেখলে মনে হবে না যে, এটি কোনো অঞ্চলভিত্তিক নিউজপোর্টাল্। ইতোমধ্যে দেশ বিদেশের বিপুল সংখ্যক পাঠক এ সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করা শুরু করেছেন।

উন্নয়ন সংগঠন
নোয়াখালীতে বেশ কিছু বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা স্থানীয় উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছে। তাদের মধ্যে অন্যতম, গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট, নোয়াখালী পল্লি উন্নয়ন সংস্থা-এন.আর.ডি.এস, বন্ধন, রিমোল্ড, পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশন নেটওয়ার্ক- প্রান, সাগরিকা, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা, উপমা, এনরাস, ঘর, তথ্য প্রযুক্তি প্রসারে কর্মরত-দিগন্তের ডাক প্রভৃতি।

নোয়াখালীর উন্নয়নে সম্ভাবনা
খুবই ধীর গতিতে নোয়াখালীর উন্নয়নের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এজেলায় কোনো বড় শিল্প কারখানা নেই। তবে বর্তমানে কিছু শিল্প গোষ্ঠী এ জেলায় শিল্প প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এসেছে। এখানের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা জেলার ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। বছরের প্রায় অর্ধক সময় জেলার অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন থাকে। তাই উন্নয়নের কাজও বাধাগ্রস্ত হয়। এর জন্য নোয়াখালী খালই প্রধান দায়ি বলে অনেকে মনে করেন। এ খাল সঠিকভাবে খনন করতে পারলে যেমন জলাবদ্ধতা দূর হবে তেমন করে কৃষি উন্নয়নেও এর ভূমিকা থাকবে। তাছাড়া এ খালের পানি প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে নৌ-যোগাযোগ ও পর্যটন শিল্পও প্রসার ঘটবে। ইতিমধ্যই জেলায় কিছু উন্নয়নের কাজ হাতে নেয়া হয়েছ। এর মধ্যে নোয়াখালী-লাকসাম সড়কটি প্রসস্ত করা হচ্ছে, নোয়াখালী মেডিকেল কলেজের কর্মসূচীও এ বছর থেকে শুরু হয়েছে। সোনাপুর থেকে চরজব্বর পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। নিঝুমদ্বীপকে ঘিরে একটি ব্যাপক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য নানান সময় বিভিন্ন মহল থেকে দাবী উঠেছে। প্রকৃতির অপার কৃপায় নোয়াখালীর দক্ষিনে সাগর থেকে জেগে উঠছে বিপুল পরিমান নতুন নতুন ভূমি। সঠিক ভাবে এ ভূমিগুলো কাজে লাগিয়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহন করা যায়।
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×