somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদ্যুতের মিটার রিডারদের কেরামতি

২৩ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিদ্যুৎ এক মহা মূল্যবান জিনিস আমাদের জীবনে। আজকালকার যুগে বলতে গেলে আমরা ও সভ্যতা প্রায় ৯৫% বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। এই মহা মূল্যবান জিনিসকে নিয়ে আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনে হয়রানির যেন শেষ বলতে কিছুই নেই। আর বিভাগে দুর্নীতিরও বালাই নেই। প্রকৌশলী থেকে শুরু করে লাইন ম্যান সকলেই দুর্নীতির ভারে ভারাক্রান্ত।

গত মার্চে বিদ্যুত বিল বৃদ্ধির পর থেকে তারা যেন আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন, বিশেষ করে মিটার রিডার'রা। ব্যাবহারের সীমা বেঁধে দেওয়ায় এখন এই মিটার রিডারদের আনন্দের সীমাও চরমে। কারন এতে সামান্য ব্যবহার বৃদ্ধিতে গ্রাহককে দুই থেকে তিনগুণ বেশি বিল দিতে হচ্ছে। আর এই সুযোগে মিটার রিডার'রাও মিটার পরিদর্শন না করেই অফিসে বসে ইচ্ছামত ইউনিট তুলে দিচ্ছেন ভোক্তাদের বিলে। কোম্পানি এবং গ্রাহকের মধ্যে কাজ করা মিটার রিডারদের পকেটে চলে যাচ্ছে এই অতিরিক্ত অর্থ। উৎকোচের বিনিময়ে মিটার রিডার গ্রাহকের বিল এখন কম দেখিয়ে শীতে গিয়ে সমন্বয় করে দিচ্ছে। আবার কারও বিল এখন বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে করে সার্বিক রাজস্ব আদায় ঠিক থাকছে। কিন্তু মিটার রিডাররা অবৈধভাবে অর্থ আয় করছে ঠিকই।

ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৪০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুত ব্যবহার করলে তাকে সাত টাকা ৮৯ পয়সা করে বিল দিতে হবে। কিন্তু ৪০০ ইউনিটের নিচে থাকলে তাকে চার টাকা ২৯ পয়সা করে বিল দিতে হবে। এক থেকে ১০০ ইউনিটের জন্য তিন টাকা ০৫ পয়সা করে বিল দিতে হবে। যেসব গ্রাহক মিটার রিডারদের প্রস্তাবে রাজি হচ্ছে তাদের ব্যবহার ৪০০ ইউনিটের কম থাকছে। আবার অনেকে ৪০০ ইউনিট ব্যবহার না করেও তাকে ৪০০ ইউনিটের ওপরের বিল দিতে হচ্ছে। কাগজে কলমে নিয়ম রয়েছে গ্রাহকের উপস্থিতিতে মিটার রিডিং নেয়ার কিন্তু তারা যে কখন এসে রিডিং নিয়ে যান তা হয়তো অধিকাংশ গ্রাহকেরই জানা নেই।

ডিজিটাল মিটার প্রবর্তনের পর অনেকেই ভেবেছিলেন এখন হয়তো তাদের আর গায়েবী বিল দিতে হবে না কিন্তু ডিজিটালের মধ্যেই যে সুক্ষ চুরির সুযোগ লুকানো তা হয়তো আমিও জানতাম না। গত ১৮/৫/২০১২ তারিখে বাসার নিচে মোটর সাইকেলটি পার্ক করতে গিয়ে হঠাত করে চোখ পরে যায় মিটারটির দিকে কারন সেটি বেশ অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় ছিল। সেটি পরিষ্কার করে একবার চোখ বুলালাম ইউনিটের দিকে, কারন সচরাচর ওদিকে তাকানো হয় না। দেখলাম ২৫৮০০ ইউনিট উঠে আছে। যাই হোক না কেন পরের মাসে যখন বিদ্যুতের বিল আসলো সেখানে লেখা দেখলাম মিটার রিডার উক্ত তারিখে ২৫৯৫০ ইউনিট বিল দেখিয়েছে। মোটের উপর আমার ব্যাবহার কৃত ইউনিটের চেয়ে ১৫০ ইউনিট বেশী। তৎক্ষণাৎ বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলাম তারা জানালো তাদের হিসাবই সঠিক। কিন্তু আমার যে ৪০০ ইউনিট এর পরে আরো ১৫০ ইউনিটের অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে তাতে তাদের না কি কিছুই করার নেই। অবশেষে সব মেনে গত মাসের ১৫ তারিখ থেকে অপেক্ষা করতে লাগলাম কিন্তু ২৫ তারিখ পর্যন্তও ক্ষমতাধর রিডারের কোন দেখা মিলল না আমাদের পুরো এলাকায়। অফিসে গিয়ে কারন জানতে চাইলে রিডার বলল তাদের কাছে না কি হিসাব আছে কোন গ্রাহক কত ইউনিট ব্যাবহার করে থাকেন আর ভিত্তিতেই মুখস্থ বিল প্রস্তুত করেন তারা।

এই হলো বিদ্যুতের মিটার রিডারদের কেরামতি। তারা চাইলে আপনাকে কোটিপতিও করে দিতে পারে আবার রাস্তার ভিখারি বানাতেও পারে। সবই তাদের মর্জি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×