somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন তাজউদ্দিন আহমেদ

২৩ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তাজউদ্দিন আহমেদ! বাংলাদেশের ১ম প্রধানমন্ত্রী। যিনি তার শ্রম ও মেধার সাহায্যে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ১৯৭১ সালে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন করেছেন আমাদের প্রিয় স্বদেশ। আজ ২৩ শে জুলাই তার ৮৭তম জন্মদিন। তাই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমাদের এই মহান জাতীয় নেতাকে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যিনি ছিলেন আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক, আমাদের পথ-প্রদর্শক।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর ১৯৭১ সালের ২২শে ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ বাংলাদেশ সরকারের নেতৃবৃন্দ ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসলে তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৩-এ ঢাকা-২২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন৷ বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় বাজেট পেশ করেন, প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন।
নতুন দেশে নেতা কর্মীদের সাথে দলের, আর জনগণের সাথে সরকারের দূরত্ব বাড়তে থাকে৷ ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের সমাপনী অধিবেশনের বক্তৃতায় তিনি দল, সরকার এবং নেতা ও কর্মীদের মাঝে দূরত্ব দূর করে, সংগঠন এবং সরকারের মাঝে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভবিষ্যত্‍ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান৷
এদিকে সুবিধাভোগী, দূর্নীতিপরায়ণ, চাটুকার রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের নির্লজ্জ তত্পগরতা বেড়েই চলে৷ শেখ মুজিবের সাথে তাজউদ্দীন আহমদের দূরত্ব বাড়তে থাকে৷ তাঁদের মাঝে নীতিগত বিরোধ দেখা দেয়৷ তাঁদের সুন্দর সম্পর্কে ফাটল ধরে৷
তাজউদ্দিন আহমেদ নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন৷ তিনি ছিলেন মনে প্রাণে দেশ প্রেমিক৷ চাইতেন না কোনোদিনই তাঁকে জড়িয়ে এমন কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হোক যা থেকে জাতির বৃহত্তর স্বার্থের কোনো ক্ষতি হয়৷ তাই ১৯৭৪ সালের দুর্ভিহ্মের পর বঙ্গবন্ধু যখন সমাজতন্ত্র তথা একদলীয় বাকশাল গঠন করতে শুরু করে তখন গনতন্ত্রকামী তাজউদ্দিন বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এভাবে একাত্তরের রক্ষক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সফল নেতা মন্ত্রীসভা থেকে বিদায় নিলেন স্বাধীনতা লাভের মাত্র ২ বছর ১০ মাসের মাথায়৷ পদত্যাগ করার পূর্বে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাছে একটি চিঠি লিখেন, সেখানে তিনি বলেন, "যে দেশের মানুষ গনতন্ত্রের জন্য চিরকাল সংগ্রাম করেছে সেই দেশের মানুষ শাসনকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে রাজনীতির এই পরিবর্তন কথনো মেনে নিবে না।"
তার এই পদত্যাগের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি এক জন মানুষ কতটুকু সৎ, মেধাবী, র্নিলোভ হলে হ্মমতা পাওয়ার পর তা আটকে না ধরে/ অপব্যবহার না করে হ্মমতা থেকে দূরে সরে থাকা যায়!

জনাব তাজউদ্দিন আপনি সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন, নিজের জন্য কিছুই করেন নি অথচ আমাদের দেশের এখনকার রাজনীতিবিদদের দেখুন, কয়েক জন ছাড়া বাকি সবাই কোটি টাকার গাড়ি করে সংসদে আসে, কোটি টাকার ব্যবসা-বানিজ্য তাদের। তাদের মধ্যে কয়েক জন আছে খুনি, আছে কলোবাজারি। বড় বেমানান ছিলেন আপনি! আমাদের মধ্যে অনেকেই বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করে, ৭২' থেকে ৭৫' এর বঙ্গবন্ধু সরকারের সমালোচনা করে, তারা কেউ আপনার সমালোচনা করার সাহস পায় না। কারণ, আপনি ছিলেন স্রোতের বিপরীতের একজন!

জনাব তাজউদ্দিন সাহেব যে স্বপ্ন নিয়ে আপনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে জড়িয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য সংগ্রাম করেছেন, যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন, জানিনা আপনার সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা? জানিনা যে স্বাধীন সার্বভ্রোম বাংলাদেশের জন্য আপনি ৫২' থেকে ৭০' পর্যন্ত চার বার কারাবরণ করেছিলেন সত্যিকারে আমরা সেই দেশ পাব কিনা?

তবে জনাব তাজউদ্দিন আপনাকে বলতে চাই আপনার স্বপ্নের, পরিশ্রমের বাংলাদেশে আমরা তখন পাব যখন দেখবো শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া রাজাকারদের সাথে সর্ম্পক ছিন্ন করেছে এবং হ্মমতায় যাওয়ার জন্য কোন যুদ্ধাপরাধীদের সাথে হাত মেলায়নি অন্যথায় তাদের উপরোক্ত কাজের জন্য পরবর্তী প্রজন্ম তাদের কে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে!!!!

ব্যক্তিগত জীবনে তাজউদ্দিন আহমেদ অত্যন্ত সরল মনের মানুষ ছিলেন। বড় সাদা সিধে ছিল তার জীবন। তাজউদ্দিন আহমেদ ও তার কর্ম জীবন সর্ম্পকে খুব সুন্দর ও বিস্তারিত জানা যাবে ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের এই লেখা থেকে View this link

ড. আনিসুজ্জামানের লেখা "তাজউদ্দীন আহমদের স্বদেশভাবনা" View this link

এছাড়া সিমিন হোসেন রিমিন এর লেখা গুলো দেখতে পারেন View this link

View this link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×