somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাথমিক পাঠ, হুমায়ূন আহমেদ ও কাজি আনোয়ার হোসেন

২৩ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বই পড়া শুরু ৬ বছর বয়সে রাশিয়ান বই দিয়ে। ঐ বইটার কথা এখনও মনে আছে, "“সিভকা বুরকা জাদুকা লেড়কা চেকনাই ঘোড়া সামনে এসে দাঁড়া”" বইটির নাম অবশ্য ভুলে গেছি। এরপরে একে একে পড়েছি আরও অনেক শিশুতোষ রাশিয়ান বই, ঠাকুরমার ঝুলি, বাংলাদেশি কিছু বই, বাংলা একাডেমীর প্রকাশিত “শিশু” পত্রিকা, “নবারুন” পত্রিকা। শিশু পত্রিকাতেই প্রথম পড়ি হুমায়ূন আহমেদের গল্প। নাম "বোতল ভুত"। এখনও মনে আছে গল্পটির কাহিনী। একটা লাইন ছিল এরকম "বল নেই আছে পাম্পার, শার্ট নেই আছে জাম্পার"। তবে স্কুলে পড়া বইগুলোর ভিতর রাশিয়ান বইগুলি ছিল অসাধরন।

এভাবেই কেটে গেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ। হাইস্কুলে ওঠার পরে সঙ্গি হল সেবা প্রকাশনির বই, দুর্দান্ত সেই সব দিনগুলি। তিন গোয়েন্দা পড়লাম কয়েক বছর, তারপরে সাথে যোগ হল মাসুদ রানা সিরিজ আর ওয়েস্টার্ন। এডভেঞ্চারের সাথে মাঝে মাঝে বোনাস হিসেবে পাওয়া যেত নায়ক নায়িকার রোমান্সের গল্প। রাশিয়ান বইয়ের বাংলা অনুবাদগুলো তখনও পড়ি; “ঈশকুল”, “মালাকাইটের ঝাঁপি” নামগুলো আমি আমৃত্যু মিনে রাখব। আমাদের খিলগাঁও রেল গেটের এক দোকান থেকে বই ভাড়া করে পড়তাম। প্রতি বইয়ের ভাড়া ১.৫০ টাকা, ১ দিনের জন্য। বই তো শেষ করতে হবে ১ দিনেই। দেরি হলে ৫০ পয়সা জরিমানা। অতএব, সারাদিন বই পড়তাম। বাসায় পড়ার বইয়ের নিচে লুকিয়ে, বাথরুমে বসে, এমনকি জুমার নামাজে মসজিদে গিয়ে খুতবার সময়ও লুঙ্গির ভিতরে লুকিয়ে রেখে বই পড়েছি। বিকেলে বাসা থেকে বের হতাম বৈকালিক ভ্রমন বা খেলাধুলার কথা বলে। কিসের খেলা, মার্কেটের ছাদে গাঁজাখোরদের আড্ডার পাশে বসে চলত আমার বই পড়া অবিরাম। ক্লাসে বসেও সারাদিন শুধু গল্পের বই পড়া। মাসুদ রানা পড়তাম বেশি। স্কুলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া কর্মসূচীর মাধ্যমেও পড়েছিলাম বিশ্ব সাহিত্যের সেরা ২০ টি বই। হাইস্কুলেই ভারতীয় 3S (Sunil, Samaresh, Shirsendu) এর কিছু বই পড়লাম। হুমায়ুন আহমেদের বই ব্যপক হারে পড়া শুরু করলাম এরপর থেকে। লেখা একদম আলাদা। আমাকে হাসায়, কাঁদায়। একবার হিমুর প্রেমে পরি তো পরের দিন রুপার। হুমায়ূন আহমেদের ১০০ এর বেশি বই পড়া শেষ করলাম ৪/৫ মাসে। এরপরে ঐ লাইব্রেরীতে আর হুমায়ূন আহমেদের বই ছিল না।

আমি বলব না হুমায়ূন আহমেদ এর বইয়েই আমার পাঠক জীবন বা বই প্রেম শুরু। তবে তার বইগুলো পড়ে বাংলা বইয়ের প্রতি আগ্রহ বেড়েছিল অনেক নিঃসন্দেহে। আজকে যে আকবর আলি খানের “পরার্থপরতার অর্থনীতি” বা “অন্ধকারের উৎস থেকে” পড়বার সাহস করি, সেই ভিত্তির অন্যতম কারিগর হুমায়ূন আহমেদ এবং কাজি আনোয়ার হোসেন। সেই বইগুলো পড়ে বইয়ের ছাপা অক্ষরের আনন্দ না বুঝলে, পাঠক হিসেবে এতদূর আসা হতো না কোনোক্রমেই। কারন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার গাঁথুনি খুব মজবুত না হলে কেঊ উচ্চতর শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ১১:৪৭
১৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×