somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিয় মানুষদের কাছে লেখা হুমায়ূন আহমেদের শেষ চিঠি

২২ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৯:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





‘হে বন্ধু, হে প্রিয়,ডাক্তারের কঠিন নিষেধ, বেশি মানুষের ভিড়ে যাওয়া যাবে না। তারপরও সবাইকে নিয়ে ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ দেখার লোভ সামলাতে পারছি না। ছবি দেখে সরাসরি আমাকে গালাগাল করার সুযোগ হেলায় হারাবেন না। আসুন আমার সঙ্গে। ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ দেখুন। বিনীত, হুমায়ূন আহমেদ। কালজয়ী কথাশিল্পী ও নন্দিত নাট্য এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা, সবার প্রিয় হুমায়ূন আহমেদের লেখা এটাই সম্ভবত শেষ চিঠি, যা আমন্ত্রণপত্র হিসেবে তার বন্ধু ও প্রিয়দের হাতে পৌঁছে দিয়েছিল ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ছবির প্রযোজনা সংস্থা ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড। মাত্র তিন সপ্তাহের জন্য দেশে এসেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। এসেই নিজের পরিচালিত শেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ দেখার আগ্রহ প্রকাশ করলেন। তার আগ্রহ পূরণের জন্য ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর দ্রুত ছবিটি হুমায়ূন আহমেদকে দেখানোর ব্যবস্থা করলেন। গত ২৯শে মে মঙ্গলবার বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সে হুমায়ূন আহমেদ, মা, স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ছবিটি দেখলেন। না, ছবি দেখে কেউ হুমায়ূন আহমেদকে গালাগালি করলেন না। বরং প্রশংসা করলেন চমৎকার একটি ছবি নির্মাণের জন্য। সেই সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের লেখা চিঠির আকারে আমন্ত্রণপত্রের প্রশংসা করতেও ভুললেন না। এতো আবেগঘন চিঠি হুমায়ূন আহমেদ বন্ধুদের কখনও লিখেছেন বলে কেউ মনে করতে পারলেন না। তবে সেই চিঠির শব্দ চয়ন আর অমোঘ আকর্ষণের টানে ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ দেখতে এসেছিলেন- দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সরওয়ার, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল সৈয়দ, সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকি, নওয়াজিশ আলী খান, তারিক আনাম খান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, প্রথম আলোর উপ-সম্পাদক আনিসুল হক, জাদুকর জুয়েল আইচ, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আমজাদ হোসেন, আবদুল লতিফ বাচ্চু, অভিনেত্রী নিমা রহমান, মুনিরা বেগম মেমী, তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, প্রাণ রায়, গণসংগীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতিসহ অনেকে। হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ছবির প্রধান চরিত্রের অভিনেতা কিশোর শিল্পী মামুনও এসেছিল। তবে তাকে দেখে অবাক হন হুমায়ূন আহমেদ। বেশ বড় হয়ে গেছে ছেলেটি। হুমায়ূন আহমেদের অবিস্মরণীয় সৃষ্টি হিমু। হিমু হলুদ রঙের পাঞ্জাবি পরে আমন্ত্রিত অতিথিদের হাতে তুলে দেয় হলুদ রঙের রুমাল। সবাই রুমাল নেড়ে অভিবাদন জানান হুমায়ূন আহমেদকে। ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয় সেদিন। উপহার হিসেবে তুলে দেয়া হয় ইমপ্রেস টেলিফিল্মের চলচ্চিত্রের অ্যালবামসহ অনেক কিছু। এত কিছুর আয়োজন দেখে হুমায়ূন আহমেদ বলেছিলেন, মৃত্যুর পর একজন মানুষকে নিয়ে যে ধরনের অনুষ্ঠান হয়, যে রকম সুন্দর কথা হয়, তা আজ একজন জীবিত মানুষকে নিয়ে হলো। খুব ভাল লাগলো। আমি কেবল সিনেমা দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এতো দ্রুত যে আয়োজন করলো, তাতে আমি মুগ্ধ। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ছবিটি দেখতে পাচ্ছি- এটাই সবচেয়ে বড় আনন্দ। হুমায়ূন আহমেদ ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ দেখতে বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সে শেষবারের মতো এসেছিলেন সবুজ টি শার্ট ও মাথায় হ্যাট পরে। চা খেলেন, কথা বললেন, ছবির শিল্পী কলাকুশলীদের নিজেই পরিচয় করিয়ে দিলেন। তখনও বন্ধুরা জানতেন না সিনেপ্লেক্সে এটাই হুমায়ূন আহমেদের শেষবারের মতো আসা কিংবা আমন্ত্রণপত্রের আদলে দেয়া চিঠিটাই শেষ চিঠি। স্মৃতিকাতর বন্ধুরা এখন সেই চিঠিটি খোঁজায় এবং সংরক্ষণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মনে করছেন সেই আবেগঘন ছোট্ট ক’টি কথা- হে বন্ধু, হে প্রিয়, ডাক্তারের কঠিন নিষেধ, বেশি মানুষের ভিড়ে যাওয়া যাবে না ...।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×