somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জয়ের জুগি

২১ শে জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জয়ের জুগিরা যুগে যুগে ছিল, আছে, থাকবে। এরা না থাকলে প্রশাসন চলে না। দেশ চলে না। রাজা, উজির কেউ এগোতে পারে না। এরাই এগিয়ে নিতে নিতে একসময় শূন্যে উঠিয়ে ছেড়ে দেয়। তারপর যা হওয়ার তা-ই হয়। ধপাস। চোখের সামনে এমন হাজারো উদাহরণ। তারপরও আমরা শিক্ষা নিই না। আর শিক্ষা নিই না বলেই আমরা শিক্ষা পাই। তারপরও জয়- জয়ের জুগিদের। হুজুর যখন বলেন, পানি কমেছে। জয়ের জুগিরাও রব তুলেন, হ্যাঁ হুজুর পানি কমেছে। পরক্ষণেই যখন হুজুর বলেন, নারে পানি বেড়েছে। জয়ের জুগিরাও বলেন, হ্যাঁ হুজুর পানি বেড়েছে। সম্প্রতি পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। অনেক চড়াই-উৎরাই গেছে দেশের ওপর দিয়ে। প্রধানমন্ত্রী যখন বললেন, কারও কাছে মাথা নত নয়, আমরাই নিজেরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করবো। আর যায় কোথায়? জয়ের জুগিরা নেমে পড়ে মাঠে। ব্যানার ফেস্টুন আর কেউ কেউ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এ সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। আবার কেউ কেউ এক ধাপ এগিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন নিজেদের একদিনের বেতন দেয়ার কথা। তা দেখে এক পাঠক মন্তব্য করেন- যে প্রতিষ্ঠান একটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের একদিনের বেতন দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে। ইঞ্চি কলাম হিসাব করে এই বিজ্ঞাপনের মূল্য তাদের একদিনের বেতনের সমান হবে কিনা তা সন্দেহ। এই বিজ্ঞাপন দেয়ার হেতু কি? এটা যে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করাÑ এতে কোন সন্দেহ নেই। পদ্মা সেতুর অর্থ যোগাড় করতে গিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে একজন। শুনতেই লজ্জা হয়। এমন বিষয় নিয়ে বন্দুকযুদ্ধÑ কল্পনা করা যায়? এসব বিষয় কি প্রধানমন্ত্রীর সৎ, সাহসী উদ্যোগকে কলঙ্কিত করছে না? বিষয়টি দেখবে কে? এ মুহূর্তে সেই গল্পের নিমাই দত্তের খুব প্রয়োজন। যিনি কিনা অত্যাচারী এক স্বামীর হাত থেকে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে রক্ষা করতে মন্ত্রণা দিয়েছিলেন। স্বামী উত্তেজিত হলেই স্ত্রী সেই মন্ত্র জপতেন। আর মন্ত্র শুনে স্বামী একেবারে চুপসে যেতেন। কি সেই মন্ত্রণা? এর আগে গল্পটা শুনে নিই। এক নাপিত কাজ করতো ব্রাহ্মণের বাড়ি। দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে ব্রাহ্মণের কাছ থেকে অনেক মন্ত্রই নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসে নাপিত। এভাবে একদিন নিজে ব্রাহ্মণ সেজে বেরিয়ে পড়ে অজানার উদ্দেশ্যে। অনেক দূর গিয়ে এক গ্রামে ঠাঁই নেয়। জানতে পারে এ গ্রামে কোন ব্রাহ্মণ নেই। দূর গ্রাম থেকে ব্রাহ্মণ এসে এ গ্রামের কাজ করে দিয়ে যায়। নাপিত বেটাও সুযোগ নেয়। নিজেকে ব্রাহ্মণ পরিচয় দিয়ে এ গ্রামে থাকতে শুরু করে। এভাবে অনেক দিন যায়। গ্রামের সবাই ধরে তাকে বিয়ে করতে হবে। পাশের গ্রামের ব্রাহ্মণের মেয়ে আছে। সেখানেই বিয়ে করতে হবে। কথা অনুযায়ী বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। কিন্তু ব্রাহ্মণের দুই মেয়ে। বড় মেয়ের চেয়ে ছোট মেয়ে সুন্দর। কিন্তু বড় মেয়ের বিয়ে ছাড়াতো ছোট মেয়ের বিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। কি করা! বড় মেয়ের বিয়ে কখন হবে, তারপর ছোট মেয়েকে বিয়ে করবে। তার চেয়ে বরং সিদ্ধান্ত হয় দুই মেয়েকেই বিয়ে করবে এই ব্রাহ্মণ। কথা অনুযায়ী বিয়ে হয়। দুই বউকেই বাড়ি নিয়ে আসে। কিন্তু ব্রাহ্মণ বড় বউয়ের চেয়ে ছোট বউকে আদর করে বেশি। বড় বউয়ের ধারেকাছেও যায় না। এ কারণে বড় বউয়ের মন খারাপ। ছোট বউয়ের কথা শুনে মাঝে মধ্যে মারধরও করে। এভাবেই দিন চলছে। একদিন নাপিতের গ্রাম থেকে নিমাই দত্ত ঘুরতে ঘুরতে এ গ্রামে আসে। তার কাজ হলো হাত দেখে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ বলে দেয়া। রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। হঠাৎ নিমাই দত্ত দেখতে পায় তার গ্রামের নাপিত এখানে ব্রাহ্মণের বেশে। খোঁজ খবর নিয়ে তার সবকিছু জেনে যায়। একদিন নাপিতের অনুপস্থিতিতে তার বাড়িতে যায়। বাইরে থেকে ডাক দেয়। আমি হাত দেখি। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারি। বড় বউ এ কথা শুনে এগিয়ে আসে। বলে, আমার হাতটা দেখে দিন। হাত দেখে গড়গড়িয়ে নিমাই দত্ত সব বলে দিতে থাকে। একপর্যায়ে বড় বউ কেঁদে দেয়। নিমাই দত্ত বলে, আপনি কাঁদবেন না। যখনই আপনার স্বামী আপনার ওপর চড়াও হয়, তখনই এ মন্ত্রটি পড়বেন। আর সঙ্গে সঙ্গে তিনি চুপ হয়ে যাবেন। আপনাকে ভালবাসবে। মন্ত্র পড়ার সময় আপনি হাতের ওপর হাত ঘষা দিতে দিতে বলবেন, এসেছিল নিমাই দত্ত, বলে গেছে সকল তথ্য। তুমি নাকি এমন আর তেমন। (নাপিতরা ুর ধার দেয় এক হাতে চামড়া জাতীয় কিছু রেখে অন্য হাতে ুর ধরে ঘষা দিয়ে)। এরপর তার স্বামী যখন তার ওপর ক্ষিপ্ত হতো তখনই সে এ মন্ত্র পড়তো। আর সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মণের ছদ্মাবেশে থাকা নাপিত তার হাতে-পায়ে ধরে বলতো, এ কথা আর কাউকে তুমি বলো না। আমি আজ থেকে তোমাকেই ভালবাসবো।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×