somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোযার মূল উদ্দেশ্য

২০ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ যে কাজই করে না কেন, তাতে দু’টি জিনিস অবশ্যই থাকবে: একটি তার উদ্দেশ্য-যে জন্য সেই কাজ করা হয়। অন্যটি সেই উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য গৃহীত পন্থা। উদাহরণস্বরূপ ভাত খাওয়ার কথা বলা যেতে পারে। ভাত খাওয়ার কথা বলা যেতে পারে। ভাত খাওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে বেঁচে থাকা এবং দৈহিক শক্তির স্থায়িত্ব। এ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য গ্রাস বানাতে হয়, মুখে দিতে হয়, চিবাতে হয় এবং গিলতে হয়। খাওয়ার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সবচেয়ে বেশী কার্যকরী ও সর্বাপেক্ষা বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ পন্থা এটাই। এজন্য খাওয়ার কাজ সমাধার জন্যই হচ্ছে এর উদ্দেশ্য-যে জন্য খাওয়া হয়-খাওয়ার এ পন্থাটি আসল বস্তু নয়। এখন কোনো ব্যক্তি যদি মাটি, ছাঁই বা বালি মুঠি ভরে মুখে দেয় এবং চিবিয়ে গিলে ফেলে; তবে তাকে কি বলা যাবে? বলতেই হবে যে, তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু কেন? এজন্য যে, খাওয়ার এ চারটি নিয়ম পালন করলেই তো আর খাওয়ার উদ্দেশ্যে হাসিল হয় না। তেমনি যে ব্যক্তি ভাত খাওয়ার সাথে সাথে বমি করে ফেলে, তারপরও সে যদি অভিযোগ করে যে, ভাত খাওয়ার যে উপকারিতা বর্ণনা করা হয়, তা আমি মোটেই পাচ্ছিনা।

বরং আমি তো ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছি, মৃত্যু আমার নিকবর্তী। এ নির্বোধ ব্যক্তি নিজের এ দুর্বলতার জন্য খাওয়ার ওপরে দোষারোপ করছে, অথচ আসলে এটা তারই নির্বুদ্ধিতার ফল মাত্র। সে নির্বোধের ন্যায় মনে করছে; যে কয়টি নিয়ম পালনের দ্বারা খাওয়ার কাজ সমাধা করা হয়, ব্যাস, শুধু সেই কয়টি সম্পন্ন হলেই জীবনী শক্তি লাভ করা যাবে। এজন্যই সে মনে করেছে যে, এখন পেটে ভাতের বোঝা রেখে লাভ কি, তা বের করে ফেলাই উচিত। এভাবে পেট হালকা হয়ে যাবে। খাওয়ার বাহ্যিক নিয়ম তো পালন করা হয়েছে। এ নির্বোধ ব্যক্তি এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করেছে এবং কার্যত তাই করছে। সুতরাং তার দুর্ভোগ তাকেই ভুগতে হবে। একথা তার জানা উচিত ছিল যে, ভাত যতক্ষণ পর্যন্ত পেটে গিয়ে হযম না হবে এবং রক্তে পরিণত হয় সারা দেহে ছড়িয়ে না পড়বে-ততক্ষণ পর্যন্ত জীবনী শক্তি কিছুতেই লাভ করা সম্ভব নয়। খাওয়ার কাজের বাহ্যিক নিয়মগুলো যদিও কিছুতেই লাভ করা সম্ভব নয়। খাওয়ার কাজের বাহ্যিক নিয়মগুলো যদিও অপরিহার্য, কারণ তা ছাড়া ভাত পেটের মধ্যে কিছুতেই প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু এ বাহ্যিক অনুষ্ঠান পালন করলেই খাওয়ার আসল উদ্দেশ্য লাভ করা যায় না। এ বাহ্যিক অনুষ্ঠানে এমন কোনো যাদু নেই যে, এগুলো সম্পন্ন হলেই ঐন্দ্রজালিক উপায়ে তার শিরায় শিরায় রক্ত প্রবাহিত হবে। রক্ত সৃষ্টির জন্য আল্লাহ তাআলা যে নিয়ম বানিয়ে দিয়েছেন, তা সেই নিয়ম অনুসারেই হতে পারে। সেই নিয়ম লংঘন করলে ধ্বংস অনিবার্য।

এখানে যে উদাহরণটি বিস্তারিত ভাবে বললাম, তা একটু চিন্তা করলেই বর্তমানে মুসলমানদের ইবাদত নিষ্ফল হয়ে যাওয়ার কারণ সহজেই বুঝতে পারা যায়। পূর্বে যেমন একাধিকবার বলেছি বর্তমানে মুসলমাগণ নামায রোযার আরকান (আভ্যন্তরীণ জরুরী কাজ) এবং তার বাহ্যিক অনুষ্ঠানকেই আসল ইবাদাত বলে মনে করে যে, এ অনুষ্ঠানেই যে ব্যক্তি ঠিকভাবে আদায় করলো, সে আল্লাহর ইবাদাত সুসম্পন্ন করলো। এদেরকে সেই ব্যক্তির সাথে তুলনা করা যেতে পারে, যে ব্যক্তি ভাতের মুঠি বানাল, মুখে রাখল, চিবালো এবং গিয়ে ফেললো। আর এ চারটি কাজ করাকেই খাওয়া এবং খাওয়ার উদ্শ্যে এটা থেকেই হাসিল হলো বলে মনে করেছে। সে এভাবে মাটি খেলো কিংবা বালি খেলো অথবা তা বমি করে ফেললো তাতে কিছু যায় আসে না। আমি জিজ্ঞেস করতে চাই যে, মুসলমানদের এ ভ্রান্তি যদি না হয়ে থাকে তাহলে রোযাদার ব্যক্তি কেমন করে মিথ্যা কথা বলতে পারে ও কেমন করে পরের গীবত করতে পারে, কথায় কথায় তারা লড়াই-ঝগড়া কেমন করে করতে পারে? তাদের মুখ থেকে গালি-গালায ও অশ্লীল কথা কেমন করে বের হয়? পরের হক তারা কিভাবে কেড়ে নেয়? হারাম খাওয়া ও অন্যকে হারাম খাওয়ানোর কাজ কেমন করে করতে পারে যে, তারা আল্লাহর ইবাদাত করছে। বালি কিংবা মাটি খেয়ে যারা মনে করে যে, তারা খাওয়ার কাজ সমাধা করছে, এর ঠিক তাদেরই মতো।

বিশেষভাবে ভেবে দেখার বিষয় এই যে, গোটা রমযান মাস ভরে ৩৬০ ঘন্টাকাল আল্লাহর ইবাদাত করার পরে যখন মুসলমানগণ অবসর গ্রহণ করে তখন শাওয়ালের প্রথম তারিখেই এ বিরাট ইবাদাতের সকল প্রভাব একেবারে বিলুপ্ত হয় কেন? হিন্দু জাতি তাদের মেলা-উৎসবে যাকিছু করে, মুসলমানগণ ঈদের উৎসবে ঠিক তাই করে। এমনকি শহর অঞ্চলে ঈদের দিন ব্যভিচার, নাচ-গান, মদ পান আর জুয়া খেলার তুফান বইতে শুরু করে। অনেক লোককে এমনও দেখা যায় যে, দিনের বেলা রোযা রেখে সারারাত মদ খায়, যেনা করে। সাধারণ মুসলমান আল্লাহর ফযলে এতটা পথভ্রষ্ট এখনো হয়নি; কিন্তু জিজ্ঞাস্য এই যে, রমযান খতম হওয়ার পরেই তাকওয়া-পরহেযগারীর প্রভাব কতজন লোক ভয় পায়? নেক কাজে কতজন লোক অংশগ্রহণ করে? স্বার্থপরতা কতজনের দূর হয়ে যায়? ভেবে দেখুন, এর প্রকৃত কারণ কি হতে পারে? আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, এর একমাত্র কারণ এই যে, মুসলমানদের মনে ইবাদাতের অর্থ এবং সেই সম্পর্কে যে ধারণা রয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল। তারা মনে করে যে, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কিছু না খাওয়া, কিছু পান না করাকেই রোযা বলে। আর এটা করার নামই ইবাদাত। এজন্য দেখা যায় যে, মুসলমান রোযার খুব সম্মান করে, খুব যত্নের সাথে রক্ষা করে চলে- তাদের মনে আল্লাহর ভয় এতবেশী হয় যে, যেসব কাজে রোযা ভংগ হবার আশাংকা হয়, তা থেকে তারা দূরে সরে থাকে। এমনকি প্রাণের আশংকা দেখা দিলেও কেউ রোযা ভাংগতে রাজী হয় না। কিন্তু মুসলমানগণ একথা জানে যে, কেবল ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত থাকার নামই আসল ইবাদাত নয়, এটা ইবাদাতের বাহ্যিক অনুষ্ঠান মাত্র। এ অনুষ্ঠান পালন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের মনে আল্লাহর ভয় ও ভালবাসা জাগিয়ে তোলা মাত্র। তাদের মধ্যে যেন এতদূর শক্তি জেগে ওঠে যে, তারা বড় বড় লাভজনক কাজকেও কেবল আল্লাহর অসন্তুষ্টিকে ভয় করে (নিজের মনকে শক্ত করে) তা পরিত্যাগ করে। আর কঠিন বিপদের কাজেও যেন কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় নিজের মনকে শক্ত করে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। এ শক্তি মুসলমানদের মধ্যে তখনি আসতে পারে, যখন রোযার আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পারবে এবং রমযানের পূরা মাস আল্লাহর ভয় ও ভালবাসায় নিজের মনকে নফসের খাহেস হতে ফিরিয়ে রাখবে, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রস্তুত হবে। কিন্তু দু:খের বিষয়, বর্তমান মুসলমান সমাজ রমযানের পরেই এ অভ্যাসকে এবং এ অভ্যাসলব্ধ গুণলোকে এমনভাবে হারিয়ে ফেলে যেমন কেউ ভাত খেয়েই অমনি বমি করে ফেলে। উপরন্তু অনেক মুসলমান ইফতার করার সাথে সাথে সারাদিনের পরহেযগারী ও তাকওয়াকে উগরিয়ে ফেলে। এমতবস্থায় রোযার আসল উদ্দেশ্য যে কোনো মতেই হাসিল হতে পারে না তা প্রত্যেকেই বুঝতে পারেন। রোযা কোনো যাদু নয়, এর কেবল বাহ্যিক অনুষ্ঠান পালন করলেই তা দ্বারা বড় কোনো উদ্দেশ্য লাভ করা যেতে পারে না তা পাকস্থলিতে গিয়ে হযম হবে এবং রক্ত হয়ে শরীরের শিরায় শিরায় প্রবাহিত হবে। তদ্রুপ রোযা দ্বারাও কোনো নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি লাভ করা যেতে পারে না- যতক্ষণ পর্যন্ত রোযাদার রোযার আসল উদ্দেশ্য ভালভাবে বুঝতে না পারবে এবং তার মন ও মস্তিষ্কের মধ্যে তা অংকিত না হবে এবং চিন্তা-কল্পনা, ইচ্ছা ও কর্ম সবকিছুর ওপর তা একেবারে প্রভাবশীল হয়ে না যাবে।

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা রোযার হুকুম দেয়ার পর বলেছেন لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ ـ

অর্থাৎ তোমাদের জন্য রোযা ফরয করা হয়েছে সম্ভবত তোমরা মোত্তাকী ও পরহেযগার হতে পারবে। আল্লাহ পাক একথা বলেননি যে, রোযার রেখে তোমরা নিশ্চয়ই পরহেযগার ও মোত্তাকী হতে পারবে। কারণ রোযা হতে যে সুফল লাভ করা যায় তা রোযাদারের নিয়ত, ইচ্ছা-আকাংখা ও আগ্রহের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে। যে ব্যক্তি এর উদ্দেশ্য জানতে ও ভাল করে বুঝতে পারবে এবং তা দ্বারা মূল উদ্দেশ্য লাভের চেষ্টা করবে সে তো কম বেশী মোত্তাকী নিশ্চয়ই হবে। কিন্তু যে এর উদ্দেশ্যই জানবে না এবং তা হাসিলের জন্য চেষ্টা করবে না, রোযা তার কোনো উপকারই হবার আশা নেই।
হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নানাভাবে রোযার আসল উদ্দেশ্যের দিকে ইংগিত করেছেন এবং বুঝিয়েছেন যে, উদ্দেশ্য না জেনে ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত থাকায় কোনোই সার্থকতা নেই। তিনি বলেছেন :

مَنْ لَّمْ يَدْعْ قَوْلَ الزُّوْرِ وَالْعَمَلَ بِه فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِيْ اَنْ يَّدْعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَه ـ
যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ পরিত্যাগ করবে না তার শুধু খানা-পিনা পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনোই প্রয়োজন নেই।
অন্য হাদীসে রাসূলে করী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন:
كَمْ مِنْ صَائِمٍ لَيْسَ لَهُ مِنْ صِيْامِه اِلاَّ الظَّمَاءُوَكُمْ مِنْ قَائِمٍ لَيْسَ لَهُ مِنْ قِيَامِه اِلاَّ السَّهَرُ ـ
অনেক রোযাদার এমন আছে কেবল ক্ষুধা আর পিপাসা ছাড়া যার ভাগ্যে অন্য কিছুই জোটে না। তেমনি রাত্রিতে ইবাদাতকারী অনেক মানুষও এমন আছে, যারা রাত্রি জাগরণ ছাড়া আর কিছুই লাভ করতে পারে না।

এ দুটি হাদীসের অর্থ অত্যন্ত স্পষ্ট। এটা দ্বারা ভালরূপে জানা যায় যে, শুধু ক্ষুধার্ত এ পিপাসায় কাতর থাকাই ইবাদাত নয়, এটা আসল ইবাদাতের উপায় অবলম্বন মাত্র। আর আল্লাহর ভয়ে আল্লাহর আইন ভঙ্গের অপরাধ না করা এবং যে কাজে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, আর যতদূর সম্ভব নিজের আমিত্বকে নষ্ট করা যায়; আল্লাহকে ভালবেসে সেসব কাজ ঐকান্তিক আগ্রহের সাথে পালন করা আসল ইবাদাত। এ ইবাদাত যে করবে না, সে ক্ষুদার্ত ও পিপাসার্ত থেকে নিজের পেটকে কষ্ট দেয়, তার বার-চৌদ্দ ঘন্টা উপবাস থাকায় কোনোই লাভ নেই। আল্লাহ তাআলা কেবল এজন্যই মানুষকে খানা-পিনা ত্যাগ করতে বলেননি। রোযার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন:
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ اِيْمَانًا وَّاِحْتِسَابًا غُفِرِلَه مَاتَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ـ

ঈমান ও এহতেসাবের সাথে যে ব্যক্তি রোযা রাখবে তার অতীতের গুনাহ-অপরাধ মাফ করে দেয়া হবে।

ঈমান-অর্থাৎ আল্লাহ সম্পর্কে একজন মুমিনের যে ধারণা ও আকীদা হওয়া উচিত তা স্মরণ থাকা চাই আর এহতেসাব-এর অর্থ এই যে, মুসলমান সবসময়েই নিজেও চিন্তা-কল্পনা করবে, নিজের কাজ-কর্মের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখবে ও ভেবে দেখবে যে, আল্লাহর মর্জির খেলাফ চলছে না তো। এ দুটি জিনিসের সাথে যে ব্যক্তি রমযানের পূর্ণ রোযা রাখবে, সে তার অতীতের সব গুনাহ অপরাধ মাফ করিয়ে নিতে পারবে। অতীতে সে কখনও নাফরমান আর আল্লাহদ্রোহী বান্দাহ থাকলেও এভাবে রোযা রাখলে প্রমাণিত হবে যে, এখন সে প্রকৃত মালিক আল্লাহর দিকে পুরোপুরি প্রত্যাবর্তন করেছে। হাদীসে উল্লেখিত রয়েছে:
اَلتَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لاَذَنْبَ لَهُ ـ

গুনাহ থেকে যে তওবা করে, সে একেবারে নিষ্পিাপ হয়ে যায়।

অন্য হাদীসে বলা হয়েছে-

اَلصِّيَامُ جُنَّةٌ وَاِذَاكَانَ يَوْمِ اَحَدِكُمْ فَلآ يَرْفُثُ وَلاَ يَصْخَبُ فَانْ سَابَّهُ اَحَدٌ اَوْقَاتَلَهُ فَلَيْقُلْ اِنِّيْ اِمْرُءٌ صَائِمٌ ـ

রোযা একটি ঢালের (ঢাল যেমন দুশমনের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে, তেমনি রোযাও শয়তানের ধৌঁকা থেকে বাঁচার জন্য ঢাল স্বরূপ) সুতরাং যে ব্যক্তি রোযা রাখবে, তার (এ ঢাল ব্যবহার করা বাঞ্চনীয়) দাঙ্গা-ফাসাদ থেকে ফিরে থাক উচিত। কেউ তাকে গালি দিলেও কিংবা তার সাথে লড়াই-ঝগড়া করলেও পরিষ্কারভাবে বলা উচিত যে, ভাই, আমি রোযা রেখেছি, তোমার সাথে এ অন্যায় কাজে আমি যোগ দেব এমন আশা করতে পারি না।

অন্য কয়েকটি হাদীসে শেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, রোযা রেখে যথাসম্ভব বেশী পরিমাণে নেক কাজ করা উচিত। বিশেষ করে রোযা রাখা অবস্থায় রোযাদারের মনে তার অন্যান্য ভাইয়ের প্রতি খুব বেশী পরিমাণে সহানুভুতি থাকা বাঞ্চনীয়। কারণ নিজে ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত হওয়ার দরুন খুব ভাল করেই অনুভব করতে পারে যে, আল্লাহর গরীব বান্দাহগণ দু:খ ও দারিদ্র্যে কেমন করে দিন কাটায়। হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু রমযানে অন্যান্য সময় অপেক্ষা অধিক দয়ালু ও সহানুভূতিশীল হতেন। এ সময় কোনো প্রার্থী তাঁর দুয়ার হতে অধিক দয়ালু হতে বঞ্চিত হতে পারতো না। কোনো কয়েদীও এ সময়ে বন্দী থাকতো না। একটি হাদীসে বলা হয়েছে-

مَنْ فَطَّرَ فِيْهِ صائِمًا كَانَ لَه مَغْفِرَةٌ لِذُوْنُوْبِه وَعَتْقُ رَقَبَتِه مِنَ النَّارِ وَكَانَ لَه مِثْلَ اَجَرِه مِنْ غِيْرَ اِنْ يَّنْتَقَصَ مِنْ اَجْرِه شَئٌ ـ
রমযান মাসে যে ব্যক্তি কোনো রোযাদাকে ইফতার করাবে, তার এ কাজ তার গুনাহ মাফ এবং জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে বাঁচাবার কারণ হবে। এ রোযাদারের রোযা রাখায় যত সওয়াব হবে, তাতে তারও ঠিক কতখানি সওয়াব হবে। কিন্তু তাতে রোযাদারের সওয়াব একটুও কম হবে না।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×