বিভাগের নির্ধারিত ক্লাস শেষে শ্রান্ত ক্লান্ত মনে দুপুর দেড়টার শহর অভিমুখি শাটলে প্রচণ্ড ভিড় উপেক্ষা করে উঠতেই পেছনের দিকের অসংখ্যা সিট খালি দেখে উচ্ছসিত মনে বসতে চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী উর্মিলা। কিন্তু বসার আগেই পথ আগলে ধরেন ছাত্রলীগের এক কর্মী। এবং শুনিয়ে দেন অশ্রাভ্য গালিগালাজ ও কুরুচিপুর্ন মন্ত্যব। ঘটনাটি একমাস আগের।
প্রতি বগির দেড়শ সিটের মধ্যে পেছনের দুই দিকের ৩৬টি সিটই থাকে তাদের দখলে। এখানে কোন সাধারণ শিক্ষার্থীর বসা একদম মানা। আসনগুলো অঘোষিতভাবে ছাত্রলীগকর্মীদের জন্য বরাদ্দ। খালি থাকলেও এসব সিটে বসতে চাইলেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নেমে আসে খড়গ।সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে করে ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠনগুলোর বগির গায়ে লেখা কয়েকটা নমুনাঃ‘ গরম কথা বললেই মাইর’, ‘কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনলে হেডফোন কেড়ে নেয়া হবে’ ‘বগির মেম্বার ব্যতীত অন্য কেউ বসলে মাইর’ ‘সংরক্ষিত আসন, বসা নিষেধ’ বসলে আপনার মন্দ ভাগ্যের জন্য বগি মেম্বাররা দায়ী থাকবেন’।
শাটল ট্রেনের বগিগুলোতে সংগঠনটি নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত স্লোগান এবং নাম লিখে চিকা মেরেছে। এর মধ্যে- দোস্ত, সিক্সটি নাইন, ভার্সিটি এক্সপ্রেস, একাকার, সাম্পান, অলওয়েজ, ককপিট, খাইট্টা খা, ওরিওর্স, ফাটাফাটি, ইউরেকা, ফাইট ক্লাব, এপিটাপ, সিএফসি এবং কনকর্ডসহ আরো বাহারি নাম। এদের আবার বিভিন্ন উপ-গ্রুপও রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব বগির দুই পাশের ৩৬ টি সিট ছাত্রলীগ কর্মীদের জন্য অঘোষিতভাবে বরাদ্দ।