somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার কে দিতে পারবে?

০৭ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ দৈনিক পত্রিকায় একটি কলাম ছাপানো হয়েছে-
আসলে ওরা একটু ভাল থাকতে চায়...

এখানে বিশ্লেষণ করা হয়েছে- গার্মেন্টস শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার কি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত? এরা শুধু শোষিতই হচ্ছে। তাদের কষ্টের ঘাম দ্বারা ফায়দা লুটছে শুধুই গার্মেন্টস মালিকরা।

শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের কথা যদি বলতে হয় তাহলে তা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে একমাত্র ইসলাম দ্বারা। এখনকার সময়ে তথাকথিত চুশিলরা শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের কথা বড় বড় কথা বলে। প্রকৃতপক্ষে তারা শুধু বড় বড় কথাই বলতে পারে কাজের বেলা কিছুই না। কিন্তু পক্ষান্তরে ইসলাম শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে ১৪০০ বছর আগে।

আসুন দেখি ইসলাম শ্রমিককে কি কি অধিকার দিয়েছেঃ

মানুষের জীবনে চাহিদার অন্ত নেই। চাহিদা বহুল জীবনের প্রয়োজন মেটানোর জন্য অর্থের প্রয়োজন। শ্রমিকদের অর্থ-উপার্জনের একমাত্র পথ শ্রমের বিনিময় গ্রহণ। মালিকগণ শ্রমিকদের যে অর্থ প্রদান করে থাকে, এতে যদি তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ না হয়, তবে সে স্বীয় প্রয়োজন পূরণার্থে মালিকের নিকট দাবী-দাওয়া পেশ করার অধিকার রাখে। তাদের যথোপযুক্ত দাবী পূরণের কথা উল্লেখ করে মহানবী (ছাঃ) বলেন, ‘শ্রমিকদেরকে যথারীতি খাদ্য ও পোষাক দিতে হবে’। (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩৪৪।)
বৃদ্ধ বা অসুস্থকালীন ভাতা ও সামাজিক নিরাপত্তা লাভ শ্রমিকগণের সবচেয়ে বড় প্রাণের দাবী। শ্রমই শ্রমিকগণের একমাত্র পুঁজি। শ্রমিক বৃদ্ধ বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার জীবিকা নির্বাহের কোন পথই থাকে না, যা দিয়ে সে অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থা করবে। সে তখন একেবারে অসহায় দিশেহারা হয়ে পড়ে। খাদ্যের জন্য সে তার যৌবনের উষ্ণ রক্ত ও শক্তি-সামর্থ্য ব্যয় করে আজ সে নিঃস্ব ও রিক্ত অথচ মালিকগণ ভুলেও তার করুণ দৈন্যদশার দিকে ফিরে তাকায় না। তাই বৃদ্ধ, পঙ্গু, অসুস্থ, অসহায় ও দুর্বল লোকদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব মালিক তথা সরকারের। সরকার রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাদের সমস্ত প্রয়োজন পূরণ করবে, প্রয়োজন অনুপাতে ভাতা নির্ধারণ এবং তাদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধান করবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
أَنَا أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ، فَمَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ وَلَمْ يَتْرُكْ وَفَاءً: فَعَلَىَّ قَضَؤُهُ وَمَنْ تَرَكَ مَالاً فَلِوَرثَتِهِ-
‘আমি মুমিনের অভিভাবক। তাদের মধ্যে হ’তে কেউ মৃত্যুবরণ করলে এবং তার উপর কর্য (দেনা) থাকলে আর তা পরিশোধের কোন ব্যবস্থা না থাকে তবে তা পরিশোধের দায়-দায়িত্ব আমার উপর। আর যদি সে সম্পদ রেখে যায়, তবে তার অংশীদারগণ এ সম্পদের অধিকারী হবে’।(বুখারী ও মুসলিম; মিশকাত হা/৩০৪৪।)
শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকের সম্পর্ক কি রকম হবে, আচার-ব্যবহার কি রকম হবে সে সম্পর্কে ইসলামের সুন্দর নীতিমালা রয়েছে। মালিকরা তাদের অধীনস্থ শ্রমিকদের সঙ্গে কিরূপ আচরণ করবে সে সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘এরা (শ্রমিকরা) তোমাদের ভাই, আল্লাহ এদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। অতএব আল্লাহ তা‘আলা যে ব্যক্তির ভাইকে তার অধীন করে দিয়েছেন, তার উচিত সে যা খাবে তাকেও তা খাওয়াবে, সে যা পরবে তাকেও তা পরাবে, আর যে কাজ তার পক্ষে সম্ভব নয়, সে কাজের জন্য তাকে কষ্ট দেবে না। আর যদি কষ্ট দেয় তাতে নিজেও তাকে সাহায্য করবে।’ (আহমদ ৫/১৬৮, আবু দাউদ ২/৩৩৭) রাসূল (সাঃ) আরও বলেছেন, ‘তোমার যে পরিমাণ কাজ অনায়াসে করতে পারবে, সে পরিমাণ কাজই তোমরা (তোমাদের অধীনস্থদের জন্য) আয়োজন কর।’ (নাসাঈ, ইবনে মাযাহ)
বর্তমান বিশ্বে শ্রমিকের অধিকার আদায়ের মাধ্যম হিসেবে আন্দোলনকে বেছে নেয়া হয়েছে, কিন্তু আন্দোলনের মাধ্যমে সাময়িকভাবে অধিকার আদায় করলেও চিরস্থায়ীভাবে সম্ভব নয়। শ্রমিক-মালিকের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা একমাত্র ইসলামের আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমেই সম্ভব। শ্রমিক-মালিক উভয় পক্ষ যদি ইসলামের প্রদর্শিত নীতিমালা অনুসরণ করে তাহলে শ্রমিকরা দাবি আদায়ের নামে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করবে না, মালিকদেরও শোষণ করার মানসিকতা থাকবে না। উভয়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠবে এবং একে-অপরের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। আর এর মাধ্যমেই সমাজে বা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নজরুলের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমার গাওয়া ৩টি নজরুল গীতি শেয়ার করলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ২:১৩

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে এক গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন স্বাধীনতা ও সাম্যের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১১

জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুদ্ধে নিহত মনোজ দা’র বাবা

লিখেছেন প্রামানিক, ২৫ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৭১ সালের এপ্রিলের ছব্বিশ তারিখ। দেশে তখন ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। উচ্চ শিক্ষিত এবং কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের নিয়েই বেশি সমস্যা। তাদেরকে খুঁজে খুঁজে ধরে নিয়ে হত্যা করছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিয়ে থেতে ভাল্লাগে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৫ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৯

আমার বিয়ে বাড়ির খাবার খেতে ভালো লাগে। আমাকে কেউ বিয়ের দাওয়াত দিলে আমার খুসি লাগে। বিয়ের দিন আমি সেজে গুজে বিয়ে বাড়িতে আয়োজন করা খাবার থেতে যাই। আমাদের এলাকায় বর্তমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

উসমানীয় সাম্রাজ্যের উসমান এখন বাংলাদেশে

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২০



জনপ্রিয় ''কুরুলুস উসমান'' সিরিজের নায়ক Burak Ozcivit এখন বাংলাদেশে। বিগত কয়েক বছর ধরে তার্কির অটোমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন সুলতানদের নিয়ে নির্মিত সিরিজগুলো বিশ্বব্যপী বেশ সারা ফেলেছে। মুসলিমদের মাঝেতো বটেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×