১৪ তারিখ আমার এক কাছের লোক যশোর থেকে আসব। তার আসতে আসতে খুব বসে দেরি হওয়ার কারনে কমলাপুর রেলস্টশেনে রাত তিনটা পর্যন্ত থাকা হয় । সেই সুবাদে সেখানকার লোকদেরকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ মেলে।
সেখানের কিছু ভাসমান শিশুদের সাথে কথা হয়।
এখানে তাদের থেকে তিনজনের ছবি।
একজনকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি এখানে কেন?
সে বলল, ঘর বলে।
তোমার বাবা মা কোথায় ?
বাবা,আমাগো থুইয়া গেসেগা। আর মা আরেক্ষানে বিয়া করসে।
তোমার নাম কি?
মিলন।
এই নাম কে রাখসে?
আমি নিজে
ক্যা? তোমার নানা-নানি দাদা-দাদি কেউ নাই?
আছে।হ্যারা আর কতটুকু দেখবো?
তোমার মা কেমনে তোমারে রাইখা গেসে?
হ্যায় আরেক্ষানে বিয়া করসে। আমি ঐ জাগা ছিনিনা।
এক দিন সকালে উইঠা দেহি একটা চাদর থুইয়া বাকি সব কিছু লইয়া গেসেগা।
তোমার ভাই বোন নাই?
হ আছে। হ্যারে লইয়া গেসে।
তুমারে লইলনা ক্যান?
জানিনা।
তুমি ঢাকায় আইছ কবে?
৪ বছর থাকত।
তুমি কি কর?
ভিক্ষা করি।
ভিক্ষা কর ক্যান? কারো বাসায় কাম কর।
ক্যাডা কাম দিব? আমাগ কেউ কাম দেয়না ।
তাইলে পেপার বেচোনা ক্যান?
পেপার বেচমু টাকা পামু কই?
কয়দিন কষ্ট কইরা জমাও।
পেপার বেচছি কয়দিন ।আমার ৮০০ টাকা হইছিল। রাত্রে ঘুমাইসি চোরে লইয়া গেসে।
রাত্রে কি খাইস?
কিছু খাই নাই?
তখন তাকিয়ে দেখি তার পেট পিঠের সাথে লেগে রয়েছে ।পকেট থেকে ১০ টাকা বের করে দিলাম। আর তার পিছু পিছু গেলাম যে ,দেখি কই খায়? গিয়ে দেখি কোন উৎসবের এঁটো করা খাবার এক লোক বিক্রি করছে।তাকে ১০ টাকা দিয়ে কিছু খাবার নিল । এই দেখলেন ? কেমন তাদের খাবার। আরো কয়েকজনের সাথে কথা হয়েছে । সবারই প্রায় একই অবস্থা ।এক জন পেলাম যে বাসা থেকে পালিয়ে এসেছে। বাকি অন্য সবারই কারো বাবা মা দুর্ঘটনায় মারা গেছে । কারো বাবা মা মারা গেছে । তাদের জন্য কই আমরা কিছুই করতে পারিনা । তাদের জন্য কোন পুনর্বাসন কেন্দ্র বানানো দরকার যেখানে তারা লেখা পড়া শিখবে হাতের কাজ শিখবে ।আসুরি।তাদের জন্য কিছু করি।