ভিয়েতনামের রুপকথা১
পাখির মুখে মানুষের মত কথা শুনে ছোট ভাই আর তার বউ তো অবাক। যাই হক, দেখাই জাক না কি হয়-এই ভেবে পরদিন ছোট ভাই একা একটি থলে নিয়ে পাখির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। ঠিক সময় পাখি এলো। ছোট ভাই কে তার পিঠে নিএ পারি দিলো অজানা এক পথে-এক দ্বীপে। সেই দ্বীপের চারদিকে পাহার –সব সোনার। গাছে গাছে হিরে,মনি-মুক্তার ফল। পাখি বল্ল।‘ তোমার থলে ভরতি করে যা ইচ্ছা তুলে নাও।‘ ছোট ভাই সোনা দানা,মনি মুক্তা যা পারলো থলে তে ভরে নিল। তারপর পাখি তাকে আবার পিঠে করে তার বাড়ি পউছে দিলো।
তখন সেই সব সোনা ডানা দেখে স্বামী স্ত্রির আনন্দ আর ধরে না। কিন্তু এত সব পেয়েও তাদের কোন অহঙ্কার হল না। তারা ঠিক আগের মতই আছে। সেই গাছের ফল খেয়েই তাদের দিন কাটে। এতোটুকু বিলাসিতা নেই।
একদিন তারা ঠিক করলো বড় ভাই আর তার বউকে নেমন্তন্ন করবে। ছোট বউ এই ঠিক করে একদিন বড় ভাইকে বলতে গেলো। তাদের ঐশ্বর্যের খবর এর মাঝেই বড় ভাইএর কাছে পউছে গেছে। হিংসেয় তারা জলে মরছিল। এর উপর ছোট বউ নেমন্তন্ন করতে এলে বড় বউ এর ভারি রাগ হল। সে ছোট বউ কে বলল,’ তোমার বাড়ি জাব যদি তোমার বাড়ির সামনে টা সোনার জলে রঙ করে দাও।“ সে ভেবেছিল এবার ছোট বউকে খুব জব্দ করা গেলো। নিশ্চই সে এত খরচ করবে না। ছোট বউ কিন্তু বলল,’ বেশ, তাই হবে দিদি।‘ শুনে বড় বউ ভাবল ,’কি বোকা!’
শেষ কালে বড় ভাই আর বউ যেদিন নেমন্তন্ন, সেদিন দেখা গেলো সত্যি ই ছোট ভাইএর কুড়ে ঘর সোনার জলে রঙ্গিন। বাড়ি ধকার রাস্তায় লাল রঙ্গের কার্পেট পাতা, ঘরে মনি মুক্তার ছড়াছড়ি। বড় ভাই আর তার বউ কে তারা যে কি আদর যত্ন করলো তা আর কি বলবো! বড় ভাই এইসব দেখে ছোট ভাই কে বলল কি করে সে এই সব সম্পত্তি করলো। তখন ছোট ভাই সেই পাখির কথা আর সোনা দানার কথা সব খুলে বলল।
বাড়ি ফিরে বড় ভাই আর তার বউ যুক্তি করতে লাগলো। শেষে বড় ভাই ছোট ভাই কে বলল, ‘ ভাই, তোমার তো এখন অনেক সম্পত্তি। তুমি আমাকে তোমার ওই কুঁড়ে ঘরটা দিয়ে দাও। ‘
ছোট ভাই বলল, এ আর বেশি কথা কি। তুমি এখন ই নিতে পার।
ছোট ভাই তার কুঁড়ে ঘর বড় ভাই কে ছেড়ে দিলো। বড় ভাই আর তার বউ রোজ পাখির জন্য বসে থাকে। উহ! এত দেরি করছে কেন পাখিটা আসতে!অবশেষে একদিন পাখি এলো। তাকে দেখেই স্বামী স্ত্রী বলল, ‘ আমাদের ও ওই রকম সোনাদানা এনে দাও।‘ পাখি বলল, ‘ বেশ, কাল থলে নিয়ে তৈরি থেকো।‘
ঠিক হল বড় ভাই আর তার বউ দু জনে মিলে যাবে। তা হলে অনেক বেশি সোনা আনতে পারবে। আর তারা যে থলি তৈরি করলো সে দুটোও মস্ত মস্ত দুই টা বস্তার মাপে। তারপর ঠিক সময় পাখির সাথে দুইজন গেলো দ্বীপে। অত সোনা আর হীরে মুক্ত দেখে তারা যেন পাগল হয়ে গেলো। তারা বস্তা দুটো ভরতি তো করলই, তাদের জামার ফাকেও তুলে নিল এন্তার সোনা। তারপর মোটঘাট নিয়ে তারা উঠলো পাখির পিঠে। কিন্তু একে দুজনের ভার, তার উপর দু বস্তা সোনাদানা আর সোনা ভর্তি জামা কাপড়ের ভার- সব মিলিয়ে পাখির পিঠে বিরাট বোঝা।
সে আর পাখা মেলতে পারছিল না।তার সহ্যের সীমা চলে যেতে লাগলো। নিজেকে বাচাবার জন্য সমুদ্রের ঠিক উপরে এসে পাখি তাদের সব সুদ্ধ পিঠ ঝারা দিয়ে ফেলে দিলো, তারপর হাল্কা হয়ে সহজেই একা একা উরে চলে গেলো। বড় ভাই আর তার বউ সেই বিরাট বোঝা নিয়ে পরল সমুদ্রের অতলে। কোন চিনহই রইলো না তাদের।