somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কান্তজিউ মন্দির-দিনাজপুরঃ স্থাপত্য শৈলী ও পোড়ামাটির ফলকে উৎকীর্ণ পৌরানিক কাহিনী (পর্ব-০৯)

১৩ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চিত্র: ভূমি নকশাঁ, কান্তনগর মন্দির।


পোড়ামাটির ফলক চিত্রঃ শ্রী কৃষ্ণের জীবন ও কর্ম-

কান্তজিউ মন্দিরে রামায়ণের পাশপাশি কৃষ্ণের জন্ম থেকে শুরু করে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ পর্যন্ত কাহিনী বিবৃত হয়েছে। কৃষ্ণ হচ্ছেন বিষ্ণুর নবম মানবীয় রূপ, যার আগমণ ঘটে বিভিন্ন অপদেবতার বিনাশ সাধন করতে। গ্রাম্য জনগোষ্ঠী যদবদের মধ্য থেকে কৃষ্ণের জন্ম হয়। তারা যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে বৃন্দাবনে বাস করত। তিনি ছিলেন দেবকী ও বাসুদেবের পুত্র। দেবকী ছিলেন ভোজর রাজা কমসোর বোন। কমসো ছিলেন খুবই দয়াহীন ও নিষ্ঠুর। তিনি তার বাবা উগ্রসেনকে মতা থেকে সরান এবং মথুরা শাসন করেন। অন্যদিকে কৃষ্ণের বাবা বাসুদেব ছিলেন সুরের পুত্র। পঞ্চপাণ্ডবের মাতা কুন্তিও ছিলেন সুরের কন্যা।৩৫ বাসুদেব ও দেবকীর বিয়ের পর একটি স্বর্গীয় কণ্ঠে বলা হয় যে, দেবকীর আটজন সন্তান কমসোকে ধ্বংস সাধন করবেন। একথা শুনে কমসো তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন এবং দেবকীর সকল শিশু সন্তানকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। জন্মদানের আগেই দেবকীর সাত সন্তানকে বাসুদেবের অন্য একজন স্ত্রী রুহিনির কোলে স্থানান্তর করা হয়। জন্মের পর একে একে সবাইকে গোকুলের যশোধার বাড়ীতে পাঠানো হয়।৩৬ আট বারের যখনই তিনি (দেবকী) গর্ভবতী হতেন কমসো তখনই কারাগারের চারদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতেন। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে শ্রাবণমাসের অষ্টম দিবসে মধ্যরাতে কৃষ্ণ জন্ম গ্রহণ করেন।৩৭ কৃষ্ণের জন্মের সময় আশ্চর্য জনকভাবে কারাগারের দরজা খোলা ছিল এবং প্রহরীরা দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ে। বাসুদেব শিশু কৃষ্ণকে ঝুড়িতে পুরে নন্দের মাধ্যমে যমুনা নদী পার করে গোকুলের যশোধার বাড়ী পৌঁছে দেন। নন্দ ছিলেন বাসুদেবের বন্ধু। যমুনা নদী পার হওয়ার সময় যমুনার পানির স্তর বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু পানিতে কৃষ্ণের পায়ের স্পর্শ লাগায় পারের উপযোগী স্তরে পানি নেমে আসে। নদী পার হয়ে বাসুদেব গোকুলে পৌঁছে দেখেন যে, যশোধাও একটি কন্যা সন্তান জন্মলাভ করেছে। তিনি শিশু কৃষ্ণকে দিয়ে নন্দের শিশুকে নিয়ে আবার কারাগারে ফিরে আসেন। কারাগারে প্রবেশের সময় হঠাৎ প্রহরীরা জেগে ওঠে এবং একটি শিশুর কান্না শুনতে পায়। তৎক্ষণাৎ এটি তারা কমসোকে অবহিত করেন। শেষ পর্যন্ত দেবকীর কাছ থেকে তিনি শিশুটিকে ছিনিয়ে নেন। তিনি শিশুটির চারদিকে ঘুরতে থাকেন এবং পাথরের মেঝের উপর শূণ্য থেকে ফেলে দেওয়ার মনস্থ করেন। যখন শিশুটিকে তিনি ছুড়ে দিলেন, তখন সে বলতে থাকল যে, দেবকীর আট সন্তান ইতোমধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে এবং নিরাপদে আছে। একথা শুনে কমসো হতভম্ব হয়ে যান। তিনি শিশু কৃষ্ণকে হত্যা করতে অসংখ্য অপদেবতা পাঠান। প্রথম পর্বে তিনি বাচ্চা কৃষ্ণকে খুঁজে বের করতে নারী অপদেবী পুটনকে প্রেরণ করেন। সে গ্রাম ও শহরে হন্যে হয়ে কৃষ্ণকে মারার জন্য ছুটে বেড়ায়। একপর্যায়ে সে নন্দের গ্রামে যেয়ে উপস্থিত হয়। সে সুন্দরী ও মোহনীয় নারী রূপ ধারণ করে। নন্দের গৃহে প্রবেশ করে সে সেখানে শিশু কৃষ্ণকে দেখতে পায়। সে কারাগারে কৃষ্ণকে বুকের দুধ খেতে দিয়েছে বলে দাবি করে। কৃষ্ণ তার দুরভিসন্ধি বুঝতে পারেন। দুধ পানের সময় কৃষ্ণ তার জীবনের উপর মরণ কামড় বসান। পটুন চিৎকার করতে থাকে এবং নিজেকে কৃষ্ণের সংস্পর্শ থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু সে তার মূল রূপে ফিরে আসে এবং মৃত্যুবরণ করে। রাখালদের স্ত্রীরা দেখেন যে নবজাতক কৃষ্ণ পটুনের স্তন নিয়ে খেলছে। তারা কৃষ্ণকে সেখান থেকে নিয়ে যান (ফলক চিত্র-১৮)।


ফলক চিত্র-১৮: শিশু কৃষ্ণকে রাসী কর্তৃক হত্যার চেষ্টা।

কৃষ্ণ ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। সে বলরাম ও গ্রামের সমবয়স্ক অন্যান্য ছেলেদের সাথে খেলাধুলায় দিন কাটায়। টিনএজে সে ছিল চরম বদমেজাজী,বখাটে ও দুষ্ট প্রকৃতির। গরুর বাছুরগুলোকে তাড়া করা, দুধ ও দধি চুরি এবং এগুলি বন্ধুদের ভেতরে ভাগাভাগি, দুগ্ধপাত্র ভাঙ্গা, বানরকে খাবার প্রদান, গোপী নামক বালিকাদের উৎপাৎ এবং তাদের দুধ, দধি ও পনিরের পাত্র ভাঙ্গা প্রভৃতি ছিল তাঁর নিত্য নৈমত্তিক কাজ। একদিন বলরাম ও তার বন্ধুরা যশোধার কাছে অভিযোগ আনেন যে, খেলার সময়ে কৃষ্ণ ময়লা জাতীয় কিছু খেয়ে ফেলে। এ ব্যাপারে যশোধা তাকে চার্জ করেন। কিন্তু কৃষ্ণ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। যশোধা তার মুখ পরিক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। কৃষ্ণ তার মুখ উন্মুক্ত করলে যশোধা সেখানে সমগ্র বিশ্ব, স্বর্গ, আকাশ, পৃথিবী, পাহাড়মালা, দ্বীপপুঞ্জ, সাগর, বাতাস, আলোকমালা, চন্দ্র, তারকারাজি, পানি, আগুন, রাশিচক্র; এমনকি তার নিজ গ্রাম ও যশোধা নিজেকে দেখতে পান। তখন যশোধা বিভ্রান্ত হন। তিনি বুঝতে পারেন না এটা কি স্বপ্ন না মতিভ্রম। সে বুঝতে পারেন যে, তার পুত্রের রয়েছে প্রাকৃতিক শক্তি।৩৮ কিশোর ও তরুণ বয়সে কৃষ্ণের সাথে রাখাল বালিকা গোপীদের অনেকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গোপীরা তাদের দেবতাকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসত। একরাতে যখন কৃষ্ণ বাঁশী বাজাতে শুরু করেন, তখন সমস্ত নারী ও তরুণীরা তাদের বাড়ীঘর ত্যাগ করে বনে তাঁর সাথে যোগদান করেন। সেখানে রাসলীলা নামক এক নাচের উৎসবে সবাই মেতে উঠে। নারীরা প্রত্যেকে এমন ধারণা করতে থাকে যে, দেবতা কিভাবে একমাত্র তাঁকে নাচের সংগী হিসেবে পছন্দ করবে। এই নাচে নারী ও পুরুষ বক্রাকারে নাচতে থাকে। বলা হয় যে, এ সময় ঈশ্বর নারী ও পুরুষের মধ্যে ভাগ হয়ে পড়েন (ফলক চিত্র-১৯)।৩৯


ফলক চিত্র-১৯: কৃষ্ণ রাখাল বালিকাদের জামাকাপড় চুরি করেছে।

কৃষ্ণের প্রতি অনেক নারীর প্রেম সংক্রান্ত বিভিন্ন রকম গল্প প্রচলিত আছে। তবে রাধাকে নিয়েই বেশি কাহিনী গড়ে উঠেছে। অসংখ্য গল্প, কবিতা, গান, পেইন্টিং ও ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে রাধা ও কৃষ্ণের অভ্যন্তরীণ ও সংবেদনশীল জীবন নিয়ে।

গোকুল গ্রামের গোপীরা শীতকালের প্রথম মাসে কাটায়ূনী দেবীকে পুজো করত। এ সময় তারা ভাত ও ঘি ভক্ষণ করত এবং সূর্যোদয়ের সময় নদীতে গোসল করত। একদিন তাদের গোসল করার সময় যুবক কৃষ্ণ সেখানে আগমণ করেন এবং তাদের জামা কাপড় চুরি করে নিয়ে গাছে উঠে নিজেকে লুকিয়ে রাখেন। গোসল শেষে বালিকারা তাদের জামা কাপড় পায় না। তারা আশেপাশে তাকাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা কৃষ্ণকে তাদের কাপড়-চোপড় সমেত গাছে বসে থাকতে দেখে। তারা ব্যাপকভাবে লজ্জিত হয় এবং আবার নদীতে ফিরে যায়। কৃষ্ণকে তাদের পরিচ্ছদ ফেরত দিতে অনুরোধ জানায়। কৃষ্ণ মুচকি হাসেন এবং বলেন যে, পানির ভেতরে তোমাদের নগ্ন অবস্থায় সাঁতার কাটা তার (পানি) আধ্যাত্মিকতার প্রতি অপমানস্বরূপ। তিনি তাদেরকে হাতের তালু যুক্ত করে কৃত পাপের ক্ষমা প্রার্থনার শর্তে কাপড়-চোপড় ফেরত দিতে রাজি হন (ফলকচিত্র-২০)।৪০


ফলক চিত্র-২০: রাস লীলা উপলে রাধা ও কৃষ্ণ গোপীদের সাথে নৃত্যরত।


পটুনা অপদেবীর পরে কমসো কৃষ্ণকে বধ করতে অসুর শক্তসুরকে পাঠান। কৃষ্ণ গরুর গাড়ীর নিচে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকাকালে অপদেবতা উড়ে এসে গাড়ীতে আঘাত করেন। গাড়ী ভেঙ্গে চুরে যায়। কিন্তু কৃষ্ণ এতে সজোরে আঘাত করলে পরিণতিতে অপদেবতা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এরপর কমসো ত্রিনভরটকে পাঠান। কৃষ্ণ তাকে পাথরের উপরে ছুড়ে মেরে হত্যা করেন। পরবর্তীতে গরুর বেশে ভতসুরা, ঘোড়ার বেশে কেশী, গাধার বেশে ধেনুক, ষাঢ়ের রূপে এরিসতো, এবং বকসুরা প্রমুখ পিশাচ অপদেবতাদেরকে কৃষ্ণকে হত্যার জন্য কমসো প্রেরণ করেন। কিন্তু এদের সবাই তাদের অর্পিত দায়িত্ব পালনে অকৃতকার্য হয়।

কিশোর বয়সে কৃষ্ণ বহুমাথাযুক্ত অভিশপ্ত বৃহৎ সর্প কটিলকে হত্যা করেন। ভগবত পুরাণ অনুসারে একদিন কৃষ্ণ তাঁর বন্ধু বান্ধব সহ বৃন্দাবনে ঘুরছিলেন। তাদের গরুগুলি এ সময় কালিন্দি নদীর দিকে চলে যায়। তখন ছিল প্রচন্ড গরমের দিন। সবাই এক পর্যায়ে তৃষ্ণার্ত হয়ে যায়। তারা নদীর পানি পান করতে সেদিকে গমন করে। কিন্তু পানি ছিল দূষিত ও বিষময়। পানি পানের পর পরই তাদের সবাই জীবন হারাল। কিন্তু কৃষ্ণ ক্ষণিকের জন্য অমীয় সুধায় বৃষ্টি ঘটানোর মাধ্যমে তাঁর বন্ধু বান্ধব ও গরুগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করেন। কালির বিষের আগুনে কলিন্দী নদীর কিছু এলাকা ফুটতে থাকে। এসব জায়গার বাতাস হয়ে পড়ে বিষসমৃদ্ধ এবং কেউ এস্থানগুলো অতিক্রম করতে পারে না। কৃষ্ণ কালিকে হত্যা করতে নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে এবং কিছু সময় পর্যন্ত তার কোন দেখা মেলে না। সবাই চিন্তায় পড়ে যায় যে, তারা কৃষ্ণকে বোধ হয় হারাল। কৃষ্ণ কালির সাথে বিভিন্ন আঙ্গিকে যুদ্ধ চালাতে থাকে। সে কালির বিভিন্ন মাথার উপর দাড়ায় ও নাচে। সাপটি শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণের কাছে দয়া ভিক্ষা করে। অবশেষে কালিকে এ অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার শর্তে ক্ষমা করা হয়। কৃষ্ণের দয়ায় কালিন্দি নদীর পানি বিষমুক্ত হয়, ঠিক যেন অমৃত ধারার মত।৪১

এক দিন বৃন্দাবনের লোকেরা বৃষ্টির দেবতা ইন্দ্রের প্রতি প্রার্থনা করছিল এবং তাঁর নিকট বৃষ্টি কামনা করা হয়। এ সময় কৃষ্ণ তাদেরকে থামান এবং বলেন যে, বৃষ্টি ও সমৃদ্ধি সম্পূর্ণ সূর্যের উপর নির্ভরশীল। তিনি তাদেরকে প্রকৃতি যেমন গাছপালা, নদীনালা, পাহাড়, সাগর প্রভূতির পুজা করার শিক্ষা দেন। এ সময় কৃষ্ন গোবর্ধন পাহাড়কে তুলে এনে তার কনিষ্ঠ আঙ্গুলে স্থাপন করে সমস্ত মানুষ ও গরু রক্ষা করেন।৪২

মথুরার রাজা শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণ ও বলরামকে ক্রিড়া ও উৎসব উপলে মথুরায় আমন্ত্রণ জানান। তিনি মথুরার একমাত্র সৎ ব্যক্তি আবারুরাকে প্রেরণ করেন। আবারুরা কৃষ্ণ ও বলরামকে বৃন্দাবনের জনসাধারণসহ মথুরায় আমন্ত্রণ জানান। আবারুরা কমসো ফাঁদের কথা তাদেরকে বলে দেন। কিন্তু কৃষ্ণ ও বলরাম এতে কোন ভয়ের লেশ মাত্র পাননি। কমসো পিশাচ কেশিনকে ঘোড়ার রূপে বৃন্দাবন পাঠান। কৃষ্ণ কেশিনকে হত্যা করেন এবং মথুরায় গিয়ে উপনীত হন। ইতোমধ্যে সেখানে আর্চারী প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। শিবের ধনুক ভাঙার প্রতিযোগিতায় অসংখ্য মানুষের ভীড় জমে। কৃষ্ণ ও বলরাম এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁরা শিবের ধনুক ভাঙতে সামর্থ্য হন। একথা শুনে কমসো চিন্তা করলেন তার মৃত্যু সন্নিকটে। সে কুভলোপিডো নামক একটি হাতি পাঠায় কৃষ্ণকে ধ্বংস করতে। কিন্তু কৃষ্ণ হাতিকে হত্যা করে অ্যাম্পিথিয়েটারের ভেতরে প্রবেশ করেন। যেখানে রেসলিং টুর্নামেন্ট চলছিল। কমসো সেখানে তাঁর মন্ত্রী পরিষদ ও নিরাপত্তাকর্মীদের মাঝে বসে ছিল। রেসলিং এ কৃষ্ণ দুর্ধষ চনুরা ও মুশতককে হত্যা করে কমসোর নিকটে উপস্থিত হন। কৃষ্ণ তাকে উল্টে ফেলে দেন এবং হত্যা করেন। তিনি মথুরা রাজ্যকে উগ্নসেনকে ফিরিয়ে দেন।৪৩

কমসোকে হত্যার পর কতিপয় অসুর দেবতা যেমন- শঙ্খ সুরা, কলোবন প্রমুখকে কৃষ্ণ বধ করেন। এরপর তিনি সমুদ্রের মাঝখানে তার নিজস্ব শহর দ্বরক নির্মাণ করেন। কৃষ্ণ তাঁর নিজস্ব শহরে ১৬ হাজার ৮ জন সঙ্গী নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। তবে রুকমিনি ও সত্যভম ছিলেন তাঁর প্রধান স্ত্রী।৪৪ মনে করা হয় যে, রুকমিনি হচ্ছে বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মীর মানবী রূপ। রুকমিনির ভাই রু শিশুপলের সাথে রুকমিনির বিয়ের ব্যবস্থা করেন। শিশুপল ছিলেন মানবরুপী রাবণ। কিন্তু রু এ ব্যাপারে এতোটা ভীত ছিলেন না। কিন্তু রুকমিনি ভয় পান। সে কৃষ্ণকে গোপন চিঠি লেখেন এবং কৃষ্ণ বিয়ের দিন সকালে এসে হাজির হন। কৃষ্ণের সাথে রুকমিনি গোপনে পলায়ন করেন। পরবর্তীতে কৃষ্ণ তাঁর চাচাত ভাইদের (পঞ্চপাণ্ডব) সাথে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এ যুদ্ধ ছিল মহাভারতে বিবৃত এক মহাযুদ্ধ, যেখানে পাণ্ডব ও কোরভদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সংঘটিত হয়। কৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনের সারথি ছিলেন (ফলক চিত্র-২১)।


ফলক চিত্র-২১: কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ।

যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে সে ভগবত গীতা পড়ে অর্জুনকে শোনান এবং নিজেকে দেবতা হিসেবে প্রমাণ করেন।৪৫


তথ্য নির্দেশনা:
৩৫.
Saletore, R. M. Op. Cit, P. 49.
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 110.

৩৬.
O’ Flaherty, Wendy Doniger, "Hindu myths: A Source Book" (translated from the Sanskrit), New Delhi: Penguin Books Ltd, 1975, PP. 204-213,
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 110

৩৭.
Knappert, Jan, Op. Cit, PP. 145-146.
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 110.

৩৮.
O’ Flaherty, Op. Cit, P. 218,
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 111

৩৯.
Knappert, Jan, Op. Cit, PP. 142-145.
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 112

৪০.
O’ Flaherty, Op. Cit, PP. 228-230.
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 112

৪১.
Ibid, PP. 221-228.
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 113.

৪২.
RaoGopinath, Op. Cit, P. 197,
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 113.

৪৩.
Ibid, P. 198, Ges Knappert, Op. Cit, PP. 142-145,
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 114.

৪৪.
Rao, Ibid, P. 198.
উদ্ধৃত
Hoque, M. M et al. Ibid. P. 114.

৪৫.
Hoque, M. M. et al. Op. Cit, P. 114
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:১০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×