somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র ও বটতলা থেকে ঘুরে এলাম

১০ ই জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ময়মনসিংহের ত্রিশাল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজরিত এলাকা। কবির শৈশব কেটেছে এখানে।
কবির জন্মদিনের পরের দিন ২৫শে মে গিয়েছিলাম স্মৃতি কেন্দ্র ও ত্রিশালের নজরুল মেলায়।

১৯১৪ সালে আসানসোল থেকে ত্রিশালের কাজীর শিমলা গ্রামের দারোগার বাড়িতে নজরুলকে নিয়ে আসেন কাজী রফিজউল্লাহ। কিছুদিন পর নজরুল জায়গির হিসেবে চলে যান একই উপজেলার বিচ্যুতিয়া ব্যাপারী বাড়িতে। পাশের গ্রাম নামাপাড়ায় বিশাল বটতলায় বাজতো কবির বাশিঁ।
ব্যাপারী বাড়িতে স্থাপিত হয়েছে নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র ও নজরুল গবেষণাগার।

আঙিনায় স্থাপিত হয়েছে দুটি ‘নজরুল স্মৃতিকেন্দ্র’। একদিকে ২ তলা বিশাল কেন্দ্র যাতে রয়েছে সম্মেলন কেন্দ নিচে ও উপরে ১৪০০ বই এর সংগ্রহ ও কবি নজরুলের বিরল সব ছবি, তার ব্যবহৃত পালঙ্ক ও গ্রামোফোন রেকর্ডজিনিস সংরক্ষণ।
টিন ও কাঠ দিয়ে তৈরি ঘরটি নজরুল গবেষণার জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
এখানকার নজরুল উদ্যানে কবির লেখা কবিতা, গান ও কাব্যে স্থান পাওয়া বিভিন্ন বৃক্ষরাজি দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, গবেষক, শিল্পী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে রোপণকৃত তা দেখা যায়।


ঢাকা থেকে প্রায় ১০০ কি.মি। বাসে করে যেতে পারবেন। তবে আমি ময়মনসিংহ শহর থেকে গিয়েছিলাম মাত্র ২০ মিনিটে। ত্রিশালে বাস থেকে নেমে, দুখুমিয়া বিদ্যালয় পার হয়ে ভ্যানগাড়ি বা রিকসা করে যেতে হবে।


দুই দিকে দুই সাঁকো পার হয়ে রিকসায় উঠতে হবে।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের পাশেই কবির স্মৃতি বিজরিত 'বটতলা' যেখানে কবি বসে বাশিঁ বাজাতেন শৈশবে।
বিশাল বটতলায় বসে আজ আর সেই সুর শুনতে পারবেন না। কিন্তু অনুভব করতে পারবেন মায়া।

সেই বটতলা

হেটে সামনে ব্যাপারী বাড়ির দিকে চললাম। প্রিয় কবির স্মৃতি আকঁড়ে তৈরি করা হয়েছে নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র।
১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রথম কেন্দ্রটি এখন ধ্বংসাত্বক। নতুন করে ২০০৮ সালে নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে এটি।


বিশাল ভবনের পাশে রয়েছে সান বাধানো পুকুরের ঘাট। গাছের সমাহার।
দর্শনার্থীদের বসার জায়গা।


স্মৃতিকেন্দ্রের নীচ তলায় সম্মেলন কেন্দ্র। দু-তলায় রয়েছে কবির হাতে লেখা কবিতা, গান ও চিঠি রয়েছে।

কবির হাতে লেখা জাতীয় রণ সংগীত

কবির ব্যবহায্য গ্রামোফোন রেকর্ড ও পুরুষ্কার-


প্রায় ১৪০০ বইয়ের সংগ্রহ। যেখানে বেশির ভাগ কবির লেখা বই ও ডাইরি।


কিছু জিনিসের ছবি তোলার নিষেদাজ্ঞা থাকার কারণে তুলতে পারিনি। দেখে এসেছি শুধু।

আসার সময় ঘুরে আসি নজরুল জয়ন্তী ও মেলা থেকে-


সময় সুযোগ পেলে চলে আসুন এই গবেষণা কেন্দ্রে। ত্রিশালেই রয়েছে দারোগাবাড়ি ও কবির স্কুল পালানো দিন গুলোর সেই স্কুল।

কিছু কথা- কেন্দ্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হওয়ার কারণে প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী আসে। কিন্তু এটি তেমন স্বমৃদ্ধ নয়। কবির আরো জিনিস এখানে রাখা যায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। গবেষণার উন্মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা উচিত। দর্শনার্থীদের বিনোদন, বসার জায়গা ও লোকবল বাড়ানো উচিত এখানে। কথা বলে জানতে পারি এখানে মোট ১৮টি পদ রয়েছে কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৪ জন রয়েছে দেখাশোনার জন্য! অপ্রতুল লোকবল। সঠিক পরিচর্চা না করলে এটি দর্শনার্থীদের টানতে পারবে না, আর নজরুলের আর্দশ, শিল্প সাহিত্যের সাথে পরিচয়ে সফল হবেনা। আশা নিয়ে এসেও নিরাশায় ফিরে যেতে হবে নজরুল পিয়াসীদের।
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×