somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপ্রিয় সত্য

১০ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মাঝারে বাজার - বাজারে মাঝার
মুসলমান হিসেবে যে সব কাজ নিন্দনীয় তার মধ্যে অন্যতম হল কাউকে পুজা করা বা কারো কাছে কিছু চাওয়া। সহযোগিতামূলক কাজ বা ব্যবসায়ীক আদান প্রদান ব্যাতিরেকে কোন মানুষের কাছে চাওয়া প্রায় গুরুতর অন্যায়। জীবিত কিংবা মৃত হোক কেউ চাইলে কাউকে সে দেবার মালিক নয়। প্রত্যেকটি কর্মক্ষম বা সচ্ছল মানুষ নারী পুরুষ তাহার আয় বা স¤দ থেকে এমনিতেই দিতে হবে- তা হবে যাকাত-স্বাদাক্বা বা লিল্লাহ। মানত করে বা মিনতি করে আদৌ সে চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। এশিয়ান উপমহাদেশে আমরা প্রায়ই দেখি বিভিন্ন মাজারে মানত (নিয়্যত) করে দেওয়া হয় অর্থক কড়ি গরুছাগল ইত্যাদি মাজার শব্দটি আরবী নয়। তবু কোন আলেম বা পীর বুজর্গের কবরকে মাজার বলে সম্বোধন করা হয়, জীবিত পীর সাহেবরা কোন ভাবেই বলে যাননি বা মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সঃ)ও বলেন নি যে এই ভাবে কারো কবরকে ঘিরে ইবাদাত বন্দেগী করতে হবে। তবুও আমরা কোথাও দরগাহ আবার কোথাও মাজার বানিয়ে রীতিমত ধৃস্টতা করে যাচ্ছি। একজন সাহাবী (রা)র এক ঘন্টা সমমানের মর্যাদায় পৌছা সম্ভব হয়নি এ যাবতকালের কোন পীর সাহেবদেরই হযরত বড় পীর গৌসে পাক আব্দুল ক্বাদীর জিলানী (রা.)র ভাষ্যমতে ইবাদাত বন্দেগীতে যে কেহই আল্লাহর সান্নিধ্যে এত কাছে পৌছাতে পারে যে আল্লাহ এবং বান্দাহ এর মধ্যে কোন পর্দাই থাকে না- তবু একজন সাহাবী (রাঃ) মর্যাদায় একদম সামান্য ও নিঃপ্রভ। এমন কি জিন্দা সাহাবীদের ঘোষণা দিয়ে বলে দেওয়া হয়েছে জান্নাতী বলে- যাহাদের আমরা আশারায়ে মুবাম্বিরা বলে জানি। মহানবী (সঃ) ইনতিক্বালের আগে তাদের অনেকেই মৃত্যবরণ করেছেন এবং তিনি নিজে জানাযাও পড়িয়েছেন তাদের কবরকে ঘিরে কেউ ইবাদাত বন্দেগীও করেননি মানত কিংবা হাজত মুশকিলের জন্য বলেনও নি। ইমামে আযম হযরত আবু হানিফা (রা) এত কামেলে মোকাম্মেল ছিলেন যে তিনি বলে দিতেন অজু করলে কার কতটি গোনাহ ঝড়িয়ে পরেছে। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সাথে সাক্ষাৎ কথা হয়েছে বহুবার। তিনি কারাগারে ইনতেকাল করার আগে যে বই লিখেছেন সেখানে ¯পস্ট করে বলেছেন এক মাত্র জেয়ারাতে মাগফিরাত ছাড়া কোন কবরে বসে কান্না কাটি বা আহাজারী করা পাপের সামীল। ইয়াহুদ ও নাসারারাও তাদের মধ্যে বড় কিংবা নামী কেউ মৃত্যুবরণ করলে তাদের আলাদাভাবে কবরস্থ করে না- কবরের জন্য নির্ধারিত স্থানেই সমাহিত করে যতেœ বা পরিপাটি করতে অবহেলা করে না পশ্চিমা দেশগুলাতে সরকারী ভাবেই রক্ষাণা বেক্ষণ করা হয় গেইটে কড়াভাবে লিখে দেওয়া আছে অনেক জায়গায় ছঁরঃ ঢ়ষবধংব. খরাব ঃযবস জবংঃ রহ ঢ়বধপব. হিন্দুরাও তাদের শ্বশান ঘাটে দেহ জ্বালিয়ে ভষ্ম ছাই ভাসিয়ে দেয় চলন্ত পানিতে। অবশ্য তাহারা মৃতদের মূর্তি বানিয়ে স্বরণে দাড় করিয়ে বা বসিয়ে রাখে যত্রতত্র। স্বরণ সভায় তাদের নিয়ে কীর্তন করে কাহাকে যে কি জানায় বলা প্রায় মুশকিল। তাদেররে বা তাহাদের অনুসারীদের কবরকে সামনে রেখে ভক্তি পুজায় মত্ত্ব আমার চোখে পরেনি। যা দেখেছি আমাদের পীর বুজুর্গ ওলামা মাশায়েখদের কবরকে মাজার বা দরগাহ বানিয়ে করতে। ওলীকুল শিরোমনি শাহজালাল (রা.) এর মাজারে আমার বহুবার যাবার সুযোগ হয়েছে সিলেটে পড়ার সময়ে। লোকেদের হাল্লা গোল্লায় ও বিশৃঙ্খলতায় বিরক্ত ও অতীষ্ঠ হইতে হয়। উরস বলে বাৎসরিক মহড়ায় তো যা হয় তা বর্ণনাতীত। শুধু তো তাহাই নয় মহাসড়কগুলার পাশে অগুনতি মাজার ও দরগা / আদব ও ভক্তির কথা বলে যে সকল ভয় দেখানে হয় এতে মনে জাগে ঐ আল্লাহর ওলী হাশরের ময়দানে যদি প্রশ্ন করেন আমি কি গোন্ডা ও সন্ত্রাসী ছিলাম? এইভাবে আমাকে দিয়ে হাদিয়া নজর নিয়াজ নিয়ে লোকেদের মনে আমাদের স¤র্কে যে ভয় ঢুকালে? তখন কি জবাব দিবে ভন্ড সমাজ।।।
কারামাতে কুদরতের কথা বলে শ্রদ্ধা ও সম্মানের পরিবর্তে আতংক সৃস্টি করে ওলী আউলিয়াদের মর্যাদা হানী ছাড়া আর কিছুই করা হচ্ছে না। প্রায় প্রত্যেকটি মাজারে বেহায়াপনা অশ্লীলতা এবং হেন এমন কোন কু কর্ম নেই যা করা হচ্ছে না। মাজারে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে অনেক পৌরসবার বাজেট ঘাটতি মেটানো সম্ভব। গরু ছাগল দিয়ে তো শত সহস্র গরীব কৃষক স্বাবলম্বী হতে পারবে। দুস্ট চক্র শিরনী বানিয়ে খেতে দেয়, ঐ খাবার ভিখারীরা বিক্রি করে তবরুক নাম দিয়ে। একই তবরুক ফকিরদের দেবার জন্য কিনে ভক্তারা- ফকির ভিখিরীরা তা আবার ফেরত দিয়ে দোকানী থেকে টাকা আয় করে- এই রকম বহ ুকাহিনী ঘটে যা একদম বাস্তব সত্য। অপরদিকে অনেক মাজার ঘিরে রয়েছে মাদ্রাসা ও ইয়াতিম খানা। এতেও তাদের অংশ রয়েছে আয় থেকে। আলেম উলামারা যে মাজার ঘিরে ঘাপটি মেরে বসে থাকেন আর সেই নজর-নিয়াজ-হাদিয়া দিয়ে আয়েশী ও বাহারী জীবন যাপন করেন আল-কোরআন হাদীস শরীফ চষে বেড়ান তা আল ইসলঅমের কোথায় পেলেন? তাদের নীরব লোভী মনোভাবের কারণে কি দুস্ট ভন্ড শয়তান চক্ররা আস্কারা পাচ্ছে না? তাহারা মাজারে গদীনিশীন হয় এবং মাজার পুজায় লোকেদের প্ররোচিত করে ধর্ম প্রাণ সরল মানুষদের উল্টাপাল্টা কলপ কাহিনী বলে ফায়দা লুটে তাহারা আলেম হয় কি করে আমার বুঝে আসে না। মাজারের পানি- দাগা শল-তাবিজ ইত্যাদি দিয়ে ইলমে মা‘রেফাতের বয়ানে এগানা বৈগানা নিয়ে ঢাক ঢোল বাজিয়ে জিকিরের অবমাননায় লিপ্ত তাদেরকে ভন্ড ও সাক্ষাৎ শয়তান ছাড়া আর কিছুই বলা যাবে না। আউল বাউলের কন্ঠে গান শুনে যদি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা যেত তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা নবী (আঃ) দের হাতে একতারা বেহালা দিয়ে দিলেই তো পারতেন। তাদেরে কিতাব দিয়ে সুনির্দিস্ট ও কঠোর দায়িত্ব দিতেন না। ওলী বুজর্গরা আম্বীয়া (আঃ)দের পদাংক অনুসরণ করে যে ত্যাগ ও নীতি-নিষ্ঠা আদব আখলাক ও শিস্টাচার শিক্ষা দিয়ে আমাদের ইমানী শক্তিতে বলীয়ন এবং মহিয়ান হবার পথকে সুগম করে দ্বীন প্রতষ্ঠিার সংগ্রাম করেছেন- আমরা মাজারে গিয়ে সর্ব তামাশায় লিপ্ত হয়ে শুধু ঐতিহ্যকেই ভুলুন্ঠিত করছি না ধ্বংস করছি নিজেকে এবং সমাজকে। হক্ব এবং বাতিলের পার্থক্য নিরুপণ করা কস্টকর হয়ে দাড়ায় এই সব বাজারী কর্মকান্ডে- বাজারে এবং মাজারে আজ একাকার। ধর্মের উপরে অধর্মের জয় জয়কার। আলেম উলামারা পথের দিশারী- উম্মতে মোহাম্মাদী (সঃ) জন্য উলামা পীর মাশায়েখরা পরশমনী। কিন্তু কই- গোটা উপমহাদেশটাই এখন ভরে উঠছে মাজারে ও বাজারে। এই অধঃপতনে তাহাদের নীরব ভ’মিকা আদর্শ সমাজ ঘটনের ক্ষেত্রে এক অশনী সংকেত। একে কোন কম জুরী বলব না কি সুযোগ সন্ধানী জ্ঞান পাপীদের সমাহারে আত্ম নিবেদিত বা উপেক্ষিত বলব! আমাদের তামান্না কি হতে পারে না কবি নজরুলের মত- মাছজিদের পাশে কবর দিতে- যেখানে হবে না কোন মাজার এবং বসবে না কোন বাজার- ইংল্যান্ড এবং ইউরোপের ঘরে ঘরে পাঠানো হয় ডাক যোগে হাদিয়া এবং নজর নিয়াজ দিয়ে শরিক হয়ে পুন্য কামাই করতে- পত্রে থাকে দোয়া তারিজের জন্য স্টিকার- যা ব্যবহারে কোন ফায়দা হবার নয়। মাঝারের ছবি ব্যবহারে বা লটকানো ও কােন উপকারে আসবে না। খাদেমরা একেক জন আরেক জনের কাছে কিছুই পাঠাতে মানা করে সতর্ক করে থাকে। আবার কেউ কেউ এই দেশেও উরসে মত্ত হয় কীর্তন লীলায় পর্যন্ত করে থাকেন। যা কোনক্রমেই সমর্থনযোগ্য নয়। খতমের নামে পসরা সাজায়ে যে সব অপচয় এবং ব্যায় করা হয় তা অপচয় বৈ কিছুই নয়- বরং ঐ উরষ ও খতম নজর নিয়াজ ও মানতের টাকা দিয়ে অনায়াসে পরিবা রপরিজন নিয়ে পবিত্র উমরা আদায় করে রাওয়াজায়ে নবী (সঃ) কে জিয়ারাত করে আসা যায়- অথবা উপমহাদেশ সহ আফ্রিকান দেশে বহু ইয়মিতদের ¯পন্সর করে তাদেরও সহায়তা করা যায়/ নীজ আমল আখলাক্ব পরিবর্তন না করে মাঝারের বাজারে তনো মন সপে দিলেও কোন কল্যাণ সাধিত হবে না। কোন ওলী আউলিয়া পীর মাশায়েখ বুজর্গদের যেমন বাজারে খুজলে পাওয়া যঅয় না তেমনি আল্লাহ সান্নিধ্য পেতে মাঝারেও যেতে হবে না। আমি এ ব্যাপারে কিছু কিছু বলায় বিভিন্ন ভাবে তাদের হামলার শিকার তবু সত্যকে সত্যই বলতে হয়- সত্য অপ্রিয় হলেও মানতেই হবে- মাঝারী এবং বাজারীদের দিয়ে অলীক কলপ কাহিনী বলানো যায় ঠিক কিন্তু ষঃত্য মোকাবেলায় তাহারা বহু দূর। আমাদের এইসব ভেজাল থেকে দুরে থাকাই শ্রেয় বলে মনে করি- এবং মাঝারের নামে ভন্ডামীকে প্রতিহত করতে সচেস্ট হই- কবি বর আল্লামা ইকবালের ভাষায় বলি-
খুদীকো,কর বুলন্দ ইতনা
হার তাক্বদীর সে পেহলে
আল্লাহ বন্দাহ সে খোদ পুচে
জ্যা বাতা তেরী রেজা কিয়া হে
[email protected]
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×