somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রান্নাঘর থেকে সরাসরি B-)

০৮ ই জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রান্না করাটা ইদানিং একটা প্যাশনে দারিয়ে গেছে! আমি খেতে ভালোবাসি। আর তাই রান্না করতেও ভালোবাসি! প্রতিদিন অবশ্য রান্না করতে ভালো লাগে না! সময়ও পাই না! তাই ছুটির দিনগুলোতে একটা কিছু স্পেশাল রান্না করতে ভালই লাগে!

ভেবে দেখলাম প্রায় কুড়ি বছর আগে নব্বইয়ের দশকে আমি প্রথম রান্না করেছিলাম! বাবা তখন হবিগন্জে পোস্টেড ছিলেন। আমাদের ঐ ক্যাম্পাসটাতে তিনটা বড় বড় পুকুর ছিলো।আমাদের বাসার কাছে যে পুকুরটা, প্রায় বিকালে সেখানে ছিপ ফেলে মাছ ধরতাম! আটা দিয়ে টোপ বানাতাম। ছোট ছোট মাছ ধরা পড়ত। সেই মাছ কখনও বাসায় নিতাম না। কিন্তু একদিন কি মনে হলো, বাসায় নিয়ে গেলাম। মামনিতো সন্ধ্যাবেলায় কিছুতেই মাছ ধরবে না! আমিও নছোড়বান্দা! পুচঁকি ছিলাম তো কি? জিদ্দী ছিলাম তো! এই মাছ রান্না করতেই হবে! আচ্ছা আর কেউ না করে দিক, আমি নিজেই পারি! কে কেটে দিলো, কে ধুয়ে দিলো, কিছ্ছু মনে নেই, শুধু মনে আছে সেদিন প্রথম রান্না করেছিলাম।এবং সেটা খাওয়াও হয়েছিলো।

এবার বর্তমানে ফেরা যাক! দেশে থাকতে শুধুমাত্র পারিবারিক বা ধর্মীয় উৎসবের সময়ই রান্না করেছি! আর এখন তো সব সময়ই রান্না করতে হয়! অবশ্য আমার বর খুবই সাপোর্টিভ। দেশে সে এক কাপ চাও বানতে পারতো না! কিন্তু এখন আমার চেয়েও পাকা সেফ! তো আমরা দুজন মিলেই রান্না করি। যেকারনে রান্নাটা এখন ফান! শুধু তো বকবক করছি! চলুন আপনাদেরকে আমার রান্নাঘরটা দেখাই....


হুম, এই হলো আমার রান্নাবাটি খেলার জায়গা!

তো যা বলছিলাম, ছুটির দিন মানেই স্পেশাল রান্না! চলুনতো দেখি কি এমন স্পেশাল রান্না...............................


এই সিংগারা আমার এবং আমার বরের যৌথ উদ্যোগে তৈরী! :)

সেদিন স্কাইপিতে কথা হচ্ছিলো আমার বোনের সাথে। ও জানতে চাইছিলো দেশে গিয়ে আমি কি কি খেতে চাই। সিংগারা বলাতে ওর এক বান্ধবী হেসেই খুন! শুধুমাত্র যারা বাইরে থাকে তারাই বুঝে, কি পরিমান মিস করি এই খাবারগুলি! আরেকটা খাবার খুব বেশী মিস করি, "ফুচকা"

অবশ্য শুধু দেশী খাবার না! ইতালীয়ান খাবারও আমার খুবই প্রিয়। বিশেষ করে পিৎজা আর পাস্তা। ভাল পাস্তা পেলে আমি ভাত এভয়েড করি! আর পিৎজা শুধুমাত্র পিৎজা হাটের টাই পছন্দ। কিন্তু সব সময়তো আর পকেট কাটতে পারা যায় না! তাই মাঝে মধ্যে বাসাতেই বানিয়ে ফেলি। দেখুনতো কেমন হলো..........................



এখানে খুব টুনা মাছ পাওয়া যায়! টুনা মাছের মধ্যে রয়েছে Omega-3 fatty acid । কিন্তু বাঙালী কায়দায় রান্না করলে ঠিক জমে না। কি আর করা! বানাও কাবাব! খেতে কিন্তু দারুন! পাকিস্তানী এক স্কলার আমার বানানো এই কাবাব খেয়ে বলেছে, এখানে এসে এক বছরে সে যা খেয়েছে , তার মধ্যে এটাই হলো বেস্ট!


টুনা কাবাব

শাকসব্জির দামটা চড়া হলেও, পাওয়া যায় কিন্তু বেশ টাটকাই!
দেখুন না কেমন পাঁচ ফোড়ন দিয়ে লাউ টমেটোর ঝোল করেছি। আমার বর তো খুবই পছন্দ করলো!



ছোটবেলায় কোনো মাছই দুই চোখে দেখতে পারতাম না, এক চিংড়ী ছাড়া! ভুনা চিংড়ী হলে আমার আর আমার বোনের আর কিছুই লাগতো না! এই চিংড়ী ভুনাটা মনে হয় আমার রান্না করা বেস্ট চিংড়ী ভুনা!



ব্লগ যে আমাদের জীবনে কত প্রভাব বিস্তার করে , তার প্রমান হলো এই "খেবসা"! এই রেসিপি আমি "সৌদি আরবের ডায়েরী" পড়তে গিয়ে পেয়েছি!


চেহারা দেখেই বুঝতে পারছেন, খেতে কি দারুন হয়েছিলো!

আমার আরেকটি দুর্বলতা হলো বিরীয়ানী! এটা বংশগত। আমার মার কাছ থেকে এসেছে! সুজোগ পেলেই বিরীয়ানী রান্না করে ফেলি!



এইতো গেলো টোনাটুনির ছুটির দিনের ভোজনবিলাস! বন্ধুবান্ধব কি নেই আমাদের ? তাদের কি বলি না বাসায়? বলি তো! বিশ্বাস না হলে ছবি দেখেন , কতকিছু রান্না করে খাওয়াই বন্ধুদের!


(মেন্যু: সালাদ, টুনা কাবাব, রুপচাঁদা ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, মিক্সড ভেজ-১, মিক্সড ভেজ-২ , ফিরনী।)


(মেন্যু: ফিরনী,পোলাউ, মিক্সড ভেজ, নাড়িকেল চিংড়ীর মালাইকারি, মুগ ডাল, আলুর চপ, পাতাকপির পাকোড়া, বাঙ্গুস মাছ ফ্রাই।)


(স্পেশাল ভেজেটারিয়ান মেন্যু: পোলাউ, মিক্সড ভেজ,আলু-ফুলকপি কারি, আলুর চপ, বেগুন ভাজা, মুগ ডাল, ফিরনী এবং মিক্সড ফ্রুটস।)

আচ্ছা এতো কস্ট করে পোস্ট পড়লেন, এবার একটু মিস্টিমুখ করুন.......................................


কাস্টার্ড
আগেই বলে নিচ্ছি , কাস্টার্ডের উপরে যে ফুলগুলো দেখতে পাচ্ছেন, ওগুলো ম্যলোস, এক ধরনের চকোলেট।

ছোটবেলায় ঈদের সময় মামনি যত কিছুই রান্না করুক না কেনো, আমার জন্য অবশ্যই অবশ্যই জর্দা করতে হতো! অনেক পছন্দের একটা খাবার আমার। আমিও গত ঈদে জর্দা বানিয়েছিলাম। নামাযের পর আমার সুপারভাইজার এসেছিলেন! উনাকে অবশ্য খাবারটা ততটা আকর্ষন করেনি, যতটা বাচ্চাদের কে করেছিলো।



ঈদে বানানো খুব প্রিয় একটা খাবার দিয়ে পোস্ট শেষ করছি। জানি এটা সম্ভব নয়, তার পরেও প্রত্যাশা থাকবে সবার জীবনের প্রতিটা দিনই ঈদের মত আনন্দময় হোক! হ্যাপি ইটিং, হ্যাপি ব্লগিং, হ্যাপি লিভিং। :)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩৭
৫২টি মন্তব্য ৫২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×