somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গরিবের ঘোড়ারোগ : তপ্ত ভাতে নুন জোটে না পান্তা ভাতে ঘি!!!

০৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




স্বপ্নের পদ্মাসেতু। দুরাশার বিশ্বব্যাংক। এইচআরডব্লিউ এর খোঁচা। ভিআইপি মোবাইল নাম্বার। দুদকের দৈন্যতা। দুর্নীতির পাগলা ঘোড়া। বাজেট-ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। হবুচন্দ্র গবুচন্দ্রের আঁতলামি। সেয়ানা রাজনীতিকের মাতলামি।লোকজন জেনে গেছে তাই টাকা আমার না। তত্ত্বাবধায়ক হবে-হবে না। জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো। আরো কত কি! বর্তমান সময় দুর্বার গতিতে এগুলো সাথে নিয়ে চলছে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের দিকে। জীবনান্দ মনে হয় এ রকম পরিস্থিতিকে অদ্ভুত আধার এক বলে অভিহিত করেছিলেন। আর তিনি যাদেরকে 'শিয়াল ও শকুনের খাদ্য আজ তাদের হ্রদয়' বলে অভিহিত করেছিলেন তারাই আজ দন্ডমুন্ডের কর্তা। এ সব কর্তারা কেউ কেউ পদ্মাসেতুর টাকা আটকে দিয়ে মজা পায়। কেউ আবার তীর তাক করে কারো দিকে যে একাজ নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির। কেউ আবার বিশ্বব্যাংকের ভেতরেই কালো বিড়াল খুঁজতে তৎপর ।নিজের ঘরের ইঁদুরে প্রায় নুনু কেটে দেবার পর্যায়ে সেদিকে তাদের নজর নেই।এই কাটা নুনু নিয়েই আমরা নিজেরাই পদ্মার উপর সেতু নির্মাণ করব ইনশাল্লাহ। আমরা তো আর ফোর্বস ম্যাগাজিন পড়তে জানি না।বলতেও পারব না কোন বিড়ালে ইঁদুর ধরেছে।শেক্সপীয়ার বেঁচে থাকলে স্বয়ং এদেশে এসে নির্ঘাত একখান মেলোড্রামা রচনা করে ফেলতেন। হিউম্যান রাইট ওয়াচ হুট করে বলল বিডিআর বিদ্রোহীদের বিচারে মানাবাধিকার লংঘিত হচ্ছে।কুখ্যাত একটি অভিজাত বাহিনী নাকি এর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ে।ষঢ়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী সন্দ্বিগ্ধ ব্যক্তিরা মনে করছেন এর সাথে পদ্মাসেতু নির্মালে বিশ্বব্যাংকের ওয়াদার বরখেলাপ অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। লেজে যদি গোবর লাগে তার অবস্থা যে কি হয় তা সবাই জানে।

"হ্যালো প্রধানমন্ত্রী বলছেন"। "আমার বিশ্বাসই হচ্ছেনা যে আমি প্র্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলছি"।
কথা সত্য। কিন্তু লোকটা দুপুবে না খেয়ে থাকলেও অবাক হব না। কেমনে খাবে। বাজারে যে আগুন তাতে মধ্যবিত্ত্ব পর্যন্ত ছ্যাঁকা খেয়ে যাচ্ছে আর কোথাকার মিসকিন ম্যাঙ্গো পিপল। তবু সান্তনা প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল নাম্বার তার কাছে।রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই- একথা যে আবিষ্কার করছিল তাকে অনেক আগেই শান্তিতে নোবেল দেয়া উচিত ছিল-মরণোত্তরও দেয়া যেতে পারে । তবে দিতেই হবে। কোথায় শুরু হলো পদ্মাসেতু দিয়ে আর তার শেষ দেখতে হলো মোবাইল নাম্বারে, ই-মেইলের পাতায়। মানুষ এখন এসব নাম্বার ও ঠিকানা সেইভ করতে ব্যস্ত।আর এ সুযোগে যদি কোন এপিএস গুপ্তধনের সন্ধান পান তবে তা হবে সোনায় সোহাগা।দুর্নীতি যদি না-ই করি তবে কিসের মন্ত্রি কিসের এপিএস। আমি দুর্নীতিবাজ নই একথা প্রমাণ করে দুদক থেকে দুর্নীতিমুক্ত ক্যারেকটার সার্টিফিকেট পেতে হলে দুর্র্নীতি অবশ্যই করতে হরে। তা নাহলে সবাই দুর্নীতিবাজ বলে গালি দিবে যে। দুর্নীতি না করলে তো আর অনেকের মতো ইউরোপ আমেরিকায় পাড়ি জমানো যাবে না।

লম্বা চওড়া এক বিশাল বাজেট দেখলাম এবার। অনেকেই একে ভোটের বাজেট বলেছেন।তাই যদি হয় তবে তাতে তো সাধারণ জনগণের অগ্রাধিকার দেয়ার কথা। কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি। আমাদের মত দেশৈর বাজেট তৈরীতে বড় ভাইদের (উন্নত বিশ্ব) ভূমিকা আমাদের চেয়ে বেশী। ওরা ভর্তুকীহীন বাজেটের তদ্বির করে।কৃষক শ্রমিক গরিব দুখি মানুষ পড়বে আরো ফাপরে। বড় থেকে আরো বড় হবে পুঁজিপতিরা। আজ ঘাটতি বাজেট একটা স্টাইল হয়ে দাড়িয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের জন্য ঘাটতির পরিমাণ বহুলাংশে কমানো জরুরী।কিন্তু এবার আমাদের অর্থমন্তী বিশাল ঘাটতির বাজেট পেশ করেছেণ। যার ফল হলো বাজেটের ব্যয়ের অন্যতম বড় খাত হলো বিদেশী লোনের সুদ পরিশোধ। অথচ এ জায়গায় থাকার কথা ছিল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, গ্রামিণ উন্নয়ন প্রভৃতি খাত। এখন পদ্মাসেতু নিজেদের অর্থায়নে করার কথা বললেও বাজেটে এর জন্য অর্থ আহরণের কোন দিক নির্দেশনা পর্যন্ত দেয়া হয় নি।

রাম-রাবণের যুদ্ধ ধীরে ধীরে জমে উঠেছে।সরকারী দল আর বিরোধী দল।দুই দলের ভেতর পার্থক্য শুধু সময়। দু দলের জন্য দু টি ব্যকরণ আছে। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক আর বিরোধী দলে থাকুক বক্তব্য পূর্ব নির্ধারিত।আর পাবলিক হলো বলির পাঠা। কত ধরনের মিশন ভিশন নিয়ে ক্ষমতায় এসে শেষ পর্যন্ত ভিক্ষা চাইনা কুত্তা ঠেকা অবস্থায় লেজ গুটিয়ে পালাতে আমরা দেখেছি।বিরোধী দল এ সুযোগে মাঠ গরম করে আনে ক্ষমতায়। কিন্তু আমরা যে বাঙালি। কবিগুরুর 'রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করো নি' মার্কা বাঁকা লেজ নিয়ে আবারো শেষবেলায় তালগোল পাকিয়ে ফেলি।সবাই যখন আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সেই সুযোগে দলও গিয়ে পড়ে জনরোষের ভাগাড়ে।তবে এ সুবাদে অন্তত দলীয় অনেক লোকের পকেট ভারি হয়।কালো টাকায় উদর ভর্তি হয়। সামনে আবার নির্বাচন।এদেশে নির্বাচন মানে হলো কালো টাকার অবাধ কারবার।




সাগর রুনি মারা গেলে তো তা ঠেকানো রাষ্ট্রের পক্ষে সম্বব নয়- সবার বেডরুম তো আর পাহারা দেয়া সত্যিই অসম্বব ! ইলিযাসরা নিখোঁজ হলে তাতে সমস্যা কি, ওতো আর আমার দলের কেউ না। পদ্মাসেতু না হোক। লীগের নির্বাচনী ওয়াদা পালিত না হলে সামনে আমার ক্ষমতায় আসার পথ সুগম হয়। আর হলেও তাতে কি আমারই তো লাভ। যোগাযোগ, ব্যাবসা, বাণিজ্য আরো কত কি ! সাধারণ জনগন কোথায়? না বাজেটে, না বাজারে, না ব্যাবসা বাণিজ্যে, না কৃষিতে, না শ্রমে, না ঘামে।প্রতিবছর বাজেট আসে আর যায়। রিক্সাওয়ালা সবেগে পেটেল মেরে যায়। সেলাই শ্রমিকেরা বুনে যায় বড়লোকের স্বপ্নসৌধ।কৃষকেরা লাঙল চালিয়ে যোগায় ভদ্রলোকের খাবার।কুলী, মুটে, জেলে, মাঝি, নাপিত,কামার ,কুমোর, তাঁতী, বেদে, জুলে, মুচি, মেথর,ক্ষেতমজুর, বর্গাচাষী, কারখানা শ্রমিক, বেগার প্রমুখ থেকে যায় অন্ধকারে। দু চারটে মোবাইল নাম্বার ওদের ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে পারে না। রাজনীতিকদের খেলার ঘুঁটি হয়ে থাকাই ওদের নিয়তি। ওরা নিজেরা না খেয়ে দেশকে খাওয়াচ্ছে। বিনিময়ে বুক পেতে নিতে হয় গুলি। ওদের ঘামের রক্তের লাথিতে মুক্তির বন্দীশালা ভাঙা আজ অতি জরুরী। নজরুল যথার্থই বলেছেন: "মাররে লাথি ভাঙরে তালা /যতসব বন্দীশালায় / আগুণ জ্বালা আগুণ জ্বালা"।দেশ-জাতির সার্বিক কল্যাণে তাই ঐ ভন্ডদের ভন্ডামি চিরতরে রুখে দিতে হবে। সাধারণ জনগণের হতে হবে সচেতন।বিদ্রোহী কবির সুরে সবার সুর মিলায়ে বলতে হবে


"শিকল পরা ছলরে তোদের ঐ শিকল পরা ছল
ঐ শিকল পরেই শিকল তোদের
করব রে বিকল"


ছবি: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১:৩৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×