আমার আগের ব্লগে (২৬ মে ২০১২ তারিখে পোস্ট করা) কিটনাশক দিয়ে যারা লিচু পাকায় আমি তাদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলাম। আজ ৪ জুলাই ২০১২। এর মধ্যে বিষাক্ত লিচু খেয়ে দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে ১৪টি নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু হয়েছে তাদের বাবা-মায়ের সামনে। তাই আজ আমি আরো উচ্চস্বরে দাবী করছি এসব দুর্বৃত্তদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের মত চরমশাস্তির বিধান করা হোক।
বিষাক্ত লিচু খেয়ে লিচুর জন্য বিখ্যাত দিনাজপুরে ১৪জন নিষ্পাপ শিশুর করুণ মৃত্যু হয়েছে তাদের বাবা-মায়ের সামনে। প্রিয় সন্তানের মুখে মৌসুমী ফল তুলে দিয়ে যেয়ে সন্তানহারা হয়ে যেতে হলো (Click This Link)। ইতোমধ্যেই ঢাকার মহাখালীর রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে লিচুতে দেয়া বিষাক্ত কেমিক্যালের বিষক্রিয়াতেই দিনাজপুরে ১৪টি শিশু মারা গেছে। ২৯ জুন ২০১২ তারিখে “বাংলা টাইমস” লিখেছে, “১ থেকে ২০ জুনের মধ্যে দিনাজপুর সদর, চিরিরবন্দর, বিরল, পীরগঞ্জ ও ফুলবাড়ি উপজেলায় এ ঘটনাগুলো ঘটে। স্বজনহারা লোকজন বলেন, লিচু খেয়ে মুহূর্তে তাদের আদরের ধনের মৃত্যু হল। কোন কথা বলার সুযোগ পাননি। চোখের সামনে কলিজার টুকরার করুণ মৃত্যুর দৃশ্য দেখে পিতামাতারা বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন”।
যারা কিটনাশক দিয়ে লিচু পাকায় শুধু তারাই নয়, বরং যারা রাসায়নিক বিষ দিয়ে বিভিন্ন ফল-ফলাদি পাকায় বা ফর্মালিন দিয়ে সংরক্ষণ করে, দুধে ফর্মালিন মেশায়, মাছে ফর্মালিন মেশায়, কিংবা কিটনাশক অথবা ফর্মালিন মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করে তাদের সবার জন্যই মৃত্যুদণ্ডের মত চরমশাস্তির বিধান করা হোক। ইদানিং মাছে ফর্মালিন না মিশিয়ে মাছ সংরক্ষণের জন্য যে বরফ তৈরি করা হয় সেই বরফ তৈরির পানিতেই ফর্মালিন মিশিয়ে দেওয়া হয়। যেসব বরফ তৈরির কারখানায় ফর্মালিন মিশ্রিত বরফ উৎপাদন করা হয় তাদের জন্যও মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হোক।
আমাদের আরকটা জ্বলন্ত সমস্যা হচ্ছে মাদকাসক্ত সন্তান। মাদকের ছোবলে আজ বলতে গেলে সারাদেশ নীল হয়ে গেছে। খুব বেশিদিন হয়নি বাড়ি বাঁচাতে শ্যামলী এলাকার এক বিধবা মা তার মাদকাসক্ত একমাত্র ছেলেকে ভাড়াটে খুনী দিয়ে খুন করালেন। আর মাদকের জন্য টাকা না পেয়ে বাবা-মাকে পিটানো বা হত্যা করার খবর আমরা মাঝেমধ্যেই খবরের কাগজে দেখছি। দেশকে মাদকমুক্ত করতে হলে মালয়েশিয়া বা সিঙ্গাপুরের মত কঠিন শাস্তির বিধান করতে হবে এবং তা কঠোর ও পক্ষপাতহীনভাবে প্রয়োগ করতে হবে। মৃত্যুদণ্ড ব্যতীত অন্য কোন লঘুদণ্ড দিয়ে দেশ থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের মূলোৎপাটন করা যাবেনা।
খাদ্যদ্রব্যে বিষ মিশ্রণকারী ও ভেজালকারীদের প্রতিরোধ করতে এবং দেশ থেকে মাদক ব্যবসা ও মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূল করতে মৃত্যুদণ্ডের মত চরমশাস্তির বিধান করে আইন প্রণয়নে আইন প্রণেতাদেরকে বাধ্য করতে প্রয়োজনে আমাদের সবাইকে মিলে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে। আসুন এ বিষয়ে আমরা সবাই একজোট হই।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:৩৭