somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুফিবাদ: সংক্ষিপ্ত ইতিহাস (দ্বিতীয় পর্ব)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুফিবাদ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে লিখছি। আমরা দেখেছি ইসলামের অভ্যূদয়ের প্রথম শতকেই আরবে সুফিবাদ- এর উত্থান হয়েছিল । সে যুগে পশমের কাপড় পরা একদন সৎ মানুষ ছিলেন যারা মহানবী হযরত মোহাম্মদ (দ) ও চার খলিফার সহজ-সরল সাম্যবাদী জীবনাদর্শ মেনে চলতেন। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (দ) ও চার খলিফার শাসনব্যবস্থার অবসানের পর ইসলামে বিলাসিতা, আড়ম্বর ও সংসারের প্রতি আসক্তি বেড়ে গিয়েছিল। সে সময়ই পশমী জামা পরা কিছু সৎ, উদাসীন ও আল্লাহভক্ত মানুষ নিজেদের ওসব থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন এবং অনেকটা নিরবেই বিলাসিতা, আড়ম্বর ও সংসার আসক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মূখর হয়ে উঠেছিলেন। টিকে থাকার জন্যেই সেইসব ত্যাগী আর সৎ মানুষদের একটা আদর্শ দাঁড় করাতে হয়েছিল। সেসময় তাদের বলা হল সুফি বা ‘পশমী জামা পরিধানকারী।’ পরবর্তীকালে আরবদের ভোগবাদী ও বস্তবাদী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সুফিদের মধ্যে মরমি চিন্তার স্ফূরণ ঘটে এবং তাদের চিন্তাধারায় কোরান শরীফের বিশেষ কয়েকটি আয়াত গভীর প্রভাব ফেলে। সুফিরা সৃষ্টি জগতের সর্বত্র আল্লাহর অস্তিত্ব খুঁজে পান এবং আল্লায় মিশে যেতে চান। সুফিরা বিশ্বাস করতে থাকেন ... এই দৃশ্যমান জগতের সৃষ্টিরহস্যের ভিতর দিয়ে সেই আলিমুল গায়েব -এর ইঙ্গিত, ইশারা ও অভিব্যাক্তির আভাস বুঝতে হবে। এসব ব্যাখ্যা-বয়ান সুফিবাদকে সর্বেশ্বরবাদ বা Pantheism এর পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছিল। এসব নিয়েই আমরা প্রথম পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই পর্বের বিষয় আরব থেকে সুফিবাদের বিকাশ এবং তার পরিবর্তনের স্বরূপ । বিশেষ করে সুফিবাদ পারস্যে পৌঁছনোর পর তার কী মৌলিক পরিবর্তন হল সেটি।
খ্রিস্টীয় নবম শতকের শেষের দিকে সুফিরা মিশর পারস্য বুখারা সমরখন্দ তুর্কিস্থান প্রভৃতি অঞ্চলে সুফিমতবাদ নিয়ে ছড়িয়ে পড়েন। এসব অঞ্চলে আগে থেকেই মরমি ঐতিহ্য ছিল। আসলে মরমি ঐতিহ্য বিশ্বের সব জাতির মধ্যেই কমবেশি রয়েছে। কাজেই মিশর থেকে তুরস্ক-এই সুবিশাল ভূখন্ডের জনগন মরমিবাদ পছন্দ করত বলেই তারা সুফি মতবাদটিকে গ্রাহন করল বটে তবে ভিন্ন পরিবেশে এবং স্থানীয় প্রভাবে সুফি মতবাদের কিছু অনিবার্য পরিবর্তন ঘটল। যেমন একজন মিশরীয় সুফি এবং একজন তুর্কি সুফির সুফিতাত্ত্বিক ব্যাখ্যবয়ান তাদের নিজস্ব মরমি অভিজ্ঞতা এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের ওপরই নির্ভর করত। আর বিশ্বের প্রত্যেক অঞ্চলেরই মরমিবাদের নিজস্ব একটি ধরণ (ফর্ম) থাকে। মিশর কিংবা তুরস্কের মরমি ঐতিহ্যের স্থানীয় রূপটির সংমিশ্রনে মিশরীয় এবং তুর্কি সুফিসাধকদের সুফিচিন্তায় প্রতিফলিত হয়েছিল বলেই আরব-উদ্ভূত সুফিবাদ নতুন একটি রূপ ধারণ করল। পরবর্তীকালে আমরা ভারতবর্ষে যে চিশতিয়া-কাদেরিয়া সুফি তরিকা (তরিকা= মন্ডলী, সম্প্রদায় বা ঘরানা ) উদ্ভব হতে দেখি তার কারণও এই। এক কথায় খ্রিস্টীয় নবম শতকের শেষের দিকে আরব সুফিরা যখন মিশর পারস্য বুখারা সমরখন্দ তুর্কিস্থান প্রভৃতি অঞ্চলে সুফিবাদ নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলেন, তার কিছুকাল পরেই সুফিবাদে অনিবার্য কারণেই সংযোজন ও বিয়োজন হয়েছিল। ফলে সুফিবাদের আদিরূপটি যে কী ছিল সেটি যেন নতুন নতুন চিন্তার কুয়াশায় ঢেকে গেল, তাকে আর সহজে বোঝা যেত না!
তবে এটি ঠিক যে-পারস্যে পৌঁছনোর পরই সুফিবাদে সংযোজন ও বিয়োজন হয়েছিল সবচে বেশি। কিন্তু কি এর কারণ? ড.মুহম্মদ এনামুল হক তাঁর ‘বঙ্গে স্বূফী প্রভাব’ বইয়ে এর কারণটি ব্যাখ্যা করে লিখেছেন: ‘আরব স্বূফী-মতবাদের জন্মদান করিলেও, পারস্য তাহার লালন-পালন ও বর্দ্ধনের ভার গ্রহন করিয়াছিল। পারস্যের স্বভাব নিকুঞ্জে গোলাপ-বুলবুলের লীলা নিকতনে, ঔষর আরবের বেদুঈন সন্তান রাজপুত্রের ন্যায় লালিত-পালিত হইয়া জগতের ঔৎসুক দৃষ্টি আকর্ষন করিয়াছিল।’ (পৃষ্ঠা: ৩৫) ড.মুহম্মদ এনামুল হক তাঁর ‘বঙ্গে স্বূফী প্রভাব’ বইয়ে আরও লিখেছেন: ‘ফল কথা, স্বূফী মতবাদ আরব ছাড়াইয়া যতই পূর্ব্বদিকে অগ্রসর হইতে থাকে, ইহার মধ্যে ততই পূর্ব্বদেশীয় ভাবধারার সম্মিলন ঘটিতে থাকে। এই জন্যই অনেক পাশ্চাত্য পন্ডিত ভুল করিয়া স্বূফী-মতবাদের উদ্ভবকে ‘আর্য্য হৃদয়ের উপর আরবী প্রভাবের প্রতিক্রিয়া (A reaction of Aryan mind against the Semetic people.) বলিয়া উল্লেখ করিয়া থাকেন।’ (পৃষ্ঠা: ৩৫) আসলে সুফি ভাবনায় প্রথম থেকেই এমন কিছু স্পেস ছিল যা অন্য অঞ্চলের মরমি ভাবনা ও রহস্যবাদী চিন্তাধারা সেই স্পেস পূর্ণ করতে পারত। পারস্যের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। তার ওপর পারস্যবাসী ছিল আর্য। ইসলাম পারস্যে পৌঁছায় ৬৩৭/৬৫১ খ্রিস্টাব্দে। ইসলাম- পূর্ব পারস্যবাসীর ধর্মীয় চিন্তার কেন্দ্রে ছিলেন জরথুশত্র। এবং পারস্যের আর্য চেতনায় ছিল হাজার বছরের পুরনো সর্বেশ্বরবাদী ধ্যানধারণা বা Pantheism.( Pantheism, doctrine that identifies the universe (Greek pan, “all”) with God (Greek theos) যে কারণে পারস্যে পৌঁছনোর পর সুফিবাদের ওপর এই সর্বেশ্বরবাদী ধ্যানধারণার অনিবার্য গভীরতর প্রভাব পড়েছিল। ইসলাম ধর্ম যদিও সুফিবাদের ৪ 'শ বছর আগেই পারস্যে বিস্তৃত হয়েছিল, তা সত্ত্বেও ‘এদেশবাসীর হৃদয়ে তলে তলে ইহা বেশি লীলায়িত ছিল।’ মন্তব্য করেছেন ড.মুহম্মদ এনামুল হক! খ্রিস্টীয় নবম শতকের শেষভাগ হতে দশম শতকের প্রথমভাগের মধ্যে পারস্যের সুফি সম্প্রদায়ের মধ্যে স্পস্টতই সর্বেশ্বরবাদী ধ্যানধারণা প্রকট হয়ে উঠেছিল। ওই সময়ের কয়েকজন প্রসিদ্ধ সুফি হলেন: বায়োজিদ বোস্তামি (মৃত্যু: ৮৭৪ খ্রিস্টাব্দ); জুনায়েদ বাগদাদী (মৃত্যু ৯১০ খ্রিস্টাব্দ); এবং মনসুর আল হাল্লাজ (হত্যা ২৬ মার্চ ৯২২ খ্রিস্টাব্দ) ।
মনসুর আল হাল্লাজ -এই নামে বাঙালির হৃদয়ে এক গভীর আবেগ উথলে ওঠে। কারণ, তাঁর জীবন, তাঁর বিশ্বাস তাঁর হত্যাকান্ড ...। নীচের নিবন্ধে সেই আবেগের প্রমান রয়েছে।

Click This Link

আমিও ২০০৮ সালে ২৫ অক্টোবর পারস্যের সুফিসাধক মনসুর আল হাল্লাজ কে নিয়ে মনসুর আল হাল্লাজ: মা ফি জুবাতি লা-আলা এই শিরোনামে এই ব্লগে একটি পোস্ট করেছি। পারস্যে সুফিচিন্তায় সর্বেশ্বরবাদী প্রভাব সর্ম্পকে একটি স্বচ্ছ ধারণা পেতেই পোস্টটি এখানে উল্লেখ করছি।

শুসতার জায়গাটা ছিল পারস্যের পশ্চিমে। প্রখ্যাত মরমী সাধক মনসুর আল হাল্লাজ-এর জন্ম হয়েছিল সেই পারস্যে শুসতার-এ। ৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে। মনসুরের পরিবার তুলার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। আরবিতে হাল্লাজ মানেও কিন্তু তাই। সময়টা নবম শতক। ইসলাম ততদিনে গৃহিত হয়ে গেছে পারস্যে। তবে ধারনা করা হয় যে -মনসুরের পিতামত ছিলেন জরথুশত্রবাদী। ইসলাম পারস্যে গ্রহনযোগ্য হওয়ার আগে ওই জরথুশত্রবাদই ছিল পারস্যের রাষ্ট্রধর্ম। মনসুরের পূর্বপুরুষ ছিল কুর্দি।
সে যা হোক। মনসুরের বাবা সাধারণ জীবন যাপন করতেন। বালক বয়েসে যে জীবনটা সম্ভবত ভালো লাগত মনসুরের। ওই বয়েসেই হেবজ করেছিলেন কোরান; সেই সঙ্গে প্রাত্যহিক জীবন এড়িয়ে রহস্যবাদের দিকে ক্রমেই ঝুঁকছিল বালক মনসুর।
বিবাহ করলেন যুবা বয়েসে । তারপর হজ পালন করতে মনস্থির করলেন। কাবা শরীফে যতদিন ছিলেন রোজা রাখতেন; মৌন থাকতেন। তারপর বেরুলেন ভ্রমনে ।আরব বিশ্বের পথে পথে ঘুরলেন। (সুফিদের যে মোকাম বা স্তর রয়েছে, তার একটি হল সফর।) ... সে যা হোক। ভারত থেকে মধ্য-এশিয়া। ছন্নছাড়া জীবনে কত কিছু যে শিখলেন। অপরকে শেখালেন। উদার মানুষ। এমন মানুষের প্রতি মানুষ আকর্ষন বোধ না করে পারে না। বহু শিষ্যও পেয়ে গেলেন হাল্লাজ। শিষ্যদের নিয়ে আরও কয়েকবার মক্কা গেলেন।
তারপর তিনি বাগদাদেই স্থায়ী ভাবে বাস করতে লাগলেন। সেই সময়টায় বাগদাদ ছিল শিক্ষা-দীক্ষার কেন্দ্র। আব্বাসীয় খলিফাদের রাজধানী।
অল্প সময়ের মধ্যেই বোঝা গেল বাগদাদের অধিবাসীরা তাঁকে শ্রদ্ধা করে। শ্রদ্ধা করত খলিফারাও।অবশ্য হাল্লাজ ছিলেন অন্য সূফীদের চেয়ে ব্যাতিক্রম। কী ভাবে?
তৎকালীন অধিকাংশ সূফী-সাধকই আধ্যাত্মিক মরমী সাধনার তত্ত্ব নিয়ে আলাপ আলোচনা নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতেন, সাধারণ জনগনের সঙ্গে সে সব নিয়ে আলাপ করতেন না।
মহাত্মা হাল্লাজ করতেন। (যেমন লালনের সব গানই বাউলদর্শনের গান নয়, নইলে লালনের গান নিয়ে মেইনস্ট্রিম বাঙালির কেন এত উচ্ছ্বাস? । অথচ বাংলার লোকধর্ম সাহেবধনী ধর্মসম্প্রদায়ে তাত্ত্বিক গীতিকার কুবির গোঁসাই ১২০৩ খানা গান লিখেও আজ আবধি দুই বাংলার মেইনস্ট্রিম বাঙালির অপরিচিত!)

খোলাখুলি মত প্রকাশ করার জন্য লালনের শক্র তৈরি হয়েছিল। এবং হাল্লাজেরও শক্র তৈরি হয়েছিল। খলিফার কানে তারাই বিষ ঢালল। সুতরাং, তৎকালীন বাগদাদের পুঁজিবাদের অগ্রদূত, সিরিয়াস কনফার্মিস্ট শাসকগন শঙ্কিত হয়ে উঠল।
একবার ঘোরের মধ্যে বলে হাল্লাজ বলে বসলেন- “আনাল হক।”
কি এর মানে?
হক মানে সত্য। আনাল মানে আমি (হই)। যার মানে দাঁড়ায়- আমিই সত্য। এই কথাটা মিথ্যে নয়।আমি সত্য না হলে জগৎ সত্য হয় কি করে। কিন্তু, শক্ররা কথাটা ছড়াল এভাবে- হাল্লাজ নাকি বলেছেন, আমিই আল্লা। যেহেতু আল্লা সত্য।
কী! শুসতার-এর মনসুর নিজেকে আল্লা দাবি করছে! কী স্পর্ধা!
বাগদাদের খলিফা ক্ষেপে উঠলেন। বাগদাদেও আমজনতার মধ্যে শোরগোল উঠল। এসব চিল্লচিল্লি উপেক্ষা করে হাল্লাজ বললেন -আমার পাগড়ীতে আল্লা ছাড়া আর কিছু জড়ানো নেই।
আমজনতার চিৎকার চেঁচামেচি আরও তীব্র হয়ে উঠল। তো, জনতার এসব চিৎকার চেঁচামেচি উপেক্ষা করে হাল্লাজ নিজের পোশাক দেখিয়ে বললেন, মা ফি জুবাতি লা-আলা।
কি এর মানে?
আমার পোশাকের নিচে আল্লা ছাড়া কিছু নেই।
এসব উদ্ভট কথাবার্তায় বাগদাদের পুঁজিবাদের অগ্রদূত, সিরিয়াস, কনফার্মিস্ট শাসকবর্গ অত্যন্ত ভীষন উৎকন্ঠিত হয়ে উঠল।
তাদের নির্দেশে হাল্লাজকে বন্দি করা হল।
দীর্ঘদিন ধরে বিচারকার্য চলল। মানে বিচারের নামে চলল প্রহসন ...হাল্লাজ প্রায় ১১ বছর বন্দি থাকলেন বাগদাদের ভূগর্ভস্থ অসহনীয় জিন্দানে। ১১ বছরই টর্চার সহ্য করেছেন। কি রকম? চিৎ হয়ে শুইয়ে বেঁধে রাখা হত। তারপর পাথর বসিয়ে দিত বুকের ওপর। ঘন্টার পর ঘন্টা নিঃশ্বাসের ভীষন কষ্ট হত ...ভীষণ ...

In the end, he was tortured and publicly crucified (in some accounts he was beheaded and his hands and feet were cut off) by the Abbasid rulers for what they deemed "theological error threatening the security of the state." Many accounts tell of al-Hallaj's calm demeanor even while he was being tortured, and indicate that he forgave those who had executed him. According to some sources,[who?] he went to his execution dancing in his chains. He was executed on March 26, 922.


হাল্লাজের লেখা বইটির নাম "কিতাব আল তাওসিন।"কিংবা "তা সিন আল আযল"।
বাংলা করলে এমন দাঁড়ায়-প্রেরিত পুরুষের প্রদীপ।
এই বইয়ে দুটো অধ্যায়ে শয়তান ও আল্লার সংক্ষিপ্ত সংলাপ রয়েছে। আমরা জানি আল্লা আদেশ করলেও শয়তান আদমকে সেজদা করতে অস্বীকার করেছিল। শয়তান ভেবেছিল, আল্লাই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। তা হলে আমি আল্লা ব্যতীত অন্যকে সেজদা করব কেন! অথচ, এই প্রত্যাখানই বিয়োগান্তক ভাবে খোদ আল্লাকেই প্রত্যাখানের শামিল হয়ে দাঁড়াল। হাল্লাজ নাকি বলতেন, If you do not recognize God, at least recognise His sign, I am the creative truth -Ana al-Haqq-, because through the truth, I am eternal truth. My friends and teachers are Iblis (Satan) and Pharaoh
বলাই বাহুল্য, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার চেয়ে আল্লার সন্ধানের ওপর জোর দিতেন হাল্লাজ। লালনের মতন। তাঁর পথ ছিল “সর্বজনীন রহসবাদী অর্ন্তদৃষ্টি।” কাজেই, কেবল মুসলিম জাহান নয়-হাল্লাজ বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য উদ্বিগ্ন ছিলেন।এ কারণেই হাল্লাজ সম্বন্ধে বলা হয়: Even beyond the Muslim faith, Hallaj was concerned with the whole of humanity ...

আমরা জানি পারস্যের সুফিসাধক বায়োজিদ বোস্তামি বাংলায় এসেছিলেন। চট্টগ্রামে এই সুফির মাজার আছে। তবে বায়োজিদ বোস্তামি চট্টগ্রামে দীর্ঘকাল ধর্মসাধনা করেও আবার পারস্যেই ফিরে গিয়েছিলেন, তার মানে চট্টগ্রামে বায়োজিদ বোস্তামি কবর নেই; এমন একটি বিশ্বাসও প্রচলিত রয়েছে। সে যাই হোক। বায়োজিদ বোস্তামি বাংলায় আগমনের এক ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। তা হল: বায়োজিদ বোস্তামির মৃত্যু: ৮৭৪ খ্রিস্টাব্দ হলে বলা যায় বাংলায় নবম/দশম শতক অর্থাৎ সেন আমল থেকেই সুফিদের আগমন শুরু ।
সে যা হোক। কিন্তু, বায়োজিদ বোস্তামি কি বিশ্বাস করতেন, শিষ্যদের কি শিক্ষা দিতেন? বলতেন, আমিই সত্য, আমিই সত্য ভগবান,আমাকে ভগবত প্রশংসায় আহ্বান কর। (ড.মুহম্মদ এনামুল হক । ‘বঙ্গে স্বূফী প্রভাব’; পৃষ্ঠা: ৩৫) বায়োজিদ বোস্তামি
বলতেন, ‘আমি আরশ, আমি করসী, আমি কলম, -যিনি প্রকৃতপুরুষ লাভ করেন, তিনি আল্লহর মধ্যে বিলীন হন।’
আর পারস্যের সুফিসাধক জুনায়েদ বাগদাদী কি বলতেন?
‘তাওহীদকে (আল্লাহর একত্বকে) অস্বীকার করাই সর্বশ্রেষ্ঠ তাওহীদ।’
(ড.মুহম্মদ এনামুল হক তাঁর ‘বঙ্গে স্বূফী প্রভাব’ পৃষ্ঠা; ৩৬)

ক্রমশ ...

প্রথম পর্বের লিঙ্ক
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:১০
২৩টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×