somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনের জ্বালা! শাকিব খানের মুভির রিভিউ!!!

২৭ শে জুন, ২০১২ ভোর ৬:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন ধরে বাংলা মুভি দেখা হয়না।গত সপ্তাহে কয়েকটি মুভি দেখে ফেললাম সময় করে।এর মধ্যে শাকিব খানের মনের জ্বালা আর তার কোটি টাকার প্রেম ও ছিল।আজকে সেই দুই মুভির একটি নিয়ে কথা বলব।

মনের জ্বালা

মুভির শুরুটা বেশ চমকপ্রদক!ছোট্ট একটা শিশু দোলনার উপরে নালায় ভাসতেছে আর কান্না করতেছে।কয়েকটা কাক শিশুটিকে কামড়াচ্ছে। বেশ ইন্টারেষ্টিং লাগল এই দৃশ্যটা!
একটু ভয়ংকর ও।
শিশুর কান্নায় নালার পাশের বস্তিতে বসবাস করা এক গরিব পরিবার তাকে তাদের কাছে রেখে লালন পালন করা শুরু করল।

সেই শিশুটি স্কুলে গিয়ে অন্যান্য ছত্রের প্রশ্নের মুখোমুখি হয় জন্ম পরিচয়হীন হিসেবে।যার কারনে মারামারি করে স্কুল থেকে ফেরত আসে তার বর্তমান বাবা-মা'র নিকট তার আসল পরিচয় জানতে।কিন্তু সে তাদের কাছে পৌছুবার আগেই কোন এক
ঘটনায় তার পালিত বাবা মা মারা যায়(এটা তো হবার ই কথা!!!)মৃত্যুর পুর্বে তার হাতে একটুকরো কাপড় দিয়ে বলে যায় এটাই তার পরিচয়!!!তাকে আসলেই তারা কুড়িয়ে পেয়েছিল!


তার সম্বল শুধু একটুকরা কাপর।যে কাপড়ে পেচানো ছিল সে।
সে চিৎকার করে বলে উঠে এই এক টুকরো কাপড় দিয়ে কিভাবে আমি আমার মনের জ্বালা মিটাবো!!!!

স্ক্রীনে মনের জ্বালা টাইটেল ভেসে উঠে! ;)

ওহহো তার নাম বলা হয়নি।তার পালিত বাবা মা তার নাম চাঁদ রেখেছিল। তার বন্ধুর সাথে আরেকগুন্ডার এখানে যায় কাজের জন্য।সেখানে গুন্ডাকে মেরে বন্ধুর সাথে পালিয়ে যায়।

ছোটবাচ্চারা তাদের অভিনয় ঠিকঠাক মতই করেছে।ভাল লেগেছে আমার!


তারপর?
বেড়িবাঁধের চাঁদ নামক এক রংবাজের আগমন হয়।প্রথম মারামারির দৃশ্য বর্ননা করে লাভ নেই।ওয়ান্টেডের সালমান খানের প্রথম ফাইট ই পরিচালক এখানে তুলে এনেছেন!!!
তারপর সেই পাঞ্চ ডায়ালগ ও রাখতে ভুল করেন নাই পরিচালক।চাদ একবার যা বলে ব্লা ব্লা ব্লা!!!

তারপর গান শাকিব খানের নিজের কন্ঠে।গানের কোরিগ্রাফি খারাপ হয়নাই।শাকিবের কন্ঠ একটু ন্যাকামি ন্যাকামি লাগলেও ভালো ই করেছে বলা যায়!


তারপর মুটামুটি অনেকটুকু ওয়ান্টেড এর মত ই।
নায়িকার সাথে দেখা হয়,এক পুলিশ অফিসার নায়িকার সাথে গ্যাজায়,গাঞ্জা দিতে খেলারত নায়কের কাছে পুলিশের আগমন,সেটা আবার পুলিশের পকেটে রিটার্ণ সব ই রেখেছেন পরিচালক।

তারপর ঈদ উপলক্ষ্যে একটা গান ও রেখেছেন যেটা আবার সালমানের ই কোন একটা গানের হুবহু দৃশ্যায়ন। তিসমার খান এর গান হইতে পারে!!!

এভাবেই প্রথম হাফ শেষ হয়!টুকটাক কপিপেষ্ট না করেও এই মুভিটা বানানো যেত।পরিচালকদের মাথায় কি চিন্তাভাবনা ছিল আল্লাহ ই জানে!
এই মুভি হিট করতে পারেনাই।এর কারন ও আমি মনে করি ওয়ান্টেডের সেই কপিপেষ্ট দৃশ্যগুলোই!
এভারেজ ব্যাবসা করেছে! এবং সেটা ২য় হাফের জন্যে।
কারন ২য় হাফে কাহিনী তার গতি ফিরা পাইছে!

তো তারপর ?
নায়িকার বাবা নায়িকা কে নাম পরিচয়হীন ছেলের সাথে কখনোই মেনে নেবেনা।আর নায়ক মহাশয় কলেজের বারান্দা দিয়ে হোন্ডা করে ক্লাস্রুমে গিয়ে নায়িকাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে একসের কান্ড ঘটায়া ফেলছেন।
এমন সুদুর্শন ছেলের প্রেমে না পড়ে উপায় কি অপু অবিশ্বাসের!!!তিনিও তাকে ভালোবেসে ফেলেছেন!

এই যখন কাহিনীর অবস্থা নায়ক তখন মাজারে।কান্নাকাটি করে একটা গান এস আই টুটুলের কন্ঠে গেয়ে ফেললেন।
"দিন দুনিয়ার মালিক খোদা"শিরোনামের গানটির উপস্থাপন ভালো লেগেছে।

গানের পর আগমন ঘটলো চির আবেদন্ময়ি নায়িকা ববিতার!তিনিও মাজারে এসেছেন দুয়া করতে কিন্তু গুন্ডাদের আক্রমনে পড়ে গেছেন।শাকিব খান তাকে বাচায় ।
এখানে এসে শাকিব খান দারুন কিছু ডায়ালগ দিয়েছেন।
যে রক্তের নেই কোন জন্ম পরিচয় নেই সেই রক্ত এই দেহ থেকে ঝরে গেলেই কি আর না গেলেই কি!! অসাম ডায়ালগ বস!

ববিতা একজন নামকরা বিচারক।তো তার শত্রু থাকাই স্বাভাবিক।সাদেক খান হল সেই শত্রুর নাম! এই সাদেক খানের ছেলের সাথেই চাঁদনি মানে অপু বিশ্বাসের বিয়ে ঠিক করে রেখেছেন চাঁদনির বাবা!
তো সেই শত্রু এখন চাঁদের ও শত্রু!

চাদনি মানে অপু অবিশ্বাসের নাম।
কি দারুন মিল তাই না?
চাঁদ আর চাঁদনি!B-)

তাদের শত্রুর শত্রুতামিটা খুব ভয়ংকর লেগেছে।কাক দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে মানুষ মারা!!!

তারপর ঘটনাক্রমে চাঁদনি জানতে পারল বিচারক মহাশয়া চাদের জন্মধাত্রি।কিন্তু তিনিও তা প্রকাশ করতে চান না যদি তার সন্তান তাকে ভুল বুঝে!!! কারন মাজারের দৃশ্যে শাকিব খান তার জন্মধাত্রি মা'কে অপমান করেছিল।
মুভি প্রায় শেষ পর্যায়ে,পরিচালক ও এটা নিয়ে আর গ্যাজাইলেন না।নায়ক শুনে ফেলল তার মা'র দুঃখের কথা।
সাদেক খানের শত্রুতামির কারনেই সে এতদিন মা ছাড়া ছিল।তারপর অল্প একটু মায়ের স্নেহ দেখাইল।(এখানে এসে ওম শান্তি ওমের কথা মনে পইড়া গেল!!!)

তারপর শেষ ফাইটিং সাদেক খান সে ই হইল মেইন ভিলেন তাকে কাকের খাদ্য বানিয়ে চাঁদ মানে শাকিব খান জ্বেলে গেল।আদালত তার শাস্তি কমায়া দেওয়াতে সে অল্প সময়েই মুক্তি পেয়ে গেল।
আদালতের বাইরে সবার মিলন হইল!!!


###টাইমপাস মুভি হিসেবে ওয়াচিং লিষ্টে রাখতে পারেন।খুব খারাপ লাগবোনা।বাকিটা নিচে কইতাছি!!!


#অনেক আলোচনা হয়েছিল গতবছর এই মুভি নিয়ে।এই প্রথম শাকিব প্লেব্যাক করছেন।
বিগ বাজেটের মুভি।
আরো অনেক কিছু।

#মুভির দ্বিতিয়ার্ধ ছিল টানটান উত্তেজনার।প্রথমার্ধে পরিচালক কেন যে এই কপিপেষ্ট মারতে গেলেন মাথায় ধরলোনা!
#শুধুমাত্র শাকিবের উপর পুরা মুভির দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে মুভি বানালে কেমন হয়?সবার চরিত্রের দিকেই নজর দেয়া দরকার।যেটা পরিচালক করেন নাই। অথবা করতে পারেন নাই!

#ববিতার অভিনয়টাকে বেশিরভাগ সময় ই অতি অভিনয় মনে হয়েছে।একটু পরপর ই মুখে হাত দিয়ে কান্নার ভাব করা দেখে আমার তাই মনে হয়েছে।

#গান এর কথা তো বললাম ই।একটু ও মনোযোগ দেননাই।কপিপেষ্টের উপ্রেই ছেড়ে দিয়েছেন।
#একশন দৃশ্য ভালো লেগেছে।এইখানে আগের মালেক আফসারী কে পাওয়া গিয়েছে।

#শাকিব খানের সময় হয়েছে কাহিনীর দিকে মনোযোগ দেয়ার।আধা খিছুড়ি টাইপের মুভি যত কম করবে তত তার মঙ্গল।নাহলে এইসব মুভি করে বেশীদিন টেকা সম্ভব না!
তবে তার উপস্থাপনা দারুন হয়েছে।গল্পটা যদি আরেকটু মজবুত হত তাহলে বাচায়া দিতাম!!!

#বাঙ্গাল এক নাম বেশীদিন পুছেনা সেইটা বুঝতে শাকিব যদি দেরী না করে তাহলে তার মঙ্গল।আর যদি মনে করে যা করছি বহুত করছি তাইলে তার অধঃপতন সামনেই অপেক্ষা করছে!

@মালেক আফসারি ভাই এইটা কি বানাইলেন?এই যুগে আইসাও আপনে এমন মুভি বানাইতে পারলেন?আরেকটু যত্ন করে কি মুভিটা বানাতে পারতেন না?


বিঃদ্রঃমুভি রিভিউ কেমন করে লিখে জানিনা।অভ্যাস ও তেমন নাই।তাই ভুলত্রুটি মাফ কৈরা দিয়েন!!!

শুভ হোক সকাল!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৩:৩৪
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×