পাকিস্তানের অনেক অঞ্চলে পড়াশোনায় কোমলমতি শিশুদের হাতেখড়ি হয় এমন সব শব্দ দিয়ে, যেসব শব্দের সঙ্গে সহিংসতা ও নেতিবাচক দিকগুলোর সম্পর্ক নিবিড়।
শিক্ষাজীবনের শুরুতে এ ধরনের নেতিবাচক ও ধর্মীয় স্পর্শকাতর নানা অক্ষর ও শব্দ শিখিয়ে কীভাবে তাদের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও ভারতবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি জাগিয়ে তোলা হয়, তা গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন দেশটির পরমাণু বিশেষজ্ঞ ও পদার্থবিদ পারভেজ হুদভয়।
পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শিক্ষার ভূমিকা শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে ডেমোক্রেসি ফোরাম। সেই সেমিনারে পদার্থবিদ পারভেজ ছবি ও পাঠ্যবিষয়ের উদাহরণ দিয়ে বলেন, শিশুদের উর্দু বর্ণমালা শিক্ষায় ইংরেজির সঙ্গে মিলে যাওয়া বর্ণগুলো শেখাতে গিয়ে বি’তে বন্দুক, জে’তে জিহাদ, এইচ’তে হিজাব প্রভৃতি শব্দ শেখানো হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে থাকা নানা আধেয় বিশ্লেষণ করে দেখতে পান, সেখানে ঘুড়ি, গিটার, স্যাটেলাইট টেলিভিশন, কেরাম বোর্ড, দাবা, মদের বোতল, হারমোনিয়াম—এগুলোকে হারাম জিনিস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাম্প্রদায়িক আচরণের বহিঃপ্রকাশের কথা বলতে গিয়ে পারভেজ বলেন, হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে পার্থক্য এবং পাকিস্তানে এর প্রয়োজনীয়তা, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের খারাপ পরিকল্পনা, শাহাদাত ও জেহাদ বিষয়ে ভাষণ তৈরি—বিষয়গুলো পঞ্চম শ্রেণীর পাঠ্যসূচিতে আছে।
পদার্থবিদ পারভেজ বলেন, পাঠ্যক্রমে সাম্প্রদায়িক বিভেদের বিষ ছড়িয়েছিলেন জেনারেল জিয়াউল হক। পরবর্তী সময়ে এ মনোভাবে আর কোনো পরিবর্তন আসেনি, বরং মনোভাবগুলো এতটাই দৃঢ় হয়েছে যে নিজের দেশকে এখন অচেনা লাগে।
করাচিতে নিজের শৈশবের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে পারভেজ বলেন, তখন সেখানে মুসলমানদের সঙ্গে হিন্দু, খ্রিষ্টান সবাই থাকতেন। তারা আর কেউ নেই, চলে গেছে। সংখ্যালঘুর জন্য পাকিস্তানে এখন আর কোনো জায়গা নেই।