somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিশিপরীর সাথে আমার প্রেম.....!!/:)/:)

২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গেল বছরের শেষদিকে কোন একদিন মেয়েটি সংসদ ভবনের ক্রিসেন্ট লেকের আশপাশে ঘুরছিল। দেখতে রূপসী, রুচিশীল। পেশা পতিতাবৃত্তি কি না বোঝাই মুশকিল? বিধ্বস্ত জীবন থেকে একটু হাফ ছেড়ে বাচতে, প্রকৃতির সৌর্ন্দয্যে ক্ষণিকের প্রেমে পড়তেই সেই রাস্তায় আমার যাতায়াত.।

দেখলাম, মেয়েটি একজনের সঙ্গে কথা বলে গাড়িতে উঠে চলে গেল। পরদিন সেই একই মেয়েটিকে দেখলাম, একজনের সঙ্গে কথা বলতে বলতে চন্দ্রিমা উদ্যানের দিকে চলে যাচ্ছে। আমিও পিছু নিলাম। দেখলাম, উদ্যানের ঘাসগুলো এবার তার শয্যা।



দৃশ্যটি মেয়েটি সর্ম্পকে একটু গভীরে জানার রহস্য সৃষ্টি
করল আমার মধ্যে। যে মেয়ে গতকাল কোন ধনীর বেডরুমে রাত কাটিয়েছে। সে কিনা আজ ঘাসে শয্যা পেতেছে। জানার প্রবল সাধ জাগল আমার। লোকটি চলে যাওয়ার পর কাছে ডাকলাম মেয়েটিকে। ও ভেবেছে শরীরের জন্যই হয়তো ডেকেছি।
জিজ্ঞেস করলাম, নাম কি,থাকো কোথায়,কে কে আছে ??মেয়েটির জবাব,সময় নষ্ট করতেছেন ক্যান। যা করার,তাড়াতাড়ি করেন।
বললাম, আমি তো কিছু করব না ।
তাইলে ডাকছেন ক্যান?
তোমার সাথে গল্প করার জন্য।
বেশ্যার লগে আবার গপ্প কিয়ের ? মেয়েটি রাগ হয়ে চলে গেলো...

পরদিন আবার গেলাম সে পথ দিয়ে। মেয়েটির সঙ্গে দেখাও হয়ে গেলো। কিন্তু আমাকে কোন পাত্তাই দিলো না। বলল,আইজকাও গপ্প করতে আইছেন? ক্যান,সাথে ওইটা নাই? দেইখা তো সুপুরুষ মনে অয়। ইচ্ছা করলে আসেন,নইলে ভাগেন।
আমি হাল ছাড়ার মানুষ নই।বসে রইলাম। হঠাৎ কাছে এসে মেয়েটি জানতে চাইল, আমি তার সাথে গল্প করতে এসেছি কি না? বললাম, হ্যা। আপনে তো আজব মানুষ! গপ্প করার জন্য এইখানে আসি নাই। পেট বাঁচানোর দায়ে। বললাম, যদি এজন্য তোমাকে টাকা দেই, কোন সমস্যা আছে? টাকা দেওন লাগবে না, গল্প শুনতে চলেন। এরপর দুজন হাঁটতে হাঁটতে উদ্যানের ভেতরে বেঞ্চে বসে পড়ি।

কি বলবেন,দ্রুত বলেন, টাইম নাই! বললাম, তোমার জীবনের গল্প শুনবো, কি গল্প শুনবেন? সবার তো একই গল্প। এই পেশার মাইয়াগুলা সবাই কোনো না কোনোভাবে প্রতারিত হইছে, প্রেমিকের কাছে,ভাগ্যের কাছে, সংসারের কাছে কিংবা জীবনের কাছে।

তাহলে তুমি কার কাছে? আস্তে আস্তে মেয়েটি সহজ সাবলীল হয়ে উঠছিল। অতপর জীবনের গল্প বলে গেল অবিরত....

জন্মের পরপরই ভাগ্য মেয়েটির সঙ্গে প্রতারণা করেছে, বয়স ১২ না পেরুতেই মা-বাবার মৃত্যু। বাবা-মায়ের স্মৃতি তার কাছে বহুকাল আগে দেখা কোন ধূসর স্বপ্নের মতো। চাচার কাছে বেড়ে ওঠে মেয়েটি। স্কুল জীবন পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হয় মেয়েটি। সর্বনাশ ঘটে তখনই। কোন এক অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় সুদর্শন এক যুবকের সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেম। কিন্তু মেয়েটি ভুল মানুষকে বেছে নিয়েছিল। না জেনেই বিবাহিত লোকটির বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয় মেয়েটি। অতপর চট্টগ্রামে এক ব্যাচেলর বন্ধুর বাসায়...।


চট্টগ্রামে গিয়ে বিয়ে করার কথা ছিলো তাদের। তা আর হলো না। অথচ রাত কাটতে লাগলো একসঙ্গে। চার-পাঁচদিন পর বিনা নোটিশে উধাও হয়ে যায় যুবকটি।এরপর তার জীবনে নতুন অধ্যায়ের শুরু; সে রাতে কয়েকজন অচেনা পুরুষ সারারাত তাকে পুতুলের মতো ব্যবহার করেছিলো ইচ্ছেমতো ।এভাবে কয়েক রাত ...।

জীবন আসলে অনেকটা খেলার মত । যা কিছু ঘটার ,খুব সহজেই ঘটে যায় ।এরপর এ হাত থেকে ও হাত ঘুরে এক সময় ঠাই মেলে রাজধানীর কোন এক রেসিডেন্সিয়াল হোটেলে।সেটাও বন্ধ হয়ে গেলে পার্কই তার একমাত্র বাণিজ্য কেন্দ্র।
শুনলেন তো গল্প,এবার চলে যান।
বললাম, মানুষের জীবনের গল্প তো কখনো শেষ হয় না,মেয়ে..!
সন্ধ্যা পেরিয়ে মধ্য রাত ক্রমেই ঘনিয়ে আসতে থাকে, হঠাৎ কিছু না বলে মেয়েটি দ্রুত চলে যায়....।


এরপর সেইপথে তাকে বহুদিন খুঁজে বেড়িয়েছি আমি। কোথাও আর কখনো দেখা পাইনি তার....।

ব্যস্ত এই শহরে চা্ইনিজ পণ্যের মতই পতিতারাও অনেক সস্তা,অনেক সহজলভ্য। সন্ধ্যার পর পুরো রাজধানী জুড়ে এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়।এসব মেয়েদের খদ্দেরদেরও রয়েছে নানা বৈচিত্রতা। কিশোর-তরুণ-যুবক থেকে সত্তরের ঘরে পা রাখা বৃদ্ধরাও হুমড়ি খেয়ে পরে সস্তার এ পণ্য ক্রয় করতে। এমনও অনেক তরুণদের দেখা মেলে । যাদের বয়স আঠারোর কোটা পার হয়নি। যাদের কাছে মেয়েদের শরীর এখনো বিশাল রহস্য।

জীবন কতটা বিভীষিকাময়!!কত বীভৎস আমাদের চারপাশের বাস্তবতা!! হয়ত জীবন এতটা জটিল না হলেও পারতো! একটু সহজ-সরল-সুন্দর হলে কি এমন ক্ষতি হতো.... ???
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×