somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খুজে পাওয়া প্রাক্তন প্রেমিকাকে লেখা চিঠি !

২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

20.09.08
01.30am

আমার এমপি থ্রীতে একটা চমৎকার গান বাজতেছে । "আগুনের দিন শেষ হবে একদিন" ! আমি জানি আগুনের দিন একদিন শেষ হবে । আমার অপেক্ষার দিন একদিন শেষ হবে !
হবে না বল ?
যাই হোক গানটা আগে শুনি ! অবশ্য এখন গান শোনার সময় না ! এখন ঘুমানোর সময় ! আমি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম কিন্তু কি যেন মনে হল তোমাকে কিছু বলা উচিৎ ! আসলে তোমাকে কিছু না বলে ঠিক থাকতে পারছিলাম না ! তাই কাগজ কলম নিয়ে বসলাম ! জানি না এই লেখা কোন দিন তোমার হাতে পৌছাবে কি না ! না পৌছানোর সম্ভাবনাই বেশি ! তবুও লিখতে বসেছি ! মনের ভিতর কেবল একটা ক্ষীন আশা যে হয়তো কোন দিন এই চিঠি তুমি পড়বে ! আর মনে মনে হাসবে ! জানতে পারবে একটা ছেলে তোমাকে কত খানি পছন্দ করতো ! আর একটু বাড়িয়ে বলতে গেলে কত খানি ভালবাসতো !
আচ্ছা এবার আসল কথায় আসা যাক ! তোমাকে প্রথম কবে দেখি তোমার মনে আছো তো ? আমার মনে হয় তুমিও আমাকে ঐদিনই প্রথম দেখেছিলে ! অবশ্য আমার সম্পর্কে নিহশ্চই আগেই শুনেছ ? আমি তখন স্কুলের বিখ্যাত মানুষ ! হিহিহি !!
আসলে তোমাকে প্রথম দেখেই আমার ভাল লেগে যায় ! একটু যেন বেশিই ভাল লেগে যায় ! আমার একটা দোষ আছে সেটা মোটামুটি সবাই জানে । সুন্দরী মেয়ে দেখা মাত্রই আমি তার প্রেমে পরে যাই ! কিন্তু সেই প্রেমটা হয় ক্ষনস্থায়ী ! সুন্দরী মেয়ে দেখি টুপ করে প্রেমে পড়ি তারপর আবার মেয়েটা যখন চোখের আড়ালে চলে যায় আমি তার কথা ভুলে যাই !
তোমাকে দেখলাম ! ভাল লাগলো । তোমার প্রেমে পড়লাম ! কিন্তু তুমি যখন চোখের আড়ালে চলে গেলে কিছুতেই তোমাকে ভুলে যেতে পারলাম না । একটু আশ্চার্য লাগল !
এমন তো হবার কথা না ! তাহলে ?
এমন কেন হচ্ছে ?
নিজের মনের কাছেই প্রশ্ন করলাম বার বার !
কোন উত্তর নাই ! তুমি কি জানতে যে কেবল তোমার সাথে পড়ার জন্যই আমি জুনিয়র ব্যাচের সাথে পড়তে গিয়েছিলাম !
একটু যে অস্বস্থি লাগতো না এমন বলব না কিন্তু কি পরিমান যে ভাল লাগতো তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না !
তোমাকে দেখতাম পড়ার আড়ালে !
তুমি কথা বলছ !
কথা বলেই যাচ্ছ ! এতো কথা বলতে পারো তুমি !
সত্যি কথা বলতে কি বেশি কথা বলা মেয়ে আমি একদম দুচোক্ষে দেখতে পারি না ! আমাদের সাথে পপি নামে একটা মেয়ে পড়তো না ?
মনে আছে তোমার ! ঐ মেয়েটাও একটু বাচাল কিসিমের ছিল তুমি জানতে ! ঐ মেয়ে যখন কথা আরাম্ভ করতো মনে হত স্যারের পাশে রাখা বড় ডিকশনারীটা পপির মুখ বরাবর ছুড়ে মারি । আর তুমি যখন কথা বলতে ! আর তুমি যখন কথা বলতে তখন.......


অপু চিঠিটা একটু উল্টে পাল্টে দেখলো ! আর লেখা নেই ! এই রকম অর্ধেক লেখা চিঠি !
সকাল বেলা থেকেই ঘরদোর পরিস্কার করছিল ! হঠাৎই একটা কার্ডটা খুজে পায় ! কার্ডের ভিতরে এই চিঠিটা ছিল ! নিজের লেখা চিঠি ! অনেক দিন আগে লিখেছিল একজন কে ! কিন্তু দেওয়া হয় নাই !


-কি হলে এতো দেরি ?
অপু কেবল একটু হাসলো !
-হাসছো কেন ?
নিশির পাশে বসতে বসতে অপু বলল
-আজকে অনেক কাজ করেছি ! তুমি তো জানোই ! একটু পরিশ্রম হয়ে গেছিল !
-বুঝলাম ! এখন চল !
-নিশি আজকে না যাই !
নিশি খানিকটা অবাক হয়ে বলল
-কেন ?
অপু কিছুটা সময় চুপ করে রইলো !
-ওখানে অনেক ভীড় হবে ! আজকে তোমার সাথে একা থাকতে ইচ্ছা করছে !
নিশি খানিকটা ইঙ্গিত পূর্ণ চোখে বলল
-আচ্ছা ! কোন বদ মতলব নাই তো ?
অপু একটু যেন লজ্জা পেল !
-আরে কি বলছো ?
নিশি হাসতে হাসতে বলল
-তোমাদের ছেলেদের কোন বিশ্বাস নাই !
-নিশি !!!
- আচ্ছা ! চল তাহলে বড় পুকুরটার পাড়ে যাই ! ওখানে নিরিবিলে কথা বলা যাবে ! যা ইচ্ছা তাই বলতেও পারবে আবার যা ইচ্ছা তা ক...।
-নিশি ! প্লিজ ! তুমি এমন দুষ্টামী কেন শুরু করেছ ?
-আচ্ছা ! বাবা ! আচ্ছা ! চল চল !

বড় পুকুরের পাড়টা সব সময়ে একটু নিরিবিলিই থাকে ! লোকজন কম আসে ! ওরা যখন পুকুর পাড়ে এসে বসলো তখন আসে পাশে কয়েকটা জোড়া ছাড়া আর কেউ ছিল না ! নিশি একটা গাড়ের গুড়ি দেখে বসলো ! অপুকেও বসতে বলল !
-এখন বলুন জনাব ! হঠাৎ আমার সাথে এইরকম নিড়িবিলি কথা কি দরকার একটু দেখি তো !
অপু কিছু না বলে নিশির পাশে বসলো ! তারপর পকেট থেকে একটা ভাজ করা কাগজ টা নিশির দিকে এগিয়ে দিল !
-কি এটা ?
-প্রেম পত্র !
নিশি খানিকটা অবাক হয়ে বলল
-তুমি আমাকে প্রেম পত্র লিখেছো ?
-তোমাকে না !
-তাহলে ?
-পড়ে দেখো ! তারপর বলছি !
নিশি কিছুক্ষন চিঠিটা মন দিয়ে পড়লো ! তারপর অপুর দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে বলল
-এই চিঠি তুমি লিখেছো ?
-হুম !
-২০০৮ সালে ?
-হুম !
-তারমানে ২০০৮ সালে তোমার একটা প্রেমিকা ছিল !
-না !
-মানে কি ? তুমি তাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি লিখেছো আর বলছো তোমার কোন প্রেমিকা ছিল না ? ফাজলামো পেয়েছ ? আমাকে বল নাই কেন ?
-আরে বাবা ! মেয়েটাকে আমি পছন্দ করতাম ! কিন্তু বলতে পারি নি ! চিঠি লিখেছিলাম কিন্তু দিতে পারি নাই !
-তাই না ? এতো দিন আমার কাছে কিভাবে গোপন করে রেখেছ !
-আর বাবা ! আমার নিজেরও মনে ছিল না ! আজকে ঘর গোছাতে গিয়ে হাতে পড়লো ! তাই মনে পড়লো !
-তা চিঠিটা দেও নাই কেন ?
-লজ্জায় দিতে পারি নাই !
-লজ্জা ? আমার সামনে তো খুব বীরত্ব দেখিয়েছিলে ? আর ঐ মেয়ের সামনে লজ্জা ?
অপু হাসলো !
-শুনো না ! একটা কবিতাও ছিল চিঠিতার সাথে !
-আরিবাব্বাহ ! আবার কবিতাও লিখতে পারতে নাকি !
-শুনবে ?
-শুনাও !
অপু আবার পকেট থেকে আর একটা কাগজ বের করে নিয়ে আসলো ! তারপর পড়তে শুরু করলো

মেঘ বালিকার মেঘের দেশে !
মেঘ গুলো সব যাচ্ছে ভেসে !
মেঘ গুলো তার সাদা কালো !
মেঘ ছাড়া সে রয় না ভাল !
মেঘের সাথেই করে খেলা !
মেঘকে ভেবেই যায় যে বেলা !
মেঘকে নিয়েই দিনের শুরু !
মেঘ দেখে বুক দুরু দুরু !
মেঘের সাথে কয় যে কথা !
মেঘ না পেলে পায় যে ব্যাথা !

মেঘ দিয়ে তার জীবন শুরু
মেঘ দিয়ে হয় শেষ !
মেঘের ডানায় যাবো আমি
মেঘবালিকার দেশ !


-বাহ ! তুমি আবার কবিতা লিখতে পারো ?
অপু হাসল !
-শুনো কাল থেকে প্রতিদিন আমাকে একটা করে কবিতা লিখে দিবে !
-আরে কি বল ! দেখো না কি হাস্যকর হয়েছে !
-হোক !
-নিশি !
-কোন নিশি ফিসি না ! যাকে কোন দিন বলতে পারো নাই তার জন্য কবিতা লিখতে পারো আর আমার জন্য লিখতে পারবে না ? এটা হতে পারে না ! যেদিন লিখবা না সেদিন তোমার খবর আছে !
-মানে কি ?
-কোন মানে নাই !
অপু চুপ করে রইলো !
নিশি বলল
-ঐ মেয়েটার সম্পর্কে কিছু বল !
-মেয়েটা !!
-নাম কি ছিল ?
-টিয়া !
-টিয়া পাখি ? বাহ ! আর ?
-মেয়েটা আমার থেকে এক বছরের জুনিয়র ছিল ! জানো আমি একদিন আমাদের ইংরেজি স্যারের কাছে গেছিলাম । স্যার তখন জুনিয়র ব্যাচ পড়াচ্ছিল ! তখনই মেয়েটাকে দেখি !
-তারপর ?
-দেখে আমি খানিকটা থ হয়ে রইলাম !
-পরদিনই আমি ব্যাচ চেঞ্জ করে ঐ জুনিয়র ব্যাচে চলে এলাম !
-তাই না ? লুল কোথাকার ! একদিন দেখেই মেয়ের প্রেমে পরে গেলে ?
অপু হাসলো !
-তোমাকে একবার দেখেই কিন্তু তোমার প্রেমে পরেছিলাম !
নিশি আবার বলল
-তুমি আমার সাথে কি করেছিলে মনে আছে ! বাবারে বাবা ! আমাকে দেখে আমার আর পিছুই ছাড়ে না ! সকাল বিকেল ! যেখানে যাই আমার পিছন পিছন ! নেহত সিনিয়র ছিলা ! নাইলে তোমার খবর ছিল !
-হুম ! বুঝলাম !
-শুনো ! কাল থেকে কিন্তু আমার কবিতা চাই ! আর আমাকে এবার থেকে চিঠি লিখবে !
-কি ?
-হুম !
-এই জামানায় কেউ চিঠি লিখে ?
-লিখতে হবে ! কোন কথা শুনবো না !
-নাহ ! তোমাকে দেখনোই ভুল হয়ে গেছে !
-হুম ! ভুল যখন হয়েই গেছে তখন আর কি করা !
-তাই না !
-চল ! ফুচকা খাওয়া যাক !
অপু একটু হাসলো আবার ! একবার ভেবেছিল নিশিকে পুরানো চিঠি টা দেখাবে না ! ও আবার না কি মনে করে ! কিন্তু না দেখিয়ে পারলো না ! তবে এটা ভাল যে নিশি এটা সহজ ভাবে নিয়েছে !
-চল !





লেখাটার কোন মানে নাই ! আজকে সত্যি ঘরের পরিস্কার পরিছন্ন কার্যক্রম চালানোর সময় একটা পুরানো ঈদ কার্ড খুজে পেলাম একটা বইয়ের ভিতর ! তার ভিতরেই ছিল এই চিঠিটা আর কবিতা লেখার কাগজটা ! প্রায় হুবাহুই তুলে দিলাম ! পুরানো কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল !
চিঠিটা টিয়া পাখি কে লেখা আমার প্রথম চিঠি ! যেটা তাকে দেওয়া হয় নি !
যখন লিখেছিলাম তখন তার সাথে আমার সম্পর্ক ছিল না ! সে ছিল দুরের কেউ ! যখন কাছে এল তখন আমি চিঠিটা হারিয়ে ফেললাম । আর এখন আবার যখন পেলাম তখন সে আবার আমার থেকে দুরে !
বড় অদ্ভুদ !
প্রথম লেখার অনুভুতিটা তাকে জানানো হল না ! তার জন্য প্রথম লেখা কবিতাটাও সে পড়লো না ! :(



Click This Link
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×