somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সর্প প্রেম-১

২৩ শে জুন, ২০১২ দুপুর ২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোন একটা অজানা কারনে সাপকে অতিমাত্রায় পছন্দ করি। কখনোই ইহার তাৎপর্য খুজে বের করতে পারি নাই। সবসময় বন্ধুদের কান ঝালাপালা করার চেয়ে ভাবলাম ব্লগের মানুষগুলারে কিছুটা বিরক্ত করি। তাই চিন্তা করতেছি আমার পছন্দের কয়েকটা সাপের সম্পর্কে অল্প বিস্তর লিখব। আগেই বলে রাখি ‘ইহা কোন জ্ঞানভান্ডার নহে’। আতলামির বা আযাইরা প্যাঁচালের কোন জায়গা নাই।
প্রথমেই যে সাপটা সম্পর্কে লিখতে চাচ্ছি তা হচ্ছে আমার সবচেয়ে প্রিয় একটা সাপ ব্ল্যাক মাম্বা। এটার প্রতি ভালবাসা অনেক আগে থেকেই। এত এত ডিসকভারি আর ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের যন্ত্রনায় ব্ল্যাক মাম্বাকে পছন্দ করে ফেলেছি।

ব্ল্যাক মাম্বা



ব্ল্যাক মাম্বা (মাম্বা প্রজাতির মধ্যে কাল জন) নাম দেইখা মনে করার কোন কারন নাই যে এটা বদ সুরত কাল চেহারার, এটা তার মুখের ভিতরের রঙের জন্য বলা হয়। এর মুখের ভিতরে রঙ কালো। যা দেখলেই আত্মা ঠান্ডা হয়ে আসে। এর মাথার আকার অনেকটা কফিনের গড়নের মত।
আগেই বলে রাখি ব্ল্যাক মাম্বা পৃথিবীর দ্বিতীয় বিষধর সাপ। এটা সাধারনত আফ্রিকায় পাওয়া যায়।(দুঃখ কই রাখি, চক্ষের দেখা দেখতে হইলেও আফ্রিকা যাইতে হইব।)


খুবই লাজুক, জেদি, দ্রুতগতির, বিষাক্ত এইরকম আরো অনেক বিশেষন লাগানো যাবে এর নামের সাথে।

লম্বায় এরা সাধারনত প্রায় ৮.২ থেকে ১০ ফিট(২.৫-৩.২ মিটার) হইয়া থাকে, আর ওজন ৫.৬ কেজি (১২ পাউন্ড)। তয় জিম্বাবুয়েতে একখানা পাওন গেছিল প্রায় ২৬ পাউন্ড (১১.৭ কেজি) ওজনের যা লম্বায় প্রায় ১৪.৭ ফিট (৪.৪৮ মিটার)। স্ত্রী পুরুষ বাছ বিচার নাই, এরা সবাই মোটামুটি সেইম সাইজের হইয়া থাকে।

সাধারনত এরা অন্যান্য সাপের মত গাছের গুড়ি, ঝোপ-ঝারের মধ্যে বুদ হইয়া পইড়া থাকে। শিকারও অনেকটা অন্য সাপের মতই। ব্যাং, ইদুর, বাদুর এইগুলা। জীবনযাত্রা অন্যান্য সাপের মতই, যদিও সে অসাধারন।

বিষের হিসেবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যেমন, ০.০৫mg, ০.৩২ mg, ০.২৮ mg এইরকম একেকজনের কাছে একেকটা। কিন্তু আসল হিসেবে আসি। একটা পূর্নবয়স্ক মানুষের জন্য ১০-১৫ mg বিষই যথেষ্ট, যেখানে এদের সাধারন বিষই হয় প্রায় ১০০-১২০ mg, আর যদি কড়া ডোজ হয় তাইলে প্রায় ৪০০ mg। তাইলে হিসাব কইরা পাওন গেল, এইটার এক কামড়ে প্রায় সাধারনত ১০ জন মানুষকে মেরে ফেলা সম্ভব। আর যদি কড়া ডোজ হয়......

আগেই বলে রাখি, এই সাপ সম্পর্কে প্রচুর ভীতিকথা বিদ্যমান। আফ্রিকায় এটা সম্পর্কে জানে না এরকম কাউকে খুজে পাওয়া কষ্টকর।

জিম্বাবুয়েতে এলানর নামক একটা পূর্নবয়ষ্ক মাদী হাতি ছিল। ওজন প্রায় ৩৪০০ কেজি, বয়স ৪০-৪৮ বছরের মধ্যে। বিজ্ঞানীদের মতে এটিই একমাত্র হাতি যা কিনা সাপের কামড়ে মারা যায়, আর সাপটি ছিল ব্ল্যাক মাম্বা।

একবার সুইস সর্পবিদ থিয়া লিস্কার বাড়িতে ব্ল্যাক মাম্বার আক্রমনে ৪ টা কুকুর মারা যায় মাত্র ১৫ মিনিটে। যদিও পড়ে সে সাপটিকে ধরতে পেরেছিল।

ব্ল্যাক মাম্বার আক্রমনে বিভিন্ন সময় গবাদি পশু গরু, ঘোড়া মারা যায়। আর এটা আফ্রিকায় সবাই মেনেই নিয়েছে।

একবার ব্ল্যাক মাম্বা নাকি একটা রাস্তার পাশে এসে পড়ে আর একটা গাড়ি তার পাশে দিয়ে চলে যায়। সে ঐ চলন্ত গাড়ির উইন্ডশিল্ডে কামড় বসায়।



ব্ল্যাক মাম্বা চলার সময় শরীরের এক তৃতীয়াংশ উপরে তুলে রাখে। অর্থাৎ প্রায় ৩ ফিটের মত উপরে তুলে রাখে। আর এর চলার গতি প্রায় ২০ কিমি/ঘন্টা। এই কারনে এটি সাপেদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতির। আর সকল প্রানি জগতের মধ্যে এর স্থান ৩০ তম। এটি মানুষকে তাড়া করে ধরতে পারে। যেখানে মানুষের গতি প্রায় ২৭ কিমি/ঘন্টা।

এর কামড়ে মরতে খুব বেশিক্ষন লাগে না। সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ মিনিটই যথেষ্ট। সাধারনত ১৫-২০ মিনিটেই কাম সারা। কিন্তু যদি কামড়ের ডোজ কড়া থাকে তাইলে পরে ১০ মিনিটের কম সময়েই শেষ। ডাক্তার ডাকারও টাইম নাই। শেষ ইচ্ছা ম্যাকডোনাল্ডের পিতজ্যা খাওয়া হইলেও লাভ নাই, ৩০ মিনিটও টাইম পাওন যাইব না।

ভুল কইরাও যদি কেউ চিন্তা করে যে, পায়ে গামবুট পইড়া গেলে বাচন যাইব। তাইলে বোকার স্বর্গে বাস করার শামিল। আগেই বলছি ৩ফিট সমান শরীর এ সবসময় উপরে তুইলাই চলাফেরা করে। এটা মানুষের মুখে কামড় দিয়া বসলে আশ্চর্য হবার কিছুই নাই। এই বস্তু লাফ দিতেও জানে। নিজেকে ভালোবাসার বস্তু বানাইয়া উপরে ছুড়ে দিবে।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এর কামড়ে কিছুদিন আগ পর্যন্ত মৃত্যুর সম্ভাবনা ১০০% ছিল। খুবই দ্রুত বলতে যদি সাথে করে সারাদিন এর প্রতেসেধক হাতে না নিয়া ঘুরেন তাইলে এই হার ০.০০০০০১% ও কমবে না।
একটাই সুবিধা মানুষজনের কাছাকাছি থাকাটা পছন্দ করে না। কিন্তু কেউ যন্ত্রনা করলে, বা তার এলাকা নিয়া কেউ কিছু কইলে জামিন নাই।

আরো যদি কেউ এটা সম্পর্কে জানেন তাইলে জানাইয়েন। জানতে ভালো লাগে, আর সাপটার প্রতি অস্বাভাবিক দূর্বলতা কাজ করে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১২ দুপুর ২:৩১
১৫টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭



অনেক দিন পর আমি আজ এই হোটেলে নাস্তা করেছি। খুব তৃপ্তি করে নাস্তা করেছি। এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা। ঠিকনা: ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডম ভবেরচর, গজারিয়া, মন্সীগঞ্জ। দুইটি তুন্দুল রুটি আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×